প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
গহীন জঙ্গল থেকে ঘেরাটোপের মধ্যে ফেরানো হতে পারে আফ্রিকা থেকে আনানো মধ্য প্রদেশের কুনো অভয়ারণ্যের চিতাগুলিকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন উপলক্ষে আনা হয়েছিল এদের। কিন্তু গত কয়েক মাসে পর পর পাঁচটি চিতার মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন কুনো কর্তৃপক্ষ। বেশ কিছু বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ চিতার মৃত্যুর জন্য নজরদারি কলারকে দায়ী করায়, তাঁরা দেখতে চান, সত্যিই জিপিএস কলার থেকে চিতাগুলির শরীরে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে কি না।
ভারতের ‘প্রজেক্ট চিতা’র সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে যুক্ত বেশ কিছু বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞই বলেছিলেন, চিতাদের উপর নজরদারি করার জিপিএস কলার থেকে তাদের শরীরে বিষাক্ত ঘা হওয়ার কথা। তাঁরা এ-ও বলেছিলেন কুনোর অতি আর্দ্র আবহাওয়ায় ওই ঘা সারতেও দেরি হচ্ছে। ফলে সেগুলি আরও বিষিয়ে গিয়ে তা থেকে সেপ্টিসেমিয়া হয়ে মৃত্যু হচ্ছে চিতাগুলির। রবিবার যদিও এই তত্ত্বের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন দেশের জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, চিতাদের মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ নিয়ে যা যা বলা হচ্ছে তা সবই সম্ভাবনার কথা। এর কোনও বাস্তব বা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। পুরোটাই পরীক্ষা করে দেখতে হবে সত্যি কি না। পরে চিতা প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকেই কুনোর চিতাদের পরীক্ষা করার জন্য ঘেরাটোপের মধ্যে ফেরানোর কথা বলা হয়। এক আধিকারিকই জানান, রেডিও কলার পরিয়ে গহীন অরণ্যে ছেড়ে দেওয়া ওই চিতাগুলির উপর কাছ থেকে নজরদারি করা প্রয়োজন। প্রায় ১০টি এমন চিতাকে ফেরানো হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
চিতাদের মৃত্যুর কারণ জিপিএস কলারই কি না তা জানতে প্রথমেই চিতাগুলির গলা থেকে কলার খুলতে হবে কুনো কর্তৃপক্ষকে। সে ক্ষেত্রে কলার ছাড়া আর তাদের অরণ্যে স্বাধীন ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেওয়া যাবে না বলেই মত বন বিশেষজ্ঞদের। ফলে বাধ্য হয়েই তাদের ছোট ঘেরাটোপে কিছুদিনের জন্য বন্দি থাকতে হতে পারে। এমনকি, চিতাগুলির উপর নজর রাখতে ড্রোনেরও ব্যবহার করা হতে পারে বলে কুনো অভয়ারণ্য সূত্রে খবর। মঙ্গলবারই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বন্যপ্রাণী বিশারদ আসতে পারেন কুনো জাতীয় অভয়ারণ্যে। তিনি চিতাদের সংক্রমণ এবং তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য জানাবে কুনোর বিশেষজ্ঞ দলকে। অন্য দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার বন্যপ্রাণী বিশারদেরা ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছেন চিতা মৃত্যুর তদন্তের বিষয়ে সমস্ত বিশদ যেন তাঁদেরও জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর ‘প্রজেক্ট চিতা’র অধীনে মধ্যপ্রদেশের কুনো অভয়ারণ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল মোট ২০টি আফ্রিকার চিতা। এর মধ্যে কিছু এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। কিছু নামিবিয়া থেকে। কিন্তু গত কয়েক মাসে এর মধ্যে পাঁচটি চিতা মারা যায়। প্রাথমিক ভাবে ভারতের জল হাওয়ায় চিতাগুলির মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন বন কর্তৃপক্ষ। যদিও বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞদের একাংশ সম্প্রতি কুনোর চিতাদের মৃত্যুর জন্য কলার থেকে হওয়া সংক্রমণকে দায়ী করেন। তাঁরা বলেছেন, নামিবিয়া থেকে আনানো একটি পুরুষ চিতার গলায় এবং ঘাড়ে সেই সংক্রমণের প্রমাণও পেয়েছেন তাঁরা। একে কুনোর আর্দ্র আবহাওয়া তার উপর গায়ে বসে থাকা ওই কলারে ঘা হয়ে যায় চিতাগুলির। তাতে জঙ্গলের পোকা-মাকড়, মাছি বসে আরও সংক্রমণ বাড়িয়ে তোলে। তা থেকেই সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy