ভোটদানের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিন মাস আগেই। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এ বার সরব হলেন মহারাষ্ট্রের ভোটার তালিকা নিয়ে! সঙ্গে পেলেন সে রাজ্যে ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক দলকেও।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল অভিযোগ করেছেন, গত নভেম্বরে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা তৈরির সময় কারচুপি হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘ওই রাজ্যে মোট প্রাপ্তবয়স্কের সংখ্যার তুলনায় ভোটারের সংখ্যা বেশি!’’ দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে রাহুলের সঙ্গে হাজির ছিলেন শিবসেনা (উদ্ধব) নেতা সঞ্জয় রাউত এবং এনসিপি (শরদ) নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য পরিসংখ্যান পেশ করে রাহুল বলেন, ‘‘আমরা অনেকগুলি অনিয়ম চিহ্নিত করেছি। ২০২৪-এ লোকসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকা সংশোধন হয়েছিল। তার পাঁচ মাস পরে বিধানসভা ভোটের আগে ফের এক বার ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয়।’’ আর সেই সংশোধন-পরিমার্জনের সময় নানা কারচুপি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন রাহুল, সঞ্জয় এবং সুপ্রিয়া। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের চেয়ে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ছিল ৩২ লক্ষ বেশি। অর্থাৎ, পাঁচ বছরে ভোটার বেড়েছিল ৩২ লক্ষ। কিন্তু মাত্র পাঁচ মাস পরের বিধানসভা নির্বাচনের সময় ভোটার এক লাফে আরও ৩৯ লক্ষ বাড়ে! কোন অঙ্কে এটা সম্ভব?’’ মহারাষ্ট্রে মাত্র পাঁচ মাসে যে সংখ্যায় ভোটার বেড়েছে, তা গোটা হিমাচল প্রদেশের ভোটার সংখ্যার সমান বলে জানান রাহুল।
বিধানসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে ভরাডুবির পরে ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’ জোটের তিন শরিকের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। উদ্ধবসেনা প্রকাশ্যে বৃহন্মুম্বই-সহ বিভিন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েতে ভোটে একক শক্তিতে লড়ার কথা জানিয়েছিল। একই ইঙ্গিত দিয়েছিল শরদের দলও। এই প্রেক্ষিতে রাহুলের পাশে সঞ্জয়-সুপ্রিয়ার উপস্থিতি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে বিরোধী শিবির। গত নভেম্বরে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের সময় কমিশনের দেওয়া পরিসংখ্যানে প্রাথমিক ভোটের হার ও ভোটগণনার আগে চূড়ান্ত ভোটের হারের মধ্যে প্রায় ৭৬ লক্ষ ভোটের ফারাক হয়েছিল। যা নিয়ে সে সময় কংগ্রেস, উদ্ধবসেনা, শরদ শিবির প্রশ্ন তুলেছিল।
এ বারও এক যোগে কমিশনের কাছে রাহুলদের প্রশ্ন— ভোটার তালিকায় এমন অনিয়ম চিহ্নিত করার দায়িত্ব কার? বিধানসভা ভোটের আগে বেছে বেছে সংখ্যালঘু ও দলিত ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলেও শুক্রবার রাহুল-সঞ্জয়-সুপ্রিয়ারা অভিযোগ তুলেছেন। যদিও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ খারিজ করে বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলার বদলে রাহুলের আত্মসমীক্ষা করা উচিত। হারের আসল কারণ চিহ্নিত করা উচিত।’’ রাহুলদের এই সাংবাদিক বৈঠককে ‘দিল্লির ভোটগণনার আগে ভরাডুবির আগাম সাফাই’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।