সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
সরকারের বিরোধিতা করা মানেই দেশবিরোধিতা নয়। একটি ‘নিষিদ্ধ’ মলয়ালম টিভি চ্যানেল চালু করার নির্দেশ দিয়ে এই মন্তব্য করল দেশের শীর্ষ আদালত।
জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, এই কারণ দেখিয়ে মলয়ালম টিভি চ্যানেলটির সম্প্রচারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। মোদী সরকারের সিদ্ধান্ত ও কার্যকলাপের কড়া সমালোচক বলে পরিচিত এই চ্যানেলটি। সেই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কেরল হাই কোর্টে আপিল করেছিল চ্যানেলটি। কিন্তু হাই কোর্টে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, চ্যানেলটি জাতীয় নিরাপত্তা বিরোধী। ফলে তাদের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা যাবে না। সেই মামলায় কেন্দ্রের পক্ষেই রায় দেয় আদালত। হাই কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে তখন সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। পৃথক ভাবে মামলা করেছিলেন চ্যানেলের সম্পাদক এবং কেরলের সাংবাদিকদের একটি সংগঠন। আজ সব ক’টি মামলার একত্রে শুনানি ছিল।
মামলার রায় দিতে গিয়ে আজ প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলে, “সরকারের নিন্দা মানেই তো দেশবিরোধিতা নয়। সরকারের নীতির সমালোচনা করলেই কাউকে প্রতিষ্ঠান বিরোধী বলা যাবে না।” শক্তিশালী গণতন্ত্রের সঠিক পরিচালনার জন্য যে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের প্রয়োজন, তা-ও স্পষ্ট বলা হয়েছে শীর্ষ আদালতের রায়ে। জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে এ ভাবে সংবাদ মাধ্যমের মুখ বন্ধ করাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ‘উদ্ধত ও শিষ্টাচার-বিরোধী আচরণ’ বলে অভিহিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, “জনগণের অধিকারকে অস্বীকার করে জাতীয় নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তোলা ঠিক নয়। চ্যানেলটিতে যা সম্প্রচারিত হয়েছে তা বলা তাদের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক যে ভাবে চ্যানেলটির লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করতে দেয়নি, তা বাক্স্বাধীনতা ও বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার এক ভীতিকর পন্থা।’’
জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই মলয়ালম চ্যানেলটির লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করতে দেয়নি। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল চ্যানেলটির সম্প্রচার। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কেরল হাই কোর্টে মামলা করেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। সেই মামলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাদের বক্তব্য মুখবন্ধ খামে হাই কোর্টে জমা দিয়েছিল এবং কেরল হাই কোর্ট সেই মুখবন্ধ খামে থাকা তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের রায় দেয়। কেন্দ্র কী তথ্য-প্রমাণ পেশ করেছে, তা প্রকাশ করা হয়নি। কেরল হাই কোর্ট কী ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়েও আজ, বুধবার প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিদের কথায়, ‘‘তদন্তের রিপোর্ট এ ভাবে গোপন করে রেখে দেওয়ার স্বাধীনতা সরকারকে দেওয়া যায় না। এর ফলে দেশের নাগরিকদের অধিকার ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy