ভূপেশ বঘেল।
জামাইয়ের পরিবারের ঋণগ্রস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল অধিগ্রহণে নেমে ঘোর বিতর্কে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল। বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা আক্রমণ শানাচ্ছেন। আড়াই বছরের মাথায় বঘেলের মন্ত্রিসভাতেও বিরোধ বেধে গিয়েছে। আপাত ভাবে অন্য প্রসঙ্গে হলেও রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী টি এস সিংহদেও আজ বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন। রাজস্থান-পঞ্জাবে কংগ্রসের সংগঠনে অশান্তির মধ্যেও ছত্তীসগঢ় ছিল শান্ত। অশান্তির আঁচ সেখানেও! এর মধ্যে কুর্সির লড়াই দেখছেন অনেকে।
ছত্তীসগঢ়ে বঘেলের পাশাপাশি সিংহদেও-ও ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার। সিংহদেওয়ের দাবি, কথা ছিল আড়াই বছরের মাথায় বঘেলকে সরিয়ে আর কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়ে তিনি নেতৃত্বকে সে কথা মনেও করিয়ে দিয়েছেন। ঠিক আড়াই বছরের মাথায়, স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসায় চাপে বঘেল।
রাজ্য স্তরে গোপন না-থাকলেও, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কখনওই এমন আড়াই-বছরি সূত্রের কথা জানাননি প্রকাশ্যে। এমন প্রতিশ্রুতির কথা জানেন না বলে দাবি বঘেলেরও। তবে নিজের সরকারের আড়াই বছরের সাফল্য প্রচারে পাতা জোড়া বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন তিনি। দলের অন্দরে নিশানা করা হচ্ছে সিংহদেওকে। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ এনেছেন কংগ্রেসেরই এক বিধায়ক। ক্ষোভে সিংহদেও আজ বিধানসভা থেকে বেরিয়ে ঘোষণা করেন, সরকার বিবৃতি না-দেওয়া পর্যন্ত আর বিধানসভাতেই ঢুকবেন না।
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ে বিজেপিকে হটিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে তিন রাজ্যেই মুখ্যমন্ত্রী পদের একাধিক দাবিদারের মধ্যে তিন প্রবীণকে বেছেছিলেন রাহুল গাঁধী। অশোক গহলৌত, কমল নাথ ও বঘেল। গত মার্চ-এপ্রিলে পাঁচ রাজ্যের ভোটে কংগ্রেসের খারাপ ফলের পরে রাহুলকে তথাকথিত ভারসাম্যের রাজনীতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। মধ্যপ্রদেশে সরকার খুইয়েছে কংগ্রেস। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বিজেপিতে গিয়ে এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজস্থানে সচিন পাইলটকে এআইসিসি-তে এনে গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবতে হচ্ছে। পঞ্জাবে নভজ্যোত সিংহ সিধুর হাতে তুলে দিতে হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব। ছত্তীসগঢ়ের ক্ষেত্রে রাহুল কী সিদ্ধান্ত নেন, সে দিকেই নজর রাজনীতির লোকজনের।
বঘেলের টুইট, “মেডিক্যাল কলেজ অধিগ্রহণে বিল পেশ হবে বিধানসভায়। ছাত্র-স্বার্থে এই অধিগ্রহণ।” গোপন স্বার্থ ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উড়িয়ে এ সংক্রান্ত খবরকে ‘কল্পনার পরাকাষ্ঠা’ আখ্যা দেন তিনি। তিন বারের কংগ্রেস সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চন্দুলাল চন্দ্রাকরের মৃত্যুর দু’বছর পরে ১৯৯৭ সালে দুর্গে তাঁর নামে হাসপাতালটি চালু হয়েছিল। বঘেল-কন্যা দিব্যার স্বামী ক্ষীতীজ চন্দ্রাকর মেডিক্যাল কলেজটির ডিরেক্টর মঙ্গলপ্রসাদ চন্দ্রাকরের ভাইপো। ২০১৭-তে মেডিক্যাল কলেজটির স্বীকৃতি বাতিল হয়ে গিয়েছে। ২০১৮-তে সেটির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া। ১২৫
কোটি টাকা দেনায় ডুবে আছে কলেজটি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়ালের বক্তব্য, “কংগ্রেসের দুর্নীতির ইতিহাস বিশাল। জনতার টাকায় ঋণগ্রস্ত কলেজ কেনা পরিষ্কার জালিয়াতি।” জ্যোতিরাদিত্য লিখেছেন, “জামাইয়ের জন্য সরকারি টাকা খরচ, তা-ও এমন মেডিক্যাল কলেজের নামে, যার বিরুদ্ধে ধোঁকাবাজির অভিযোগ এনেছে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া! কে বিক্রি হয় (বিকাও) আর কে টেকসই (টিকাও), তার পরিভাষা এখন স্পষ্ট।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy