রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
রাহুল বললেন, ‘‘দেশের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ আদানি ট্যাক্স হয়ে ঢুকছে আদানির পকেটে। আমরা কয়লা ব্যবহার করছি, তাতে আদানি ট্যাক্স, ট্রেনে চড়ছি, তাতে আদানি ট্যাক্সে। এ ভাবেই দেশের মানুষের অর্থ আদানির মোদী সরকারের কৌশলে গিয়ে ঢুকছে আদানির পকেটে।’’
প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে রাহুল বললেন, ‘‘দেশকে ভুয়ো স্বপ্ন দেখিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এই সমস্যার কথা খুব কম লোকই বলেন। আমরা বলছি। তাই এই সব হ্যাকিং, ইডি-সিবিআই, সতর্কবার্তা আসছে। কিন্তু আমরা ভয় পাওয়ার মানুষ নই, লড়াই করব।’’
রাহুল বললেন, ‘‘আদানির হাতে দেশের সমস্ত জাহাজ বন্দর তুলে দিয়েছেন, সমস্ত বিমানবন্দর তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। দেশের খাবারের মূল উৎস যে কৃষিক্ষেত্র, তার আইনও বানিয়ে দেওয়া হয়েছে আদানির সুবিধা করে দিতে। পরিকাঠামো জনিত ব্যবসা তাঁর হাতে। আপনি রাস্তা দিয়ে হাঁটবেন সেই রাস্তা তৈরির সিমেন্টও আদানির হাতে। পুরো দেশটাই আদানির মতো তিন চার জনের হাতে তুলে দিচ্ছেন মোদী।’’
রাহুল বললেন, বিরোধীদের নজর ঘোরাতেই এসেছে ওই সতর্কবার্তা। তাতে কী লেখা ছিল, তা-ও স্পষ্ট করে জানান রাহুল। সাংবাদিক বৈঠকে পড়ে শোনান অ্যাপলের সতর্কবার্তার বয়ান, তাতে লেখা হয়েছে— ‘‘অ্যাপল মনে করে, আপনারা রাষ্ট্রের প্ররোচিত হ্যাকারদের দ্বারা আক্রান্ত। যারা আপনার অ্যাপল আইডি দিয়ে নথিভুক্ত আইফোনের সুরক্ষা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে।’’ ওই বয়ান পড়ার পর রাহুল বললেন, ‘‘এটা তোতার কাজ’’।
রাহুল বললেন, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র যাঁরা অ্যাপলের তরফে ওই বার্তা পেয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও ভাবে আদানি সংক্রান্ত আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত। তালিকায় মহুয়া মৈত্রের বলা নামের পাশাপাশি সুপ্রিয়া সুলে, টিএস সিংহ, কে সি বেণুগোপালের নামও বললেন রাহুল।
তাঁর অফিসের সবাই এই নোটিস পেয়েছেন বলে জানালেন রাহুল গান্ধী।
বিরোধী নেতা নেত্রীদের ফোন হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার সকালে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বলেছিলেন, ইন্ডিয়া জোটের অনেকেই তাঁর মতো অ্যাপলের থেকে হ্যাকিং সংক্রান্ত সতর্কবার্তা পেয়েছেন। তাঁরা কারা, তার নাম জানিয়ে মহুয়া বলেছিলেন, তিনি ছাড়া বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র আরও সদস্য যেমন, প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী, শশী তারুর, রাঘব চড্ডা, অখিলেশ যাদব, সীতারাম ইয়েচুরি এবং পবন খেরাও অ্যাপলের সতর্কবার্তা পেয়েছেন। এর পরেই সাংবাদিক বৈঠক করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। কিন্তু তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন ফোন হ্যাকিংয়ের চেষ্টা বা ওই সমস্ত সতর্কবার্তা আসলে বিরোধীদের বেপথু করার চেষ্টা। মোদী চান না, বিরোধীরা যে পথে এগোচ্ছেন সেই পথে আরও এগিয়ে যান এবং লক্ষ্যে পৌঁছন।
মোদীর প্রাণ গচ্ছিত আদানি তোতায়, দাবি করে রাহুল গান্ধী বললেন, ‘‘এই তোতাপাখিকে আমরা এমন ভাবে ঘিরেছি, যে আর সে পালানোর জায়গা পাচ্ছে না। আর সেই জন্যই বিরোধীদের মনোযোগ ঘোরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে খাঁচায় বন্দি তোতার দিকে তাদের নজর না যায়।’’
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল বললেন, ‘‘এত দিন আপনারা কী জানতেন? ভারতের নম্বর ওয়ান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নম্বর টু অমিত শাহ। তাই তো? কিন্তু ব্যাপারটা আসলে তা নয়। ভারতের নম্বর ওয়ান আসলে আদানি। মোদী নম্বর টু। নম্বর থ্রি হচ্ছেন শাহ।’’ রাহুল জানালেন দেশের রাজনীতির নিউক্লিয়াসটি কোথায় তা তিনি বুঝতে পেরেছেন।
রাহুল বললেন, ‘‘এই সমস্ত ফোন হ্যাকিংয়ের চেষ্টা, ইডি-সিবিআই দিয়ে ভয় দেখানোর কারণ আসলে আদানি। কারণ বিরোধীরা এখন সঠিক জায়গায় তির তাক করছে। দেশের রাজনীতির গোপন সত্য বুঝতে পেরেছে বিরোধীরা। রাজার তোতাকে ছোঁয়া হয়েছে। আর তার জন্যই এই হ্যাকিং, আড়ি পাতা আর ইডি-সিবিআই দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা।’’
রাজা এবং তোতাপাখির গল্প শুনিয়ে রাহুল বললেন, বিরোধীরা এত দিন ভুল নিশানায় আক্রমণ করছিলেন। তাঁরা ‘রাজা’ অর্থাৎ নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করছিলেন। কিন্তু রাহুলের বক্তব্য, ‘‘রাজা তো রাজা নন। তাঁর হাতে ক্ষমতাই নেই। তাঁর ক্ষমতা লুকিয়ে রাখা আছে আদানির মধ্যে। সেইখানে আক্রমণ শানাতেই বিপদঘণ্টি বেজেছে। তাই এই সমস্ত গোলমাল করে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
আইফোন হ্যাকিংয়ের চেষ্টার অভিযোগ প্রসঙ্গে এক রাজার কাহিনি শোনালেন রাহুল গান্ধী। তবে সেই ‘রাজকাহিনি’ বদলে গেল ‘তোতাকাহিনি’তে। রাহুল বললেন, রাজার প্রাণভোমরা লুকিয়ে ছিল তোতাপাখির মধ্যে। এখানেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রাণভোমরা রয়েছে আদানি নামের তোতাপাখির মধ্যে।
আদানিরা বিরোধীদের আক্রমণে সঙ্কটাপন্ন বলেই নজর ঘোরাতে চাইছে কেন্দ্র, দাবি রাহুলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy