গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-য় উত্তেজনা প্রশমনে সম্মত হয়েছে দু’পক্ষই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্রের খবর, গত শুক্রবার ভারত এবং চিনা সেনার (৬ নভেম্বর) কোর কমান্ডার স্তরের অষ্টম দফার বৈঠকে প্যাংগং হ্রদ এলাকায় সমস্যার সমাধানে তিন দফা রফা-সূত্রের বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে। কিন্তু চিনা বাহিনীর কিছু ‘শর্ত’ নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে নয়াদিল্লির।
ওই সূত্র জানাচ্ছে, প্যাংগং হ্রদের উত্তরে ফিঙ্গার ৫ থেকে ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত এলাকায় ভারতীয় সেনা যাতে আগের মতো টহল দিতে পারে, বৈঠকে সেই দাবি তোলেন ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতা তথা ১৪ নম্বর কোরের নতুন কমান্ডার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জি কে মেনন। চিনের তরফে সেই দাবি পুরোপুরি মেনে নেওয়া হয়নি।
পাশাপাশি, পূর্ব লাদাখে ‘সংঘাতের নয়া ক্ষেত্র’ প্যাংগংয়ের দক্ষিণ তিরের বিভিন্ন এলাকায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র দাবি তোলেন চিনের পিপলস লিবারেরশন আর্মির প্রতিনিধিদলের নেতা মেজর জেনারেল লিউ লিন। আর সেখানেই তৈরি হয়েছে কিছু সংশয়।
সেনা সূত্রের খবর, এপ্রিল মাসের গোড়া পর্যন্ত এলএসি লাগোয়া ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত ভারতীয় বাহিনী নিয়মিত টহল দিত। কিন্তু এর পর চিনা বাহিনী এলএসি পেয়িয়ে ফিঙ্গার-৪ পর্যন্ত ঢুকে আসে। সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার পরে জুলাই মাসে কিছুটা পিছিয়ে হ্রদের তীরে ফিঙ্গার-৫-এ ঘাঁটি গাড়ে তারা। এলএসি থেকে ওই এলাকার দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় তোলা ‘ম্যাক্সার টেকনোলজিস’-এর উপগ্রহ চিত্র দেখাচ্ছে, সেখানে দেড় কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা জুড়ে চিনা ফৌজ শিবির বানিয়েছে। সেখানে রয়েছে, মেশিনগান সজ্জিত ‘হাই মবিলিটি মাল্টিপারপাস হুইল্ড ভেহিক্ল’ (হাম্ভি) এবং সারি সারি সেনা পরিবহণ যানের সমাবেশ!
অন্য দিকে, প্যাংগংয়ের দক্ষিণে ভারতীয় বাহিনীর অবস্থান অনেক মজবুত। কালা টপ, হেলমেট টপ, রেচিন লা, মুকপরী এবং রেজাংলার মতো সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ উঁচু এলাকাগুলিতে অগস্টে ভারতীয় সেনা ঘাঁটি গেড়েছে। ফলে প্যাংগংয়ের দক্ষিণে স্পাংগুর হ্রদ লাগোয়া উপত্যকায় মোতায়েন চিনা বাহিনীও চলে এসেছে ‘নাগালে’।
আরও পড়ুন: প্যাংগংয়ে শান্তি ফেরাতে ঐকমত্যে ভারত-চিন, সেনা পিছনোর যৌথ নজরদারি আকাশপথে
চাপের মুখে পড়ে চিনা ফৌজ দু’বার ওই এলাকায় ভারতীয় সেনার বাঙ্কার দখলের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে হয় তাদের। সে সময় দু’পক্ষই শূন্যে সতর্কতামূলক গুলি ছুড়েছিল। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, এই আবহে ভারতীয় বাহিনী সরে এলে উঁচু জায়গাগুলি দখল করে অবস্থানগত ভাবে সুবিধাজনক জায়গায় চলে যাবে চিন।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা রফার আলোচনা চলছে বিহারে, সোমবার শপথ নিতে পারেন নীতীশ কুমার
তা ছাড়া প্যাংগংয়ের উত্তরে ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত পিছিয়ে যেতে রাজি থাকলেও ভারতীয় সেনার পুরনো পথে টহলের বিষয়টি নিয়েও চিনা ফৌজ সরাসরি সম্মতি দেয়নি বলেই ‘খবর’। বরং সঙ্ঘাত এড়ানোর অজুহাতে ওই এলাকাকে ‘নো পেট্রোলিং জোন’ হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। পিএলএ-র শর্ত, ভারতীয় সেনাকে আপাতত ফিঙ্গার-৪ (ধন সিংহ থাপা পোস্ট)-এ থাকতে হবে। যা নিয়ে আপত্তি রয়েছে সেনার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক আধিকারিক বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘প্যাংগংয়ের পরিস্থিতি আমাদের নজরে রয়েছে। উত্তেজনা প্রশমনের প্রস্তাবগুলি আমরা বিবেচনা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy