E-Paper

অবস্থানের বদল, ওবিসি সংরক্ষণ চান সনিয়ারা

মোদী সরকারের মহিলা সংরক্ষণ বিলে সমর্থন জানালেও সনিয়া-রাহুল লোকসভায় প্রশ্ন তুললেন, কেন মহিলা সংরক্ষণ বিল এখনই কার্যকর করা হচ্ছে না?

Sonia Gandhi

লোকসভায় কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:২৮
Share
Save

মনমোহন সরকারের আমলে মহিলা সংরক্ষণ বিলে ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের দাবি মেনে নেয়নি কংগ্রেস। এই কারণেই মুলায়ম সিংহ যাদব, লালু প্রসাদেরা ওই বিলের ঘোর বিরোধিতা করেছিলেন। ফলে মনমোহন সরকারের মহিলা সংরক্ষণ বিল ২০১০ সালে রাজ্যসভায় পাশ হলেও লোকসভায় পাশ করানো যায়নি।

আজ সেখান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে সনিয়া ও রাহুল গান্ধী মহিলা সংরক্ষণের মধ্যে ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষণেরও দাবি তুললেন। মোদী সরকারের মহিলা সংরক্ষণ বিলে সমর্থন জানালেও সনিয়া-রাহুল লোকসভায় প্রশ্ন তুললেন, কেন মহিলা সংরক্ষণ বিল এখনই কার্যকর করা হচ্ছে না?

বহু বছর পরে সনিয়া আজ কোনও বিল নিয়ে বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। কংগ্রেস তথা বিরোধী শিবিরের প্রথম বক্তা হিসেবে সনিয়া দাবি তুলেছেন, ‘‘এই বিল এখনই কার্যকর করা হোক। এর সঙ্গে জাতগণনা করিয়ে তফসিলি জাতি, জনজাতি, ওবিসি মহিলাদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক।’’ বিতর্কের শেষ পর্বে বিরোধী শিবিরের শেষ বক্তা হিসেবে রাহুল গান্ধী অভিযোগ তুলেছেন, বিজেপি আদানি কেলেঙ্কারি থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে। জাতগণনা থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে। ওবিসি সংরক্ষণ ছাড়া মহিলা সংরক্ষণ বিল ‘অসম্পূর্ণ’ বলে আখ্যা দেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘‘জাতগণনার দাবি তুললেই বিজেপি নতুন বিষয় খাড়া করতে চায়। ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষের নজর অন্য দিকে ঘোরাতে চায়।’’ রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রার দ্বিতীয় পর্বেও জাতগণনার দাবি অন্যতম প্রধান বিষয় হিসেবে উঠে আসবে। সূত্রের খবর, এ বার এর নাম হতে পারে ‘সর্বোদয় যাত্রা’।

কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ অটুট রাখতেই কংগ্রেস হাই কমান্ড এখন অবস্থান বদল করেছে। এসপি, আরজেডি, জেডিইউ-র সুরে রাহুল তাঁর ভারত জোড়ো যাত্রা থেকেই জাতগণনার দাবি তুলেছেন। সরকারি চাকরি-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওবিসিদের জন্য এখন নির্ধারিত ২৭ শতাংশ আসন সংরক্ষণের বদলে ওবিসিদের সংখ্যা গণনা করে, জনসংখ্যায় অনুপাত অনুযায়ী সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন তাঁরা। কারণ, বিজেপি আগেই নরেন্দ্র মোদীর ওবিসি-পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে ওবিসি ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়েছে। এবং এ বার মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করিয়ে লোকসভা ভোটে বাজিমাত করতে চাইছে।

বিজেপি আজ মহিলা সংরক্ষণ নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে লালু-মুলায়মদের পুরনো বিবাদের স্মৃতি উস্কে দিতে চেয়েছে। উল্টো দিকে, ওবিসিদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে জাতগণনা ও জনসংখ্যায় অনুপাত অনুযায়ী সংরক্ষণের দাবি তুলে ‘ইন্ডিয়া’কে এক সুরে বেঁধে ফেলেছেন সনিয়া-রাহুল।

বিজেপি বরাবরই দাবি করেছে, ওবিসি-দের জন্য মোদী জমানায় যত কাজ হয়েছে, তা আগে হয়নি। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আজ রাহুল অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার যাঁরা চালান, সেই সরকারি সচিবদের ৯০ জনের মধ্যে মাত্র তিন জন ওবিসি। পাল্টা জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘‘উনি মনে করেন, সরকার সচিবেরা চালান। মন্ত্রিসভা সরকার চালায়। বিজেপির ৮৫ জন সাংসদ ওবিসি, ২৯ জন মন্ত্রী ওবিসি। দেশ জুড়ে বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে ২৭ শতাংশ ওবিসি।’’ ওবিসিদের জন্য সংরক্ষণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, সংবিধানে শুধু তফশিলি জাতি এবং জনজাতির জন্য সংরক্ষণের কথাই বলা রয়েছে। ওবিসি-রা সাধারণ (জেনারেল) শ্রেণির মধ্যে থেকেই ভোটে জিতে আসেন।

আজ লোকসভায় ঢোকার আগেই সনিয়া বলেছিলেন, মহিলা সংরক্ষণ রাজীব গান্ধীর স্বপ্ন ছিল। লোকসভায় সনিয়া বলেন, ‘‘আমার জীবনে এটা আবেগপূর্ণ মুহূর্ত। আমার জীবনসাথী রাজীব গান্ধী প্রথম সংবিধান সংশোধন করে পুরসভা, পঞ্চায়েতে মহিলা সংরক্ষণ করে বিল এনেছিলেন। রাজ্যসভায় সেই বিল সাতটি ভোটের জন্য পাশ হয়নি। পি ভি নরসিংহ রাওয়ের নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার তা পাশ করিয়েছিল। রাজীবের স্বপ্ন অর্ধেক পূর্ণ হয়েছিল। এই বিল পাশ হলে তা পূর্ণ হবে।’’

কেন বিল কার্যকর করাতে দেরি করা হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সনিয়া। তিনি বলেন, এই বিল এখনই কার্যকর না হলে দেশের মহিলাদের প্রতি অবিচার হবে। রাহুল বলেন, ‘‘এই বিলে বলা হচ্ছে, মহিলা সংরক্ষণের আগে জনগণনা দরকার, আসন পুনর্বিন্যাস দরকার। অথচ এই বিল এখনই কার্যকর করা যায়। এখনই মহিলা সংরক্ষণ কার্যকর করুন। জাতিগণনা করুন।’’ ইউপিএ সরকারের আমলে আর্থ-সামাজিক জাতগণনা হলেও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি। রাহুল আজ হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘জাতগণনার ফল প্রকাশ করুন, না হলে আমরা করব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Congress parliament sonia gandhi

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।