প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। ফাইল চিত্র।
ফের কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। আজ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর দশ জনপথের বাসভবনে হওয়া পাঁচ ঘণ্টার সেই বৈঠকে যোগ দিলেন কংগ্রেসের দুই মুখ্যমন্ত্রী, রাজস্থানের অশোক গহলৌত এবং ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বঘেল। সূত্রের বক্তব্য, গত কয়েক দিনে কংগ্রেসের দীর্ঘমেয়াদি রণকৌশল তৈরি নিয়ে রাজ্য ধরে ধরে তাঁর পরিকল্পনা পেশ করেছেন পিকে। সংগঠন মজবুত করে দলকে পরবর্তী ভোটের জন্য প্রস্তুত করার পথ খুঁজতে সনিয়া ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ কমিটি তৈরি করেছেন। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা জানান, সেই কমিটি পিকে-র দেওয়া প্রস্তাবগুলিও বিবেচনা করে আগামী তিন দিনের মধ্যে একটি রিপোর্ট জমা দেবে।
পিকে-র একের পর এক বৈঠকের জেরে তাঁর কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টিও চর্চায় উঠে এসেছে। কারও কারও মতে, নিজের শর্তে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন পিকে। এই প্রসঙ্গে সুরজেওয়ালা এ দিন বলেন, ‘‘কোনও ব্যক্তিবিশেষকে দলে নেওয়া হবে কি না, সেই মত দেওয়া কমিটির কাজ নয়। তার কাজ হল, কী ভাবে সংগঠন মজুবত করে দলকে ২০২৪ সালের লোকসভা ও অন্যান্য ভোটের জন্য প্রস্তুত করা যায়, তার পথ বাতলানো।’’
এর আগে মধ্যপ্রদেশ নিয়ে পিকে-র বৈঠকে কমল নাথ, দিগ্বিজয় সিংহেরা যোগ দিয়েছিলেন। আজকের বৈঠকে গহলৌত এবং বঘেল তাঁদের রাজ্যের বিষয়ে নিজস্ব রণকৌশল ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি পিকে-র মতামতও জানতে চান এবং তা নিয়েও আলোচনা চলে। সূত্রের বক্তব্য, কংগ্রেসের উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে রয়েছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, কে সি বেণুগোপাল, পি চিদম্বরম, জয়রাম রমেশ, দিগ্বিজয় সিংহ এবং রণদীপ সুরজেওয়ালা। তাঁরাই পিকে-র সমগ্র পরিকল্পনা খতিয়ে দেখে সভানেত্রীকে সবিস্তার রিপোর্ট দেবেন।
সদ্য শেষ হওয়া পাঁচ রাজ্যের ভোটে শুধু যে কংগ্রেসের বিপর্যয় ঘটেছে তা-ই নয়, পঞ্জাবে ক্ষমতাও খোয়াতে হয়েছে তাদের। আগামী বছর কংগ্রেস-শাসিত রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়ের পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশেও ভোট। এই পরিস্থিতিতে অন্দরের ক্ষোভ সামাল দিয়ে দলকে যে অবিলম্বে পুনরুজ্জীবিত করা প্রয়োজন, তা বুঝতে পারছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। সুরজেওয়ালা জানান, সংগঠনে পরিবর্তন এনে তাকে পোক্ত করা, আগামী নির্বাচনগুলির রণকৌশল তৈরি করা এবং দেশের আমজনতার দুঃখ-দুর্দশা তুলে ধরে দলের নীতি তৈরিতে সাহায্য করাই সভানেত্রীর গড়ে দেওয়া বিশেষ কমিটির প্রধান কাজ। তিনি বলেন, ‘‘যে সমস্ত পরিবর্তন আসবে, তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে সংগঠনকে। সেই কারণেই প্রশান্ত কিশোর এবং অন্য অভিজ্ঞ নেতাদের দেওয়া পরামর্শগুলি গত তিন দিন ধরে খতিয়ে দেখছে কমিটি। আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেই প্রক্রিয়া শেষ হবে।’’
বঘেল এবং গহলৌত প্রসঙ্গে সুরজেওয়ালা জানান, দুই মুখ্যমন্ত্রীরই বিরাট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই এই আলোচনায় তাঁদেরও শামিল করা হয়েছে। বৈঠকের পরে পিকে-র প্রশংসাই শোনা গিয়েছে গহলৌতের মুখে। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রশান্ত কিশোর এ দেশে একটি ব্র্যান্ড হয়ে গিয়েছেন। ২০১৪ সালে তিনি নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে, তার পরে নীতীশ কুমারের সঙ্গে ছিলেন। তারও পরে পঞ্জাবে কংগ্রেস এবং আরও অনেকের সঙ্গে কাজ করেছেন। বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন সংস্থার মতামত আমরা নিয়ে থাকি। বিরোধীদের একজোট করার ক্ষেত্রে তাঁর (পিকে) অভিজ্ঞতা কাজে আসতে পারে। বিশেষত উৎসব ঘিরে দেশে যে ভাবে হিংসা ছড়াচ্ছে, তখন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy