Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
BJP

প্রচারে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি, সেই গড়িমসি কংগ্রেসে

তামিলনাড়ুতে এখনও ডিএমকে-র সঙ্গে জোট নিয়ে কংগ্রেস নেতাদের আলোচনাই শুরু হয়নি।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৩৩
Share: Save:

গত লোকসভায় কংগ্রেস অন্তত ৫২টি আসন জিততে পেরেছিল। ২০২৪-এ পঞ্চাশটা আসন জুটবে তো?

প্রশ্ন শুনে এআইসিসি-র নেতা চমকে ওঠেন। তারপর হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘সে তো অনেক পরের কথা। আমরা তো এখনও ২০২১-এ বাংলা-অসম-তামিলনাড়ুর বিধানসভা ভোটের জন্যই প্রস্তুতি শুরু করিনি। ও দিকে বিজেপি নেতাদের দেখুন! অমিত শাহ, জে পি নড্ডারা হায়দরাবাদের পুরসভা নির্বাচনের জন্যও মাঠে নামছেন।’’

অমিত শাহ রবিবার গ্রেটার হায়দরাবাদ পুরসভা নির্বাচনের জন্য তেলঙ্গানা গিয়েছেন। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ সফরও হয়ে গিয়েছে। বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডাও রাজ্যে রাজ্যে ঘুরছেন। কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অমিত মালবীয়রা বাংলায় ঘাঁটি গাড়ছেন। আর কংগ্রেস?

তামিলনাড়ুতে এখনও ডিএমকে-র সঙ্গে জোট নিয়ে কংগ্রেস নেতাদের আলোচনাই শুরু হয়নি। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় এআইসিসি-তে জিতিন প্রসাদকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আড়াই মাস কাটতে চললেও তিনি এক বারও কলকাতায় যাননি। বিহারের ভোটের ফলপ্রকাশের পরেও তিন সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এখনও কংগ্রেসের ভরাডুবি নিয়ে পর্যালোচনা হয়নি। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী গোয়ায়। রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা কার্যত অদৃশ্য। বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতারা নতুন করে সরব।

এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের অন্দরমহলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পরে এ বার কয়েক জন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দল ছাড়তে পারেন। অগস্টে ২৩ জন কংগ্রেস নেতা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে ‘পূর্ণ সময়ের সক্রিয় নেতৃত্ব’-র দাবি তুলেছিলেন। তাঁদের অন্যতম, আনন্দ শর্মা আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করেছেন। মোদী গত কাল দেশের তিনটি কোভিড প্রতিষেধক গবেষণাকেন্দ্রে গিয়েছিলেন। আনন্দ শর্মা আজ বলেন, ‘‘এতে করোনার বিরুদ্ধে প্রথম সারিতে থাকা যোদ্ধাদের মনোবল বাড়বে। দেশকেও আশ্বস্ত করা হবে।’’

আনন্দের এই মোদী-স্তুতিতে কংগ্রেসের অন্দরে জোর জল্পনা। মনমোহন-জমানার মন্ত্রী আনন্দ শর্মা কংগ্রেসের রাজ্যসভার উপ-দলনেতা। বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ গত সপ্তাহেই দলের দুরবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। হরিয়ানার কুলদীপ বিষ্ণোই পাল্টা বলেছিলেন, আজাদ তাঁদের রাজ্যের দায়িত্ব নিয়ে দলকে ডুবিয়েছেন। এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর বিশেষ ধারণা নেই। ২০ বছর আগে শেষ লোকসভা ভোটে লড়েছেন। তবু কংগ্রেস তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে। আনন্দ শর্মা সে সময় আজাদের হয়ে রুখে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, মনমোহন সিংহও রাজ্যসভায় জিতে এসে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।

বিক্ষুব্ধ নেতাদের অভিযোগ, কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বের মাঠে নামার বিষয়ে গড়িমসিই আসল সমস্যা। বিহারে রাহুল মাত্র আটটি জনসভা করেছেন। উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত নেত্রী হয়েও প্রিয়ঙ্কা উপনির্বাচনের প্রচারে যাননি। রাহুল পঞ্জাব-হরিয়ানায় কৃষি আইনের প্রতিবাদে ট্র্যাক্টর মিছিল করেছেন। তার পরে গোটা দেশে চাষিদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেননি।

আর কবে মাঠে নামবেন রাহুল? তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতারা মনে করছেন, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন ও সাংগঠনিক নির্বাচনে নেতৃত্ব, দায়িত্বের ভাগবাঁটোয়ারা ফয়সালা হলেই রাহুল ফের মাঠে নামবেন।

কংগ্রেসের এক বিক্ষুব্ধ নেতা বলেন, ‘‘এখন শুধু মাঠে নামলেই হবে না। সংগঠনকেও ঠিক ভাবে সাজাতে হবে। গাঁধী পরিবার যদি মনে করে, একদিন লোকে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের উপরে বীতশ্রদ্ধ হয়ে কংগ্রেসকেই ভোট দেবে, তা হলে ভুল করবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Congress Amit Shah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy