গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অযোধ্যার রামমন্দিরে বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিন বিলি করা হয়েছিল তিরুপতির সেই প্রসাদী লাড্ডু! গত ২২ জানুয়ারি হয়েছিল সেই প্রাণপ্রতিষ্ঠা। ওই দিনই তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদ অযোধ্যার মন্দিরে বিলি করা হয়েছিল বলে জানালেন প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস। তিরুপতি মন্দিরে প্রসাদ হিসাবে যে লাড্ডু বিলি করা হয়, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। অভিযোগ, অন্ধ্রের তিরুপতি মন্দিরের ভেঙ্কটেশ্বর স্বামীর মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডু যে ঘি দিয়ে তৈরি হয়েছে, তাতে প্রাণিজ চর্বি ব্যবহার করা হয়েছে। এই নিয়ে তদন্তের দাবিও উঠেছে।
অযোধ্যার মন্দিরে রামলালার বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিন ভক্তদের মধ্যে ওই লাড্ডু বিলি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্র। তাঁর কথায়, ‘‘আমি জানি না কত লাড্ডু এসেছিল। ট্রাস্ট জানবে। যত লাড্ডু এসেছিল, সবই ভক্তদের মধ্যে বিলি করা হয়েছিল।’’ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘‘প্রসাদে প্রাণিজ চর্বি মেশানো হলে তা ক্ষমার অযোগ্য। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।’’
ভেঙ্কটেশ মন্দিরের পরিচালনা করে তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম (টিটিডি)। সূত্রের খবর, অযোধ্যার মন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের জন্য প্রসাদ হিসাবে প্রায় এক লক্ষ লাড্ডু পাঠিয়েছিল টিটিডি। ওই দিন আচার-অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় আট হাজার বিশিষ্টজন সাক্ষী ছিলেন বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠার। যদিও রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের দাবি, রামলালার বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার দিন ভক্তদের প্রসাদ হিসাবে শুধু এলাচের দানা দেওয়া হয়েছিল। ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই বলেন, ‘‘ভক্তদের শুধুই এলাচের দানা বিলি করা হয়েছিল। আমার এই জীবদ্দশায় মাত্র এক বার, ১৯৮১ সালে তিরুপতি গিয়েছিলাম। তাই এই বিতর্ক নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না।’’
তিরুপতির মন্দিরে প্রসাদের লাড্ডু নিয়ে বিতর্কের মাঝে অন্য মন্দিরের প্রসাদ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অযোধ্যার হনুমানগঢ়ী মন্দিরের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের লাড্ডুতে শুধুই দেশি ঘি ব্যবহার করা হয়। সঙ্কট মোচন সেনার প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘আমরা ভাল সংস্থার ঘি ব্যবহার করি। আমাদের সকল ভাড়াটে দোকানিরা ওই একই ঘি ব্যবহার করেন। সময়ে সময়ে ঘিয়ের শুদ্ধতা পরীক্ষা করা হয়। কোনও ভক্ত এই নিয়ে কোনও অভিযোগ করলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়।’’
এই বিতর্ক শুরু হয় অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডুর অভিযোগের ভিত্তিতে। তিনি অভিযোগ করেন, পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডির সরকারের আমলে তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদের মান পড়ে গিয়েছিল। লাড্ডু তৈরির জন্য কম দামে ঘি কেনা হয়েছিল। সেই ঘিতে প্রাণিজ চর্বি মেশানো হয়। নিজের অভিযোগের সপক্ষে গুজরাতের একটি গবেষণাগারের রিপোর্টও পেশ করেছেন তিনি। সেখানে বলা হয়েছে, তিরুপতির লাড্ডুতে যে ঘি ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে মাছের তেল, প্রাণিজ চর্বি রয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন এই অভিযোগ অস্বীকার করেননি। এই নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে অন্ধ্রের প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy