তার বাবা সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে রয়েছে। উদ্বেগে গোটা পরিবার। খাওয়াদাওয়া, ঘুম শিকেয় উঠেছে। শুধু এখন একটাই প্রার্থনা, সশরীরে যেন বাড়িতে ফিরে আসেন তাদের প্রিয় মানুষটি। বাবার কথা বলতে বলতে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেছিল সুড়ঙ্গে আটকে থাকা এক শ্রমিকের কন্যা। বার বারই সে বলছে, ‘‘বাবা তুমি ফিরে এসো তাড়াতাড়ি।’’ কিন্তু তার বাবার কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেবে কে? কী অবস্থায় আছেন তিনি, কোন পরিস্থিতিতে আছেন, বাড়ির লোকেরা কেউই জানেন না। আর তাই সময় যত গড়াচ্ছে, তাঁদের উদ্বেগও বাড়ছে।
তেলঙ্গানার শ্রীশৈলমের সুড়ঙ্গে শনিবার সকালে ধস নামায় আট জন শ্রমিক তার ভিতরে আটকে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের দু’জন, ঝাড়খণ্ডের চার জন, জম্মু-কাশ্মীর এবং পঞ্জাবের এক জন করে রয়েছেন। ঝাড়খণ্ডের চার শ্রমিক হলেন সন্তোষ সাহু, অনুজ সাহু, জগতা খেস এবং সন্দীপ সাহু। তাঁদের মধ্যে সন্তোষের বাড়ি গুমলার করৌন্দি পঞ্চায়েতের তিররা গ্রামে।
আরও পড়ুন:
সন্তোষের আটকে পড়ার খবর গ্রামে পৌঁছোতেই বাড়ির লোকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বাড়িতে রয়েছেন সন্তোষের স্ত্রী সন্তোষী দেবী, তাঁদের তিন সন্তান রিমা, রাধিকা এবং ঋষভ। সন্তোষের দুই কন্যা রিমা এবং রাধিকা বলে, ‘‘আমরা গরিব। সংসার চালাতে বাবা তেলঙ্গানায় কাজ করতে গিয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে খবর আসে বাবা আটকে পড়েছে সুড়ঙ্গে। সরকারের কাছে আমাদের প্রার্থনা, বাবাকে সশরীরে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’’ গোটা গ্রাম সন্তোষের ফিরে আসার প্রার্থনা করছে।
আটকে পড়ার পর ৩০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও উদ্ধার করা যায়নি শ্রমিকদের। সময় যত গড়াচ্ছে উদ্বেগ আর চিন্তা বাড়ছে উদ্ধারকারীদের। শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগও সম্পূর্ণ ছিন্ন। সুড়ঙ্গের সাড়ে ১৩ কিলোমিটার ভিতরে আটকে রয়েছেন ওই আট শ্রমিক। সুড়ঙ্গের ভিতরে ঢুকেছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু সমস্যা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তুলেছে সুড়ঙ্গের ভিতরের কাদাজল। তাই এগোতে পারছেন না তাঁরা। ইতিমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) বেশ কয়েকটি দল উদ্ধারের কাজে নেমেছে। উদ্ধারের জন্য ডাকা হয়েছে সেনাও।