বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার বৈঠকে বিরোধী নেতানেত্রীরা। —ফাইল চিত্র।
ইডি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সম্ভবত সে কারণে তিনি দিল্লিতে না-ও আসতে পারেন। দলীয় সূত্রে আজ এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। সিপিএমের কোনও নেতাও বৈঠকে যাচ্ছেন না। ফলে বুধবার বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র সমন্বয় ও নির্বাচনী রণকৌশল কমিটির প্রথম বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএমের কেউই হাজির থাকছেন না। দুই দলের অনুপস্থিতিতেই ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলির মধ্যে আসন বণ্টন প্রক্রিয়া, যৌথ নির্বাচনী প্রচার ও জনসভা নিয়ে আলোচনা শুরু হতে চলেছে।
গত সপ্তাহে মুম্বইয়ে ইন্ডিয়ার বৈঠকে সমন্বয় ও নির্বাচনী রণকৌশল কমিটি গঠন হয়। আগামী কাল বিকেলে দিল্লিতে এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের বাড়িতে এই কমিটির প্রথম বৈঠক। তৃণমূলের কমিটিতে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অভিষেককে বুধবারই ইডি তলব করেছে। তৃণমূল প্রথমে অন্য কাউকে বৈঠকে পাঠানোর কথা ভেবেছিল। কিন্তু পরে শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন, অন্য কাউকে পাঠালে কমিটির গুরুত্ব লঘু করা হবে। তৃণমূলের তরফে তা কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল ও এনসিপি-র শরদ পওয়ারকে জানানো হয়। রাজনৈতিক সূত্রের ব্যাখ্যা, অভিষেককে ইডি-র সমন পাঠানোর অর্থ এখন আর তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয়। ইন্ডিয়া-র শীর্ষ কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ। অভিষেক ইডি-র সমনের জন্য বৈঠকে যোগ দিতে না পারলে বাকি দলগুলিও তৃণমূলের পাশে দাঁড়াবে। তৃণমূলও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতি ও কেন্দ্রীয় সংস্থার অপপ্রয়োগের অভিযোগে সবাইকে পাশে পাবে।
ঠিক এখানেই সিপিএমের অস্বস্তি। মুম্বইয়ে সমন্বয় কমিটি গঠনের সময়ে সিপিএম জানিয়েছিল, দলের কে ওই কমিটিতে থাকবেন, তা পরে জানানো হবে। এখনও সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। বুধবারের বৈঠক থেকে অভিষেকের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা গেলে সিপিএমকে অস্বস্তির মুখে পড়তে হত। দলীয় সূত্রের খবর, শনি-রবিবার দিল্লিতে সিপিএমের পলিটবুরো বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
বুধবারের বৈঠকে হাজির না হলেও তৃণমূল চাইছে, রাজ্য স্তরে বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে একটি সূত্র দ্রুত তৈরি করে ফেলা হোক। তার ভিত্তিতে রাজ্য স্তরে ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলির মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যাক। তৃণমূল নেতৃত্ব এই বিষয়টি দ্রুত সেরে ফেলতে চাইছেন। কিন্তু কংগ্রেস ও সিপিএম ধীরে চলো নীতি নিচ্ছে বলে তৃণমূল মনে করছে।
তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, অধিকাংশ রাজ্যেই বিরোধী শিবিরের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। জট মূলত পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব, দিল্লিতে। সেখানে গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলের ভিত্তিতে আসন বণ্টন হবে না কি লোকসভার ফলের ভিত্তিতে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট দিশানির্দেশ প্রয়োজন। তার পরে যৌথ প্রচারে কোনও সমস্যা নেই।
ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া-র প্রচার কমিটির বৈঠকে নির্দিষ্ট প্রচারের সুরকে ধরে পটনা, নাগপুর, চেন্নাই, গুয়াহাটি ও দিল্লিতে ইন্ডিয়া-র জনসভার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভোটমুখী রাজ্য রাজস্থানের জয়পুর, মধ্যপ্রদেশের ভোপালেও ইন্ডিয়া-র জনসভা করার প্রস্তাব রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২ অক্টোবর রাজঘাট থেকে ইন্ডিয়া-র ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ প্রকাশের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে কী কী বিষয় থাকবে, তা নিয়েও বুধবার আলোচনা হবে। ২২ সেপ্টেম্বর ইন্ডিয়া-র প্রচার কমিটি ও সংবাদমাধ্যম, সমাজমাধ্যম ও গবেষণা সংক্রান্ত গোষ্ঠীর যৌথ বৈঠক হতে পারে। ইন্ডিয়া-র সমন্বয় কমিটির বৈঠকের সময়েই বিজেপি দিল্লিতে মধ্যপ্রদেশ-ছত্তীসগঢ়ের ভোট নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডেকেছে। আগে ইন্ডিয়া-র বেঙ্গালুরুর বৈঠকের সময়ে বিজেপি দিল্লিতে এনডিএ-র বৈঠক ডেকেছিল। মুম্বইয়ের বিরোধী বৈঠকের সময়ে মহারাষ্ট্রের বিজপি শরিকদের বৈঠক ডাকা হয়। এ সব ইন্ডিয়া-র বৈঠক থেকে নজর ঘোরানোর কৌশল বলে কংগ্রেসের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy