Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

রায় নিয়ে ফাঁপরেই কংগ্রেস

অযোধ্যা নিয়ে শীর্ষ আদালত যা রায় দেবে, সেটিই মাথা পেতে নেওয়া হবে— বহু বছর কংগ্রেস এই অবস্থান নিয়ে চলছে। কিন্তু বিজেপি-আরএসএস এখন যতই সম্প্রীতির বার্তা দিক, রায় আসার পরে তারা কী মূর্তি ধারণ করবে, তা নিয়ে সংশয়ে কংগ্রেস।

সনিয়া গাঁধী। —ফাইল চিত্র

সনিয়া গাঁধী। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০০
Share: Save:

দশ জনপথে বৈঠক হচ্ছে কংগ্রেস নেতাদের। সনিয়া গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার সামনেই কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বললেন, ‘‘অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় যদি রামমন্দিরের পক্ষে যায়, তা হলে আমাদেরও পাঁচটি ইঁট দিয়ে মন্দির নির্মাণে সহযোগিতা করা উচিত।’’

অযোধ্যা নিয়ে শীর্ষ আদালত যা রায় দেবে, সেটিই মাথা পেতে নেওয়া হবে— বহু বছর কংগ্রেস এই অবস্থান নিয়ে চলছে। কিন্তু বিজেপি-আরএসএস এখন যতই সম্প্রীতির বার্তা দিক, রায় আসার পরে তারা কী মূর্তি ধারণ করবে, তা নিয়ে সংশয়ে কংগ্রেস। একই সঙ্গে কংগ্রেসের মধ্যে থেকেই দাবি উঠছে, বিজেপি যদি উচ্চগ্রামে হিন্দুত্বের রাজনীতি করে, কংগ্রেস কত দিন ‘নিরীহ নিরপেক্ষ’ অবস্থান নেবে? বরং হিন্দুত্বের স্রোতে কংগ্রেসেরও ভাসা উচিত। যে ভাবে গুজরাতের বিধানসভা ভোটের সময় রাহুল গাঁধী মন্দিরে-মন্দিরে ঘুরতেন।

ফাঁপরে কংগ্রেস নেতৃত্ব। কারণ গুজরাতে হিন্দুত্বের অবস্থান নিয়ে মোদীকে প্রায় ধরাশায়ী করে দিয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছিল, ‘আগমার্কা’ হিন্দুত্বের কান্ডারি বিজেপিকে ছেড়ে লোকে কেন কংগ্রেসের ‘নরম হিন্দুত্বে’ ভরসা করবে? আর কংগ্রেসের পরিচয়ই হল, গোটা দেশে সব সমাজের মধ্যে গ্রহণযোগ্য ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসেবে। সংখ্যালঘুদের আস্থাও রয়েছে কংগ্রেসে। দলের এক নেতা জানান, ‘‘সমস্যা এ ক্ষেত্রেও তৈরি হয়েছে। অযোধ্যার রায়কে সামনে রেখে সঙ্ঘ এখন মুসলিমদেরও মন জয়ের চেষ্টা করছে। সেটিও ভবিষ্যতের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে দেখছে। বিজেপি যদি দুটিতেই থাবা বসায়, তা হলে কংগ্রেস কোথায় দাঁড়াবে?’’ এই দ্বিধা কাটাতেই রবিবার ফের বৈঠকে বসছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হওয়ার পর সনিয়া গাঁধী প্রথম বার ডেকেছেন ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। দলের নেতা প্রমোদ তিওয়ারি বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের অবস্থান আদালতের রায় মেনে নেওয়া। কিন্তু দল আলোচনা করে স্থির করবে, কী অবস্থান নেবে।’’ এক নেতা বলেন, ‘‘রুদ্রাক্ষের মালা পরে, মন্দিরে গিয়েও ইন্দিরা গাঁধী যদি ধর্মনিরপেক্ষতার ছবি বজায় রাখতে পারতেন, এখন কেন সেটি সম্ভব নয়। বিজেপি এখনও বলে, রাজীব গাঁধীই তালা খুলিয়েছেন, শিলান্যাসের অনুমতি দিয়েছেন। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব মাধব গোডবোলেও সম্প্রতি বলেছেন, রাজীব গাঁধীকেই তিনি রামমন্দির আন্দোলনের দ্বিতীয় করসেবক মনে করেন। অথচ এতে রাজীবের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিতে কোনও আঁচ আসেনি।’’

কিন্তু দলেরই অন্য অংশ মনে করে, দুর্নীতির অভিযোগ ও শাহ বানো মামলার পরে হিন্দু ভোটব্যাঙ্কের মন জয় করতে রাজীবকে এই পদক্ষেপ করতে হয়েছিল। আর তখন প্রতিপক্ষে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা ছিলেন না। আর এই মুহূর্তে কংগ্রেসের শীর্ষেও ইন্দিরা বা রাজীবের মতো বিপুল জনপ্রিয় কেউ নেই। ফলে সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Ayodhya Verdict Sonia Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy