সোমবার বাজপেয়ীর স্মৃতি-স্মারকে রাহুল গান্ধী। নিজস্ব চিত্র।
কখনও মহাত্মা গান্ধী, কখনও সর্দার বল্লভভাই পটেল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বার বার কংগ্রেসের ‘আইকন’দের প্রকৃত উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন। আজ প্রথম এনডিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্মারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন রাহুল গান্ধী। একদা অটলবিহারী বাজপেয়ী-লালকৃষ্ণ আডবাণীর ঘনিষ্ঠ সুধীন্দ্র কুলকার্নির মতে, এ বার দেখতে হবে, বিজেপি নেতারা নেহরু-ইন্দিরাকে একই ভাবে শ্রদ্ধা জানানোর উদারতা দেখাতে পারেন কি না।
রবিবারই ছিল বাজপেয়ীর জন্মদিবস। আজ সকালে দিল্লির রাষ্ট্রীয় স্মৃতি স্থলে বাজপেয়ীর স্মৃতিস্মারক ‘সদৈব অটল’-এ গিয়ে রাহুল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। যার পরে কংগ্রেস বলেছে, প্রধানমন্ত্রী পদে থাকাকালীন বাজপেয়ী ২০০২ সালে গুজরাতের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাজধর্ম’ পালন করতে বলেছিলেন। বাজপেয়ী আসলে মোদীকে সংবিধান মেনে চলার শিক্ষা দিয়েছিলেন। উনি সেই শিক্ষা নেননি। এ বার রাহুলকে বাজপেয়ীর স্মৃতিস্মারকে দেখে মোদী সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব বুঝতে পারবেন বলে আশা করা যায়। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে আজ দলের মঞ্চ থেকে বলেছেন, ‘‘আমরা তো নরেন্দ্র মোদীকেও ভারত জোড়ো যাত্রায় যোগ দিতে আহ্বান করছি। তা হলে উনি ভালবাসার মূল্য বুঝতে পারবেন। ওঁর ভিতরের বিদ্বেষ মুছে যাবে।’’
রাহুল এ দিন মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা ও রাজীব গান্ধী, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, জগজীবন রাম, চৌধুরী চরণ সিংহের স্মৃতিস্মারকেও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা সব রকম মতাদর্শের সমাহার। সেই পথে হেঁটেই তিনি কংগ্রেসের ‘আইকন’-দের পাশাপাশি বাজপেয়ীকেও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। দেখিয়ে দিয়েছেন, এখানেই কংগ্রেস বিজেপির থেকে আলাদা। নরেন্দ্র মোদী বা বিজেপির নেতারা কোনও দিনই নেহরু বা ইন্দিরাকে শ্রদ্ধা জানাতে যান না। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘অন্য ব্যক্তির অন্য আদর্শ মেনে চলার স্বাধীনতাকে সম্মান করাই আসল উদারতা।’’
রাহুলের এই রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে অবশ্য কংগ্রেসের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেসের একটি অংশের মত, গোটা ভারত জোড়ো যাত্রাটাই বিজেপির ধর্মীয় বিভাজন, বিদ্বেষের রাজনীতির বিরুদ্ধে। বাজপেয়ীও বিজেপির সেই মতাদর্শেরই অংশ। সেই মত প্রকাশ করেই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের দফতরের সঙ্গে যুক্ত গৌরব পান্ধী রবিবার টুইট করে বলেছিলেন, ১৯৪২-এ বাকি সব আরএসএস নেতাদের মতো বাজপেয়ীও ভারত ছোড়ো আন্দোলন বয়কট করে ব্রিটিশদের চর হিসেবে কাজ করেছিলেন। বাবরি মসজিদ ধ্বংসে উস্কানি দিতেও বাজপেয়ীর ভূমিকা ছিল। পরে অবশ্য পান্ধী সেই টুইট মুছে দেন। বিজেপি নেতা অমিত মালবীয় প্রশ্ন তুলেছেন, রাহুল গান্ধী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের শ্রদ্ধাজানাতে চাইলে হায়দরাবাদে পি ভি নরসিংহ রাওয়ের স্মৃতিস্মারকে শ্রদ্ধা জানাননি কেন?
কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার জবাব, ‘‘আমাদের গর্বের বিষয়, মোদীজি যখন কারও মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন, তখন ওঁকে কংগ্রেসের ‘আইকন’দেরই খুঁজে বের করতে হয়। বিনায়ক দামোদর সাভারকর বা গোলওয়ালকর নয়, সর্দার পটেল বা নেতাজির মূর্তি প্রতিষ্ঠা করতেই বাধ্য হন মোদী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy