—ফাইল চিত্র।
গত দু’মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। রোজ সংঘর্ষ ও প্রাণহানির খবর আসছে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্য থেকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মণিপুরের সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনায় রাজি না হওয়ায় আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করলেন কংগ্রেস ও তৃণমূলের সাংসদেরা।
সদ্য পটনায় বিরোধী জোটের বৈঠক হয়েছে। বাদল অধিবেশনের আগে ফের তাঁদের বৈঠক হতে চলেছে বেঙ্গালুরুতে। সরকারের বিরোধিতায় বিরোধী দলগুলির মধ্যে যে ঐকমত্যের ক্ষেত্র প্রস্তুত হচ্ছে, তা আজ ফের স্পষ্ট হয়ে যায় এই যৌথ ওয়াকআউটের ঘটনায়। এ দিন তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের কারা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ছিল। কিন্তু তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ, প্রদীপ ভট্টাচার্যরা চেয়ারম্যান ব্রিজ লালকে চিঠি দিয়ে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত জরুরি ও সংবেদনশীল বিষয় হিসেবে মণিপুর নিয়ে আলোচনা করা সদস্যদের নৈতিক ও সাংবিধানিক কর্তব্য। মণিপুরের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত একশো জন মারা গিয়েছেন। গুরুতর আহত তিনশো জন। পঞ্চাশ হাজার লোক ত্রাণশিবিরে দিন কাটাচ্ছেন। রাজ্যে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কারা সংস্কার নিয়ে বৈঠক করছে।’
ব্রিজ লাল নিজে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজিপি ছিলেন। সে কথা উল্লেখ করে ডেরেকরা লেখেন, ‘‘আপনি নিজে পুলিশকর্তা থাকায় নিশ্চয়ই পরিস্থিতির গুরুত্ব আরও ভাল ভাবে অনুধাবন করতে পারছেন। মণিপুরের এখন হিংসার উপশম প্রয়োজন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা চোখ বুজে থাকতে পারি না।’’ তাঁরা জানান, গত মাসেও মণিপুর নিয়ে জরুরি বৈঠকের দাবিতে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিরোধী সাংসদেরা। সেই আবেদনও গ্রাহ্য হয়নি। বরং জানানো হয়, গোটা জুলাই মাসে এ নিয়ে আলোচনার সময় নেই।
সূত্রের খবর, ব্রিজলাল এ দিনও মণিপুর নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব খারিজ করায় ডেরেক-দিগ্বিজয়-প্রদীপ বলেন, ‘‘বৈঠকের বিষয় নির্ধারণ করা চেয়ারম্যানের অধিকার। কিন্তু জাতীয় স্তরে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে হাত গুটিয়ে থাকাটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ তার পরেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন ওঁরা। উত্তর-পূর্বের প্রতিনিধি হিসেবে বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ বিপ্লব দেবকেও বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান ডেরেকরা। তিনি সেই অনুরোধ অগ্রাহ্য করেন বলে খবর।
আসন্ন লোকসভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মহাজোট করে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই কেন্দ্র-বিরোধী রণকৌশল তৈরি করতে পটনায় বৈঠকে বসেছিলেন তাঁরা। আগামী ১৭-১৮ জুলাই ফের বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোটের বৈঠক হতে চলেছে। তার আগে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মতো প্রধান দুই বিরোধী দল আজ যে ভাবে সমন্বয় করে বৈঠক থেকে বেরিয়ে এল, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্র বিরোধিতার প্রশ্নে দুই দল যে একই পংক্তিতে রয়েছে, তা স্পষ্ট আজকের ওয়াকআউটে। বিরোধী শিবিরের আশা, আসন্ন বাদল অধিবেশনেও সংসদে সরকার বিরোধিতার প্রশ্নে বিরোধী দলগুলির মধ্যে সুষ্ঠু কক্ষ সমন্বয় দেখা যাবে।
আজ তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে, যত দিন না মণিপুর নিয়ে আলোচনা হবে, তত দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গরহাজির থাকবেন দলীয় সাংসদেরা। দিগ্বিজয় বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে বলেন, ‘‘গত ৫০ দিন ধরে মণিপুরে সংঘর্ষ চলছে। প্রধানমন্ত্রী একটি বাক্য বলারও ফুরসত পাননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy