Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Moderna

COVID Vaccine: আইনি সুরক্ষার জটেই আটকে দুই প্রতিষেধক

এ দেশে টিকাকরণে যে তিনটি প্রতিষেধক ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলির উৎপাদক সংস্থাকে আইনি পদক্ষেপ বা ক্ষতিপূরণের প্রশ্নে কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি।

ছবি রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২১ ০৫:৩৯
Share: Save:

ক্ষতিপূরণের শর্তের গেরোয় আটকে রয়েছে ফাইজ়ার ও মডার্নার প্রতিষেধকের ভারতে আগমন। দুই বিদেশি সংস্থা ভারতের কাছে এই মর্মে আইনি সুরক্ষা চেয়েছে যে, টিকার প্রয়োগে কারও শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে না। কিন্তু এই শর্ত মানতে আপত্তি রয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের। আপাতত সেই জটই বহাল রয়েছে।

ভারতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র যদিও পেয়েছে মডার্নার প্রতিষেধক। দেশের চতুর্থ প্রতিষেধক হিসেবে গত মাসের শেষ সপ্তাহে মডার্নাকে ছাড়পত্র দেয় কেন্দ্র। ভারতে মডার্নার টিকা আমদানির অনুমতি পেয়েছে সিপলা সংস্থা। তবে এই টিকা প্রয়োগের পরে শরীরে কোনও ক্ষতিকর প্রভাব দেখা দিলে সে ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের কী হবে, তা নিয়ে নিরুত্তর কেন্দ্র। বলা হয়েছে, এ নিয়ে পরে জানানো হবে। অর্থাৎ টিকা ছাড়পত্র পেলেও চূড়ান্ত পর্যায়ে বিষয়টি ঝুলেই রয়েছে।

ফাইজ়ার এখনও চূড়ান্ত ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন না-জানালেও সূত্রের মতে, আবেদন করার আগে এ দেশের সরকারের সঙ্গে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়টির নিষ্পত্তি করে নেওয়ার পক্ষপাতী সংস্থাটি। কিন্তু সমস্যা হল, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সমাধানে পৌঁছতে পারেনি কোনও পক্ষই। ফাইজ়ার ও মডার্নার যুক্তি, বিশ্বের অন্যান্য দেশও তাদের ক্ষতিপূরণ না-দেওয়ার শর্ত মেনে নিয়েছে। তাই ভারতকেও সেই শর্ত মেনে নিতে চাপ দিচ্ছে দুই আন্তর্জাতিক সংস্থা। একই সঙ্গে দাবি রাখা হয়েছে যে, টিকা নেওয়ার পরে কারও শারীরিক সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে দায়ী করে কোনও আইনি পদক্ষেপ করা যাবে না।

ভারতের সমস্যা হল, এখন এ দেশে টিকাকরণে যে তিনটি প্রতিষেধক ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলির উৎপাদক সংস্থাকে আইনি পদক্ষেপ বা ক্ষতিপূরণের প্রশ্নে কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি। ফলে বিদেশি দুই সংস্থার দাবি মেনে নেওয়া হলে এক দিকে মনে হবে, টিকার ছাড়পত্রের প্রশ্নে দু’ধরনের নীতি নিয়ে এগোচ্ছে ভারত। আর দ্বিতীয়ত বিরোধীরা এই অভিযোগে সরব হতে পারেন যে, আন্তর্জাতিক চাপের কাছে মোদী সরকার মাথা নত করছে। যা সরকারকে নতুন করে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। বিষয়টি নিয়ে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল বলেন, ‘‘আমরা দুই সংস্থার সঙ্গেই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এটি দর কষাকষি ও আলোচনার বিষয়। আমরা একটি সমাধান সূত্র খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’

কার্যকারিতার প্রশ্নে মডার্নার সাফল্যের হার প্রায় ৯৪ শতাংশ। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় প্রথমে অনুদান হিসেবে তাদের টিকা ভারতে পাঠাবে মডার্না। পরবর্তী ধাপে সিপলার সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে এ দেশে ধারাবাহিক ভাবে টিকা পাঠানো শুরু হবে। মডার্না ও ফাইজ়ারের টিকা হল এমআরএনএ (মেসেঞ্জার আরএনএ) নির্ভর প্রতিষেধক। এই প্রতিষেধকের মাধ্যমে শরীরে প্রথমে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন তৈরি হয়। ওই প্রোটিন যে বহিরাগত, তা বোঝার সঙ্গে সঙ্গেই পরবর্তী ধাপে শরীর ওই প্রোটিনের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। ফলে ভবিষ্যতে শরীরে করোনাভাইরাসের মাধ্যমে স্পাইক প্রোটিন প্রবেশ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত সেই বহিরাগত শক্রকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। ফলে এই প্রতিষেধক প্রাপকেরা করোনা আক্রান্ত হলেও তাঁদের দেহে মৃদু উপসর্গ দেখা যায় এবং এঁরা দ্রুত সুস্থ হয়ে যান।

ভারতে এখনও করোনার বিরুদ্ধে এমআরএনএ-নির্ভর প্রতিষেধক ব্যবহার করা হয়নি। বাকি তিনটি প্রতিষেধক সংস্থা নিয়ম মেনে এ দেশে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করার পরে ব্যবহারের ছাড়পত্র পেয়েছে। কিন্তু মডার্না ও ফাইজ়ার সেই পরীক্ষাও করেনি। ফলে ওই এমআরএনএ টিকা এ দেশের জনগোষ্ঠীতে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা এখনও অজানা। ফলে সব দিক বিচার করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী কেন্দ্র। যদিও ওই দুই সংস্থারই দাবি, প্রতিষেধকের প্রভাবে হাল্কা জ্বর ও গা ব্যথা হয়ে থাকে, যা এক-দু’দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy