ফাইল চিত্র।
খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি’ বলে পরিচিত গৌতম আদানির সংস্থায় অনিয়মের গন্ধ পেয়ে এ বার মাঠে নামল কংগ্রেসও।
আদানি গোষ্ঠীর চার সংস্থায় মরিশাসের তিন লগ্নিকারী সংস্থা মারফত আসলে কার বা কাদের টাকা খাটছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিস্তর। শেয়ার বাজারে লগ্নিকারী এবং বিশ্লেষকদেরও একাংশের ক্ষোভ, কেন এ বিষয়ে স্পষ্ট বিবৃতি জারি করছে না অভিযোগের মুখে পরা চার সংস্থাই। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার কংগ্রেসের দাবি, মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক ও শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি আগে খোলসা করুক মরিশাসের ওই তিন সংস্থার ‘চরিত্র’। স্পষ্ট জানাক, ওই সব সংস্থার ‘নেপথ্যে’ রয়েছেন কারা। একই দাবিতে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রহ্মণ্যন স্বামীও।
আলবালা, ক্রেস্টা ও এপিএমএস নামে তিন বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করার খবর ছড়াতেই সোমবার ধস নেমেছিল আদানি গোষ্ঠীর অধিকাংশ সংস্থার শেয়ার দরে। জানা গিয়েছিল, তারা গৌতম আদানির মালিকানাধীন চারটি সংস্থায় তাদের মোট তহবিলের ৯৫ শতাংশেরও বেশি অর্থ ঢেলেছে! মোট লগ্নির অঙ্ক ৪৩,৫০০ কোটি টাকা। অথচ ঝুঁকি এড়াতে এ ধরনের সংস্থা সাধারণত বাজারে বিনিয়োগ করে বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। আদানি গোষ্ঠীর দাবি ছিল, লগ্নিকারী সংস্থাগুলির অ্যাকাউন্ট চালু রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শেয়ার দরে পতনের জেরে ওই এক দিনেই মুছে গিয়েছিল আদানি গোষ্ঠীর প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। এ দিনও দু’টি বাদে গোষ্ঠীর বাকি সংস্থার শেয়ার-দর ছিল নিম্নমুখী।
অর্থ মন্ত্রকের অন্দরমহলে প্রথম থেকেই সংশয় ছিল, এর পিছনে কোনও কর্পোরেট যুদ্ধ রয়েছে কি না! বিষয়টি সকলের নজরে এনে উস্কে দিতে চাইছে কি না কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী। তার উপরে আজ সরকারের চিন্তা বাড়িয়ে এ নিয়ে রাজনৈতিক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, করফাঁকির স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত মরিশাসের ঠিকানার তিন সংস্থায় আসলে কাদের টাকা খাটছে? তাদের দাবি, বিষয়টি অর্থ মন্ত্রক, মন্ত্রকের অধীন এনএসডিএল (ন্যাশনাল সিকিউরিটিজ ডিপোজিট লিমিটেড) ও সেবি খোলসা করুক। কংগ্রেসের যুক্তি, কোনও অনিয়মের জেরে শেয়ার বাজার ধাক্কা খেলে, তার খেসারত দিতে হবে বাজারে লগ্নিকারী সাধারণ মানুষকেও।
কংগ্রেস মুখপাত্র গৌরব বল্লভ বলেন, “যে তিন সংস্থাকে নিয়ে প্রশ্ন, সেই তিনটিই মরিশাসের পোর্ট লুইয়ের একই ঠিকানায় নথিভুক্ত। এদের কোনও ওয়েবসাইট নেই। অথচ তারা আদানি গোষ্ঠীতে নিজেদের মোট তহবিলের ৯৫ শতাংশ লগ্নি করেছে। এই তিন সংস্থার কাছে আদানি এন্টারপ্রাইজ়ের ৬.৮%, আদানি ট্রান্সমিশনের ৮.০৩%, আদানি টোটাল গ্যাসের ৫.৯২% ও আদানি গ্রিনের ৩.৫৮% মালিকানা রয়েছে। উল্টো দিকে, গত ১২ মাসে এই সংস্থাগুলির শেয়ার দর বেড়েছে ধূমকেতুর বেগে। যথাক্রমে ৯৭২%, ৬৬৯%, ৩৪৯% ও ২৫৪%!” কংগ্রেস মুখ খুললেও, স্বামী ছাড়া বিজেপির কোনও নেতা এখনও এ নিয়ে বিতর্কে জড়াতে চাননি।
সোমবার জানা গিয়েছিল, ৩১ মে বা তার আগে তিনটি সংস্থার ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করা হয়। তারপরে আদানি এন্টারপ্রাইজ় জানায়, অ্যাকাউন্টগুলি চালু রয়েছে। এনএসডিএল সে কথা আদানি গোষ্ঠীকে জানিয়েছে বলে সূত্রের খবর। তারপরে আজ আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার দরে কিছুটা উন্নতিও হয়েছে। কিন্তু লগ্নিকারী সংস্থাগুলির অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করা হয়েছিল কি না, সে প্রশ্ন থাকছেই।
কংগ্রেস মুখপাত্র বলেন, ‘‘অর্থ মন্ত্রকের অধীনস্থ এনএসডিএল কেন খোলসা করছে না যে, কোন সংস্থার, কী কারণে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছিল? কেনই বা মরিশাস থেকে লগ্নি আসা আদানি গোষ্ঠীর চারটি সংস্থার মধ্যে শুধু আদানি এন্টারপ্রাইজ় বিষয়টি স্পষ্ট করতে বিবৃতি দিচ্ছে, কিন্তু বাকি সংস্থাগুলি চুপ!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy