তালহা আরশাদ রেশি।
সেরা শিশু অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার এখন তার ঝুলিতে। অথচ সে খবরটুকুও হয়তো পৌঁছয়নি ছোট্ট তালহা আরশাদ রেশির কাছে। ‘হামিদ’ ছবির জন্য যৌথ ভাবে সেরা শিশু অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছে কাশ্মীরের বাসিন্দা, আট বছরের তালহা। ছবির পরিচালক এজাজ় খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কাল পুরস্কার ঘোষণার পর থেকে অনেক চেষ্টা করেও তালহা বা তার বাবার ফোনে লাইন পাননি তাঁরা। এজাজ়ের কথায়, ‘‘এত বড় খবর ওদের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি না, খুব খারাপ লাগছে।’’
বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হলেও, হেল্পলাইনে পরিবারের লোকের সঙ্গে কথা বলার কিছুটা সুযোগ হলেও কাশ্মীর এখনও স্বাভাবিক নয়। মোবাইল, ইন্টারনেট চালু হয়নি। নেই প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনার সুযোগ। কাশ্মীরি লোকসঙ্গীত শিল্পী আলি সইফুদ্দিন যেমন জানিয়েছেন, তাঁর ৭৮ বছরের ঠাকুরমার হাঁপানির অসুখ। নিয়মিত ওষুধ প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার ভোর চারটে নাগাদ শ্রীনগর বিমানবন্দর পৌঁছন আলি। সেখান থেকে বিমানে নয়াদিল্লি। দিল্লি এসে ওষুধ কেনার পর ইংল্যান্ডে থাকা বাবা-মাকে ফোন করেন আলি। তাঁর কথায়, ‘‘পাঁচ দিন পর আমার গলা শুনে মা কেঁদে ফেলেন।’’ পরের দিন শ্রীনগরে ফেরার টিকিট জোগাড় করেন আলি। আরও একটা বড় কাজ আছে তাঁর। এক ক্যানসারে আক্রান্ত পড়শি চিকিৎসার জন্য দিল্লি এসেছেন ক’দিন আগে। অবিলম্বে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করতে হবে তাঁর। শ্রীনগরে পরিবারকে সেই খবর পৌঁছনোর দায়িত্ব এখন আলিরই।
দীর্ঘ ছ’সাত দিন পর নিজের মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন বলে আজ টুইট করলেন ‘জম্মু ও কাশ্মীর পিপল্স মুভমেন্টের অন্যতম নেত্রী শেহলা রশিদ। তিনি জানান, গত ৪ অগস্ট আলোচনাসভায় যোগ দিতে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। তার পর থেকে মায়ের সঙ্গে কথা হয়নি। আজ
তাঁর মা ডিসি অফিসে গিয়ে হেল্পলাইনের মাধ্যমে তাঁকে ফোন করেন। শেহলা বলেন, ‘‘মা’কে অনেক কষ্ট করে ডিসি অফিসে আসতে হয়েছে। কাঁদছিলেন। ভেবেছিলেন, আমায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
এক মিনিট কথা বলেছি। কারণ, কথা বলার জন্য সেখানে লম্বা লাইন।’’ দিল্লির ছাত্র এহতিশাম ফজিলি আবার মায়ের কান্না দেখতে পান একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমের ভিডিয়ো লিঙ্কে। গত কাল টুইটারে তা শেয়ার করেছিলেন বাবা উমর নামে এক জন। সেখানে দেখা যায়, এক কাশ্মীরি মহিলা কাঁদছেন। বলছেন, ‘‘আমরা, কাশ্মীরিরা কী অপরাধ করেছি?’’ ভিডিয়োর নীচে সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমকে ট্যাগ করে ফজিলি লেখেন, ‘‘উনি তো আমার মা!’’ আজ ভোরে আর একটি পোস্ট করে তিনি জানান, কাশ্মীরে যাচ্ছেন। ‘নো কমিউনিকেশন জ়োনে’ ঢুকে পড়ছেন তিনি। আপাতত সেটিই তাঁর শেষ পোস্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy