Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Manipur Violence

মণিপুরের শিবিরের কিশোর তুলিতে শান্ত জীবনের আশা

পাহাড়ি জেলার জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলি সবই ইম্ফলকেন্দ্রিক। তাই তাঁরা সেখানে যেতে পারছেন না। ক্লাস করাও বহু দিন হল বন্ধ।

manipur.

অশান্ত মণিপুর। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৬
Share: Save:

মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলায় শরণার্থী শিবিরবাসী বাচ্চাদের আঁকা ছবি নিয়ে দীপাবলি ও শিশু দিবস উপলক্ষে প্রদর্শনীর আয়োজন হয়েছিল। এত দিনের অভিজ্ঞতা থেকে ভাবা হয়েছিল, এখনও হয়ত বাচ্চাদের ছবিতে আগের মতোই আগুন, বন্দুক, হিংসার প্রতিফলন ঘটবে। কিন্তু আশার আলো জ্বালাল শিশুমনের বদল। দেখা গেল অধিকাংশ ছবিতেই শান্ত জীবনের ছোঁয়া।

অনেক ছবিতে সংঘর্ষ, যুদ্ধের বিরুদ্ধে বার্তা দিতে চেয়েছে কিশলয় আঁকিয়েরা। কারও ক্যাপশনে লেখা, ‘যুদ্ধ হল বোকা ও মানসিক বিকারগ্রস্তদের খেলা’, কেউ লিখেছে, ‘আমরা সবাই বন্ধু’। কোনও ছবির নাম ‘সহাবস্থান’। প্রদর্শনীর কয়েকটি ছবি বিক্রিও হয়ে গিয়েছে। আহেইবাম বরিশ নামে এক কিশোরের ছবিতে রয়েছে শান্ত উপত্যকায় দাঁড়ানো একটা কাঁচা বাড়ি। সে জানায়, ৪ মে তাদের গ্রামে আক্রমণ হয়। কোনও মতে পালায় তারা। ৬ মাস ধরে ঘরছাড়া বরিশের মনের ইচ্ছে, সব শান্ত হয়ে যাক। তার পর শান্ত জমিতে ফের গড়ে তুলবে তাদের সাধের ছোট্ট বাড়ি।

প্রদর্শনীর উদ্যোক্তা কেইথেলাকপাম শৈলেশ জানান, দীর্ঘদিন ধরে শিবিরে আটকে থাকা কিশোর-কিশোরীরা যাতে রং ও কাগজে নিজেদের মনের ইচ্ছে ফুটিয়ে তুলতে পারে ও জমে থাকা ক্ষোভ-হতাশা বার করে দিতে পারে— সেই উদ্দেশ্যেই ছিল এই উদ্যোগ। শিবিরবাসী বাচ্চাদের মন ভাল করতে নাচ, গান, নাটক ইত্যাদি কর্মশালার আয়োজন করেছে মাতাই সোসাইটি-সহ কিছু সংগঠন। বাচ্চাদের ট্রমা থেরাপির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

পাহাড়ি জেলার জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলি সবই ইম্ফলকেন্দ্রিক। তাই তাঁরা সেখানে যেতে পারছেন না। ক্লাস করাও বহু দিন হল বন্ধ। প্রতিবাদ মিছিল করে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়ার পরে রাজ্য সরকার জানায়, শীঘ্রই পার্বত্য জেলার ছাত্রছাত্রীদের জন্য ইম্ফলে না গিয়ে অফলাইনে ক্লাস করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সংঘর্ষে যে সব ছাত্রছাত্রীর সার্টিফিকেট, মার্কশিট পুড়ে গিয়েছে সেগুলিও ফের দেওয়া হবে। পার্বত্য জেলার ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বা স্থানান্তরিত হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও নথিপত্রের কড়াকড়ি করা হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর কলেজ ছাত্রছাত্রী পুনর্বাসন প্রকল্পের অধীনে এখনও পর্যন্ত ২৫২ জন ছাত্রছাত্রী উপত্যকার কলেজ থেকে পাহাড়ের কলেজে স্থানান্তরিত হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। পাহাড় থেকে সমতলে আসতে আবেদন জানিয়েছেন ৬৪ জন ছাত্রছাত্রী। মেডিক্যাল ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রথম বর্ষের এমবিবিএস ও বিডিএস পরীক্ষা ৩০ নভেম্বর থেকে চূড়াচাঁদপুর মেডিক্যাল কলেজে
শুরু হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Manipur Violence Children Pictures
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE