বক্তা: রবিবার রায়পুরে কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনে রাহুল গান্ধী। নিজস্ব চিত্র
ইউপিএ সরকারকে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরাতে ২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সনিয়া গান্ধী চাষিদের ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে কংগ্রেস ফের চাষিদের ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতিই দিল। ইউপিএ সরকারের আমলে গ্রামের মানুষের রোজগার নিশ্চিত করতে একশো দিনের কাজের প্রকল্প চালু হয়েছিল। কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি, ফের ক্ষমতায় এলে শহরের গরিব, বিশেষত পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্যও রোজগার নিশ্চয়তা আইন তৈরি হবে।
নয়া রায়পুরে প্লেনারি অধিবেশন থেকে কংগ্রেস ঘোষণা করেছে, ফের ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস চাষিদের ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মকুব করবে। কৃষকদের ঋণের বোঝার সমস্যার পাকাপাকি সমাধানে জাতীয় কৃষক ঋণ সুরাহা কমিশন তৈরি হবে। চাষিরা ঋণ শোধ করতে না পারলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি প্রক্রিয়া বা জমি নিলাম করা হবে না।
তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে চাষিরা এক বছর আন্দোলন করলেও তার কোনও রাজনৈতিক সুবিধা কংগ্রেস পায়নি। কৃষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার করাতে মোদী সরকার তিন কৃষি আইন হিমঘরে পাঠালেও এখনও চাষিদের এমএসপি (ন্যূনতম সহায়ক মূল্য)-র আইনি নিশ্চয়তার দাবি মেনে নেয়নি। মহা অধিবেশনের কৃষি সংক্রান্ত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় এলে চাষিদের এমএসপি-র আইনি অধিকার দেওয়া হবে। এমএসপি-র থেকে কেউ কম দামে ফসল কিনলে তা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হবে।
কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনে একাধিক নেতা সওয়াল করেছেন, বিজেপির মোকাবিলা করতে দলের পুরনো ভোটব্যাঙ্ক, কৃষক, সংখ্যালঘু, দলিত, ওবিসি, আদিবাসী ভোটে নজর দিতে হবে। কংগ্রেস নেতা শশী তারুর বলেছেন, হিন্দু সংখ্যাগুরু ভোটব্যাঙ্ক চটে যাবে ভেবে কংগ্রেস বিলকিস বানোর মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি, গোরক্ষক বাহিনীর তাণ্ডব, মুসলিমদের বাড়িতে বুলডোজ়ার চালানো, গির্জায় হামলার মতো ঘটনায় যথেষ্ট সরব হচ্ছে না। তাঁর যুক্তি, এতে আসলে কংগ্রেস বিজেপির হাতেই খেলছে।
সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে নতুন করে জোর দিতে প্লেনারি অধিবেশনের সামাজিক ন্যায়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সাচার কমিটির সুপারিশ মেনে সংখ্যালঘু উন্নয়নে বিশেষ প্রকল্প তৈরি করবে কংগ্রেস। সংখ্যালঘু কমিশন, মহিলা কমিশনকে সাংবিধানিক তকমা দেওয়া হবে।
মোদী জমানায় বিজেপি দলিতদের সঙ্গে ওবিসি ভোটব্যাঙ্ককেও নিজের পকেটে পুরে ফেলেছে। এক দিকে নরেন্দ্র মোদীর ওবিসি পরিচিতিকে বিজেপি কাজে লাগিয়েছে। উত্তরপ্রদেশে যাদব ছাড়া অন্যান্য ওবিসি, মায়াবতীর জাটভ ছাড়া অন্যান্য দলিত ভোটও বিজেপির ঝুলিতে। এর মোকাবিলায় কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রে সামাজিক ন্যায়, আদিবাসী উন্নয়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের মতো পৃথক ওবিসি উন্নয়ন মন্ত্রক তৈরি হবে। ওবিসি-দের পাশে দাঁড়িয়ে নতুন করে জাতিগণনার দাবিও তুলেছেন কংগ্রেস নেত্রী মীরা কুমার। জাতপাতের ভেদাভেদ দূর করতে জাতীয় কমিশন তৈরি হবে। বাজেটের আগে আর্থিক সমীক্ষার সঙ্গে সামাজিক ন্যায় সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ হবে সংসদে। শিক্ষা ক্ষেত্রে দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে তৈরি হবে রোহিত ভেমুলা আইন। ইন্দিরা গান্ধীর গরিবি হটাও-এর অনুপ্রেরণায় গরিবদের ন্যূনতম আয় ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ‘সম্পূর্ণ সামাজিক সুরক্ষা’ প্রকল্প তৈরি হবে। বিজেপি নেতাদের কটাক্ষ, কংগ্রেস ২০২৪-এ ক্ষমতায় আসবে না। তাই কংগ্রেসের এই সব খয়রাতির প্রতিশ্রুতি ‘মুঙ্গেরিলাল কে হাসিন স্বপ্নে’ হয়ে থেকেই যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy