প্রতীকী ছবি।
সতেরো বছরের পুরনো দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত চুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর স্থায়ী ‘ছিটমহল’ গড়তে সক্রিয় বেজিং! চিনের এর পর এক পদক্ষেপকে পাশাপাশি সাজিয়ে এমন সিদ্ধান্তেই এসেছে কূটনৈতিক মহল। জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে সাউথ ব্লকও সম্পূর্ণ সচেতন। নয়াদিল্লির তরফে চেষ্টা করা হচ্ছে এই চিনা উদ্যোগকে প্রতিহত করার।
নতুন বছরের গোড়ায় জাতীয় সীমান্ত আইন নিজের দেশে বলবৎ করেছে বেজিং। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, সেই আইনকে প্রকৃতপক্ষে সীমান্তবর্তী এলাকায় নিজেদের দখল বাড়ানোর একটি অস্ত্র হিসাবেই কাজে লাগাতে চায় তারা। নয়াদিল্লি অবশ্য সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এর সঙ্গে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত চুক্তি ও আলোচনার কোনও সম্পর্ক নেই. এটি বেজিংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
২০০৫ সালে ভারত এবং চিনের মধ্যে যে সীমান্ত বিষয়ক চুক্তি হয়, তার ৮ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সীমান্তে যে দেশের যে জনগোষ্ঠী রয়েছে, তাদের কোনও ভাবেই উচ্ছেদ করা অথবা তাদের জন্য কোনও সমস্যা তৈরি করা চলবে না। সম্প্রতি যে আইনটি এনেছে চিন, তাতেও বলা হয়েছে, সীমান্তে বসবাসকারী চিনা নাগরিকদের সার্বভৌমত্ব এবং তাদের ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রাখা নিশ্চিত করতে হবে। অরুণাচল, ভুটানের ভূখণ্ডে একের পর এক ছোট ছোট গ্রাম তৈরি করার তাত্ত্বিক এবং কৌশলগত ব্যাখ্যা হিসাবে চিন ভবিষ্যতে এই দু’টি বিষয়কেই সামনে আনতে চলেছে বলে খবর। সম্প্রতি অরুণাচলের ১৫ টি এলাকার নাম পরিবর্তন করেছে তারা।
চিনের দাবি, এই এলাকাগুলিতে চিনের সংখ্যালঘু আদিবাসীরা বহু বছর ধরে রয়েছেন। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিচিয়ানের দাবি, অরুণাচলের একটি বড় অংশ ঝানগাম হল তিব্বতের দক্ষিণ প্রান্তেরই ভাগ। সুপ্রাচীন কাল থেকে এটি চিনের অংশ। এখানে চিনা আদিবাসীদের বসবাস। চিনের যুক্তি, ২০০৫ সালের চুক্তি মেনেই চিনা জনগোষ্ঠীর থাকার জন্য তারা সেখানে গ্রাম তৈরি করছে, জায়গার নাম দিচ্ছে মান্দারিন ভাষায়।
সূত্রের বক্তব্য, অরুণাচল প্রদেশে উত্তর সুবনসিরি জেলায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেই চিনা জনগোষ্ঠীর কল্যাণের দিকটি তুলে ধরতে চাইছে বেজিং। সূত্রের দাবি, তাসরি চু নদীর তীরে প্রায় ১০১টি ঘর তৈরি করেছে চিনা সেনা। বক্তব্যের সমর্থনে একটি উপগ্রহ চিত্রও প্রকাশ করা হয়েছে। সূত্রের দাবি, ওই এলাকার অবস্থান প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অন্তত সাড়ে ৪ কিলোমিটার (ভারতীয় ভূখণ্ডের) ভিতরে। প্রসঙ্গত তিন মাস আগে ডোকলামের অদূরে ভুটান সীমান্তে দু’কিলোমিটারের বেশি ভিতরে এসে পাংদা নামে একটি গ্রাম তৈরির অভিযোগ উঠেছিল চিনের বিরুদ্ধে। অনুমান, চিনা জনগোষ্ঠীর ‘হিতার্থে’এই গ্রাম তৈরি ভবিষ্যতে বাড়বে বই কমবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy