Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
GST

জিএসটি নিয়ে সংঘাত, কেন্দ্রের যুক্তি মানতে নারাজ রাজ্য

সংসদের অধিবেশনের মধ্যে জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন করে রাজ্যগুলির সঙ্গে সংঘাতে যেতে চায়নি। তাই ১৯ সেপ্টেম্বরের নির্ধারিত জিএসটি পরিষদের বৈঠক পিছিয়ে ৫ অক্টোবর করা হয়েছিল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:০৮
Share: Save:

এক দিকে বিরোধী-শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা তরোয়ালে শান দিচ্ছেন। অন্য দিকে, মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক ঢাল সাজাচ্ছে।

সংসদের অধিবেশনের মধ্যে জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন করে রাজ্যগুলির সঙ্গে সংঘাতে যেতে চায়নি। তাই ১৯ সেপ্টেম্বরের নির্ধারিত জিএসটি পরিষদের বৈঠক পিছিয়ে ৫ অক্টোবর করা হয়েছিল। কিন্তু তার আগে সিএজি মোদী সরকারের দিকে আইন ভেঙে জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা নিজের কোষাগারে সরিয়ে ফেলার অভিযোগ তোলায় ফের কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের মঞ্চ প্রস্তুত।

পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর সঙ্গে গলা মিলিয়ে শনিবার কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাকও কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন। রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের তোপের মুখে শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক যুক্তি দিয়েছে, একে মোটেই জিএসটি সেস তহবিলের টাকা অন্যত্র সরিয়ে ফেলা বলা যায় না। ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯-এ রাজ্যের ক্ষতিপূরণের দাবি পুরোটাই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সিএজি রিপোর্টে বলেছিল, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯, এই দুই অর্থ বছরে জিএসটি সেস থেকে আয়ের ৪৭,২৭২ কোটি টাকা কেন্দ্র আইন ভেঙে নিজের কোষাগার বা কনসলিডেটেড ফান্ডে সরিয়ে ফেলে। তা কেন্দ্রের রাজস্ব আয় হিসেবে দেখিয়ে অন্য কাজে খরচ হয়। জিএসটি থেকে কোনও রাজ্যের আয় কম হলে, সেই ক্ষতিপূরণ মেটানোর জন্যই কিছু বিলাসবহুল ও ক্ষতিকারক পণ্যে সেস বসানো রয়েছে। তা থেকে আয়ের টাকা শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণ মেটাতেই খরচ করা যায়।

কোভিড-লকডাউনের পরে কেন্দ্র জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা মেটাতে পারবে না জানিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা এখানেই কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলছেন। কেরলের অর্থমন্ত্রী আইজ্যাকের বক্তব্য, “এতে কেন্দ্রীয় সরকারের দু’মুখো নীতি স্পষ্ট। যখন সব ভাল চলছে, তখন জিএসটি সেস থেকে বাড়তি আয় কেন্দ্র নিজের কাজে লাগাবে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় আয় কম হলেই কেন্দ্র নিজের দায় ঝেড়ে ফেলবে।”

কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, ২০১৭-১৮-য় জিএসটি সেস থেকে ৬২,৬১১ কোটি টাকা আয় হয়েছিল। কিন্তু সে বছর ক্ষতিপূরণ মেটাতে ৪১,১৪৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়। ২০১৮-১৯-এ আয় হয় ৯৫,০৮১ কোটি টাকা। প্রয়োজন পড়েছিল অনেক কম— ৬৯,২৭৫ কোটি টাকা। এই দু’বছরের সাশ্রয় ৪৭,২৭২ কোটি টাকা ২০১৯-২০-তে ক্ষতিপূরণ মেটাতে খরচ হয়েছে। তা ছাড়া, কেন্দ্রের
যে কোনও আয় প্রথমে সরকারি কোষাগারেই আসে। পরে তা অন্য তহবিলে যায়। সেস তহবিলে টাকা পাঠানো বকেয়া ছিল। কিন্তু তাকে রাজ্যের টাকা অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলা যায় না। কিন্তু আইজ্যাকের যুক্তি, সেস থেকে আয়ের টাকা যে ক্ষতিপূরণ
তহবিলেই থাকবে, তা জিএসটি পরিষদে অনেক আগেই আলোচনা হয়েছে। এর মীমাংসাও হয়ে গিয়েছে।

অমিত মিত্র আগেই বলেছেন, কেন্দ্রের রাজস্ব আয় ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়ে রাজকোষ ঘাটতি কমিয়ে দেখানোটাই উদ্দেশ্য ছিল। বাস্তবিকই ওই দুই বছরে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যপূরণে হিমশিম খেয়েছিল মোদী সরকার। পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত বাদলের অভিযোগ, আন্তঃরাজ্য বা আইজিএসটি-র টাকাও একই ভাবে কেন্দ্র নিজের কোষাগারে সরিয়ে ফেলেছিল। তা নিয়েও সিএজি আগে প্রশ্ন তুলেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

GST States
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy