Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
PM Narendra Modi and Xi Jinping

মোদী-শি ‘বৈঠক’ ঘিরে ধোঁয়াশা বহাল

সদ্যসমাপ্ত জোহানেসবার্গ ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের পরে সাংবাদিক বৈঠক করে বিদেশসচিব বিনয় কোয়াত্রা জানিয়েছিলেন, চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে।

ব্রিকস সম্মেলনের মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতায় নরেন্দ্র মোদী ও শি জিনপিং। —রয়টার্স।

ব্রিকস সম্মেলনের মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতায় নরেন্দ্র মোদী ও শি জিনপিং। —রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৫২
Share: Save:

আসন্ন জি-২০ বৈঠকের আগে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রকৃত চেহারাটা সামনে চলে এল। গলওয়ান সংঘর্ষের তিন বছর অতিক্রান্ত। এখনও কোনও ক্ষতই যে মেরামত হয়নি, তা গোপন রাখতে পারলেন না দু’দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব। গত রাত থেকে আজ পর্যন্ত চিন ও ভারত পর্যায়ক্রমে নিজ নিজ দেশের কাছে এই বার্তা দিতে ব্যস্ত রইল যে, একে অন্যের অনুরোধে সাড়া দিয়েই তারা বৈঠক করেছে। সম্মিলিত আগ্রহে নয়।

সদ্যসমাপ্ত জোহানেসবার্গ ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের পরে সাংবাদিক বৈঠক করে বিদেশসচিব বিনয় কোয়াত্রা জানিয়েছিলেন, চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে। মোদী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর উদ্বেগ শি-কে জানিয়েছেন। এর পরই চিনের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়, ভারতের আগ্রহেই শি এবং মোদীর মধ্যে কথা হয়েছে।

স্বাভাবিক ভাবেই, সাউথ ব্লক মনে করে যে, বেজিংয়ের এই বিবৃতিতে ভুল বার্তা যাবে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে। বিশেষত যখন পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা এবং তার পরই লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের অন্যতম অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং তাঁর সরকার মুখে বড় বড় কথা বললেও সীমান্তে চিনের সঙ্গে টক্করে পিছিয়ে রয়েছে। চিনা সেনা ভারতের জমি অধিকার করে যে বসে আছে, কেন্দ্র তা কার্যত মেনেই নিয়েছে। তাই আর দেরি না করে ভারত তার ‘অনাগ্রহ’ প্রকাশে সক্রিয় হয়। আজ সকালে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য চিনের অনুরোধ ঝুলে ছিল। ব্রিকস
সম্মেলন চলাকালীন দুই নেতা ‘ঘরোয়া ভাবে’ আলাপচারিতা সেরেছেন।

কূটনতিক সূত্রের মতে, এর ফলে ভারত প্রথমত বার্তা দিতে চাইল, চিন যা বলছে তা মিথ্যা। নয়াদিল্লি করেনি, আলোচনার অনুরোধটা এসেছিল বেজিংয়ের দিক থেকেই। দ্বিতীয়ত, আলোচনা হয়েছে ‘ঘরোয়া ভাবে’, আনুষ্ঠানিক নয়। তৃতীয়ত, কথা হয়েছে লাউঞ্জে, কোনও বিশেষ কক্ষে নয়। ইরান-সহ অন্য দেশগুলির নেতাদের সঙ্গে মোদীর আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। চিনের সঙ্গে কথার পরে এখনও দেওয়া হয়নি।

ফলে সব মিলিয়ে শি-এর সঙ্গে বৈঠকের গুরুত্ব আজ কিছুটা কমিয়েই দেওয়া হল বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। কিন্তু এই প্রশ্নও তুলছে কূটনৈতিক মহল, তা হলে গত কাল সাংবাদিক সম্মেলনে বিনয় কোয়াত্রা কেন উল্লেখ করেননি যে, মোদী-শি বৈঠক আনুষ্ঠানিক নয়, ঘরোয়া? সূত্রের খবর, ভারত আসলে কৌশলগত ভাবেই এটা করেছে। সীমান্ত নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি যে চিনের শীর্ষতম স্তরে মোদী জানিয়েছেন, এই বার্তা গত কাল কোয়াত্রা দিয়েছেন প্রচারমাধ্যমকে। আজ সেটাকে 'ঘরোয়া' বলে চিনের 'মিথ্যাচারের' জবাবও দেওয়া হল।

জিনপিংয়ের উদ্ধৃতি তুলে ধরে চিনের বিবৃতিতে অবশ্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে ইতিবাচক কথাই বলা হয়েছে। চিনের বিবৃতির বক্তব্য, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ভারত-চিন সম্পর্কের উন্নতিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দু’দেশের জনগণের স্বার্থে কাজ করা উচিত বলে মনে করছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিশ্ব শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার উপর জিনপিং জোর দিয়েছেন বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

India China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy