ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেস তথা বিরোধীরা সংসদে বলেছিলেন, এখন সংখ্যালঘুদের মধ্যে মুসলিমদের নিশানা করা হচ্ছে। এর পরে খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধদের মতো
অন্য সংখ্যালঘুদেরও বিজেপি নিশানা করবে।
বিরোধীদের হাতে কার্যত এর প্রমাণ তুলে দিয়ে সঙ্ঘ পরিবারের পত্রিকা ‘অর্গানাইজ়ার’-এ প্রকাশিত নিবন্ধে সওয়াল করা হল, গোটা দেশে ক্যাথলিক গির্জাগুলির হাতে ৭ লক্ষ হেক্টর জমি রয়েছে। সরকার বাদে আর কোনও বেসরকারি সংস্থার হাতে এত জমি নেই। ওয়াকফ বিলের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে গেরুয়া শিবির যুক্তি দিয়েছিল, সেনা ও রেলের পরে সবচেয়ে বেশি জমি ওয়াকফ বোর্ডের হাতে রয়েছে। আজ ওয়াকফ বিলে সম্মতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
বিরোধীরা সরব হতেই ‘অর্গানাইজ়ার’-এর পোর্টাল থেকে ওই নিবন্ধ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার আগেই লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী তা তুলে ধরে অভিযোগ করেছেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, ওয়াকফ বিল মুসলিমদের উপরে হামলা কিন্তু এ হল ভবিষ্যতে অন্য সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার সূচনা। খ্রিস্টানদের দিকে নজর ঘোরাতে আরএসএস বেশি সময় নেয়নি। সংবিধান হল একমাত্র ঢাল, যা দেশের মানুষকে এই হামলা থেকে রক্ষা করতে পারে। আমাদের দায়িত্ব হল সেই সংবিধানকে রক্ষা করা।’’
কংগ্রেসের তরফে সাংসদ মহম্মদ জাভেদ ও এমআইএম সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসি শুক্রবারই ওয়াকফ বিলের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। এ বার আম আদমি পার্টির বিধায়ক আমালতুল্লাহ খান ওয়াকফ বিলকে ‘অসাংবিধানিক’ তকমা দেওয়ার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন।
আজ মুসলিম সমাজের বিশিষ্টজন, প্রাক্তন সাংসদ, অবসরপ্রাপ্ত আমলারা মুসলিম সাংসদদের খোলা চিঠি লিখে সংসদে ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করার জন্য মুসলিম সাংসদদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও একজোট হয়ে মুসলিমদের কণ্ঠস্বর হয়ে সরব হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্য দিকে দলের ওয়াকফ বিল সমর্থন করা নিয়ে অসম্মতি জানিয়ে পদ ছাড়লেন উত্তরপ্রদেশের আরএলডি-র সাধারণ সচিব শাহজেব রিজভি। রিজভির দাবি, “দলের জাতীয় সভাপতি জয়ন্ত চৌধরি ওয়াকফ বিলকে সমর্থন জানিয়েছেন। এ মেনে নেওয়া যায় না। পদে আর থাকতে পারছি না।”
আগামী দিনে আরও অনেকে দল ছাড়বেন বলে দাবি তাঁর। উত্তর প্রদেশে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক আরএলডি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)