কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রককে অন্ধকারে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কি ব্যক্তিগত ভাবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভারতের তরফে শুল্ক কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন?
মঙ্গলবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে এই প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। ট্রাম্প দিনের পর দিন ভারতের চড়া শুল্ক নিয়ে অভিযোগ এবং পাল্টা চড়া শুল্ক বসানোর হুঁশিয়ারির পরে সম্প্রতি দাবি করেছেন, আমেরিকা থেকে আমদানি করা পণ্যে শুল্ক কমাতে রাজি হয়েছে ভারত। এখনও পর্যন্ত মোদী সরকারের বিদেশ মন্ত্রক, বাণিজ্য মন্ত্রক বা অর্থ মন্ত্রক সরকারি ভাবে প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্পের এই দাবি খারিজ করেননি। যদিও কেন্দ্রীয় বাণিজ্যসচিব বিদেশ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দাবি করেছেন, ভারত শুল্ক কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
আজ লোকসভায় কংগ্রেসের উপ-দলনেতা গৌরব গগৈ প্রশ্ন তোলেন, ভারত কোন কোন ক্ষেত্রে শুল্ক কমাতে রাজি হয়েছে? কেন্দ্রীয় বাজেটের অতিরিক্ত খরচ ও মণিপুরের বাজেট নিয়ে আলোচনায় গগৈ এই প্রশ্ন তোলায় লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা প্রশ্ন তোলেন, এর মধ্যে শুল্কের প্রসঙ্গ কোথা থেকে এল? গগৈ বলেন, এর সঙ্গে ভারতের গাড়ির যন্ত্রাংশ, ইস্পাত, রত্ন-অলঙ্কার, কৃষি ক্ষেত্রের স্বার্থ জড়িত। ট্রাম্প বলেছেন, ভারত শুল্ক কমাতে রাজি। বাণিজ্য মন্ত্রক এ বিষয়ে আদৌ জানে কি না, সংশয় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনেক সময় নিজে ব্যক্তিগত স্তরে এমন অনেক কাজ করে থাকেন। স্পিকার এই মন্তব্য নিয়েও আপত্তি তোলেন। কিন্তু গগৈ বলেন, গোটা দেশ শুল্ক নিয়ে প্রশ্নের উত্তর জানতে চায়।
গগৈ প্রশ্ন তুললেও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন অবশ্য আজ জবাবি বক্তৃতায় কোনও উত্তর দেননি। তবে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ আজ লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, আমেরিকা এখনও ভারতের উপরে পাল্টা চড়া শুল্ক বসায়নি। দুই দেশ পারস্পরিক স্বার্থে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দর কষাকষির পরিকল্পনা করছে। দুই দেশই শুল্ক ও অন্যান্য বাধা সরিয়ে বাজার খুলে দেওয়ার দিকে নজর দেবে। কেন্দ্র আমেরিকার সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানো নিয়ে দৌত্য করবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সফরে যৌথ বিবৃতিও জারি হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)