মল্লিকার্জুন খড়্গে। ফাইল চিত্র।
দু’দিন পরেই কংগ্রেসের নবনির্বাচিত সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলের শীর্ষ পদের দায়িত্ব নেবেন। জগজীবন রামের পরে প্রথম দলিত কংগ্রেস সভাপতিকে সামনে রেখেই ফের দলিত ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পাওয়ার অঙ্ক চলছে দলের অন্দরে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, আগামী বছরে কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচন তো বটেই, উত্তরপ্রদেশে ঘুরে দাঁড়াতেও দলিত ভোটব্যাঙ্ককে পাখির চোখ করার চেষ্টা হবে। কংগ্রেসের তফসিলি জাতি শাখা সংগঠন নতুন করে ঢেলে সাজানো হবে। দলের সংগঠনের প্রতিটি স্তরেও দলিতদের প্রতিনিধিত্ব বাড়বে।
কংগ্রেস সভানেত্রী হিসেবে সনিয়া গান্ধী যে শেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল, উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে দলিত নেতা বৃজলাল খাবরীকে নিয়োগ করা। বৃজলাল আগে মায়াবতীর দল বিএসপিতে ছিলেন। মল্লিকার্জুন খড়্গে কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পরেই মায়াবতী কংগ্রেসকে নিশানা করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস দলিতদের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে কাজে লাগাতে চেয়েছে। কিন্তু দলিতদের সুরক্ষার জন্য কিছুই করেনি। উল্টো দিকে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, বিজেপির বিরোধিতায় নরম সুর নিয়ে মায়াবতী নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করেছেন।
দলিতেরা এখন তাই বিকল্প নেতৃত্ব চাইছেন। কংগ্রেস সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। এর আগে ভীম আর্মির নেতা চন্দ্রশেখর আজাদকে সমর্থন করেও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা উত্তরপ্রদেশে দলিতদের সহানুভূতি কুড়োনোর চেষ্টা করেছিলেন। এ বার মল্লিকার্জুন ও বৃজলালকে সামনে রেখে ফের সেই চেষ্টা হবে।
দীপাবলির পরেই ২৬ অক্টোবর মল্লিকার্জুন কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। খোদ রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রার ফাঁকে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লিতে আসছেন। কংগ্রেস নেতাদের দাবি, ভারত জোড়ো যাত্রায় কর্নাটকে যে সাড়া মিলেছে, তাতে আগামী বছর বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। মল্লিকার্জুন নিজে কর্নাটকের নেতা। রাজ্যের জনসংখ্যার ২৪ শতাংশ দলিত। ফলে মল্লিকার্জুনের কংগ্রেস সভাপতি পদে উত্থান রাজনৈতিক ভাবে ফায়দা দেবে।
মল্লিকার্জুন নিজে অবশ্য বরাবরই নিজের দলিত পরিচিতি তুলে ধরার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, মল্লিকার্জুনের দলিত পরিচিতিকে সামনে রেখেই জাতীয় স্তরে দলিত সম্মেলনের আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে। তফসিলি জাতি বিভাগের চেয়ারম্যান রাজেশ লিলোথিয়া সংগঠন ভেঙে দিয়েছেন। নতুন করে সংগঠন সাজানো হবে। গোটা দেশে কোন রাজ্যে কোথায় দলিতদের প্রাধান্য রয়েছে এবং দলিতদের মধ্যে কোন সম্প্রদায় কোথায় রয়েছে, তার ভিত্তিতে সংগঠনে সেই সম্প্রদায়ের নেতাদের তুলে আনা হবে। জাতীয় স্তরে দলিত সম্মেলনের সঙ্গে রাজ্য স্তরেও দলিত সম্মেলনের আয়োজন করা হবে।
কংগ্রেসের একাংশ অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পঞ্জাবের ভোটের আগেও চরণজিৎ সিংহ চন্নীকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসিয়ে দলিত ভোটব্যাঙ্ক জয় করার চেষ্টা হয়েছিল। শুধু পঞ্জাব নয়, গোটা দেশেই কংগ্রেস বার্তা দিতে চেয়েছিল, কংগ্রেসই একমাত্র দলিতদের সম্মান করে, মর্যাদা দেয়। পঞ্জাবে সেই চেষ্টা সফল হয়নি। উত্তরপ্রদেশের এক কংগ্রেস নেতা বলেন, “নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে হিন্দু ভোটব্যাঙ্কের ছাতার তলায় দলিত, ওবিসি, সবাইকেই টেনে এনেছেন, তাতে ফের দলিত ভোট ফিরে পাওয়াটা কঠিন লড়াই। শুধুমাত্র কংগ্রেস সভাপতির মুখকে সামনে রেখে তা সম্ভব হবে না। আরও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy