(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
স্নাতক স্তরে ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এ অনিয়ম এবং দুর্নীতি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। এই আবহেই নিট-এর মাধ্যমে দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ভর্তির যে বর্তমান বন্দোবস্ত, তা বাতিল করার আর্জি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এই চিঠিতে মমতা ডাক্তারিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ফের রাজ্যগুলির হাতে ক্ষমতা এবং দায়িত্ব তুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।
২০১৭ সালে রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের মাধ্যমে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে স্নাতক স্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া চলত। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ভাবেও মেডিক্যালে প্রবেশিকা পরীক্ষা হত। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, ওই পুরনো ব্যবস্থা পুনরায় ফেরানো হোক। চিঠিতে মমতা লেখেন, “এক চিকিৎসকের লেখাপড়া এবং ইন্টার্নশিপের জন্য রাজ্য সরকার গড়ে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করে। তাই জয়েন্ট্র এন্ট্রান্স পরীক্ষার মাধ্যমে মেডিক্যালের পড়ুয়াদের বেছে নেওয়ার অধিকার রাজ্যের হাতেই থাকা উচিত।”
তা ছাড়া নিট-এর মতো সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় বন্দোবস্তে রাজ্যগুলির কোনও অধিকার থাকছে না বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, এই ব্যবস্থা দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর যে আদর্শ তা লঙ্ঘিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি চিঠিতে একটি অর্থনৈতিক দিকও তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন, “বর্তমান ব্যবস্থা (নিট-এর মাধ্যমে ডাক্তারিতে ভর্তি)-র জন্য ব্যাপক মাত্রায় দুর্নীতি হচ্ছে, যা কেবল ধনীদেরই সুযোগ করে দিচ্ছে। গরিব এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির মেধাবী পড়ুয়ারা এই ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় শিকার।”
তাই নিট-এর মাধ্যমে ডাক্তারিতে ভর্তির বর্তমান যে ব্যবস্থা, তাকে দ্রুত বাতিল করার আর্জি জানানোর পাশাপাশি রাজ্যগুলির হাতে পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মোদীকে লেখা চিঠিতে মমতার দাবি, তাঁর আর্জি মান্যতা পেলে চলতি অচলাবস্থা কেটে গিয়ে স্থিতাবস্থা ফিরবে এবং পরীক্ষার্থীরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন।
২০২৪ সালে নিট নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে পরীক্ষায় বেনিয়ম এবং টাকার পরিবর্তে প্রশ্নফাঁসের। নিটে ৬৭ জন পরীক্ষার্থী ৭২০-তে ৭২০ পাওয়ার পর বিতর্কের সূত্রপাত। যদিও পরীক্ষার আয়োজক সংস্থা এনটিএ জানিয়েছিল, ভুল প্রশ্নের জন্য এবং কয়েক জন প্রার্থীকে ‘গ্রেস মার্ক’ দেওয়ার কারণেই তাঁদের নম্বর বেড়েছে। এর মধ্যেই নেটে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। তার পর থেকেই দেশ জুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে দেশের বিভিন্ন আদালতে। গোটা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনার মুখে পড়েছে এনটিএ। তবে কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত নিট বাতিল করেনি। শনিবারই নিট কেলেঙ্কারির তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। সরকারি বিবৃতিতে লেখা হয়, “পরীক্ষা পদ্ধতিতে স্বচ্ছতার জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক ঠিক করেছে, বিষয়টি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy