Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Ram Mandir

সোমপুরার ছোঁয়া রয়েছে গুজরাত থেকে কলকাতায়

বংশানুক্রমে আমদাবাদের বাসিন্দা নিখিলের দাবি, অন্তত পনেরো-ষোলো প্রজন্ম ধরে মন্দিরের নকশা করে আসছে তাঁদের পরিবার। দেশে-বিদেশে এমন মন্দিরের সংখ্যা প্রায় দু’শো।

অযোধ্যায় ভূমিপুজোর আগের দিন সাজছে হনুমানগড়ি মন্দির। পিটিআই

অযোধ্যায় ভূমিপুজোর আগের দিন সাজছে হনুমানগড়ি মন্দির। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৩:২২
Share: Save:

নিরাপত্তার কড়াকড়িতে বিতর্কিত জমিতে দৈর্ঘ্য মাপার ফিতেও সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জো ছিল না। তাই তিন দশক আগে রামমন্দিরের নকশা ঠিক করতে পায়ের মাপই ভরসা ছিল চন্দ্রকান্ত সোমপুরার! আটাত্তরে পা রাখা চন্দ্রকান্ত এই করোনা-কালে শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না ঠিকই। কিন্তু তাঁর দুই ছেলে আশিস ও নিখিলের দাবি, বুধবার সারা দিন তাঁদের পুরো পরিবারের মন পড়ে থাকবে অযোধ্যাতেই।

বংশানুক্রমে আমদাবাদের বাসিন্দা নিখিলের দাবি, অন্তত পনেরো-ষোলো প্রজন্ম ধরে মন্দিরের নকশা করে আসছে তাঁদের পরিবার। দেশে-বিদেশে এমন মন্দিরের সংখ্যা প্রায় দু’শো। যেমন, গুজরাতের সোমনাথ মন্দির তৈরি তাঁর বাবার ঠাকুর্দা প্রভাকর সোমপুরার হাতে। এ ছাড়াও সোমপুরা পরিবারের নকশা করা মন্দিরের তালিকায় রয়েছে মুম্বইয়ের স্বামীনারায়ণ মন্দির, এমনকি কলকাতার বিড়লা মন্দিরও।

চন্দ্রকান্তের দাবি, দেশে-বিদেশে শিল্পপতি বিড়লাদের বিভিন্ন মন্দির তৈরির সূত্রেই তাঁর পরিচয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অশোক সিঙ্ঘলের সঙ্গে। সেই সূত্রেই রামমন্দিরের প্রথম নকশা। আশিসের দাবি, সম্প্রতি সামনে আসা নতুন নকশায় মন্দির আড়ে-বহরে বাড়ছে ঠিকই। কিন্তু তা স্রেফ মূল নকশার সম্প্রসারণ। তার বদল নয় কোনও ভাবেই। তাঁর কথায়, “প্রথম যখন নকশা তৈরি হয়েছিল, তার পরে তিন দশক পেরিয়েছে। উন্নত হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই মন্দিরের উপরে যে পরিমাণ প্রচারের আলো, তাতে এখানে ভক্ত সমাগমও হবে প্রচুর। সেই কথা মাথায় রেখেই মন্দিরের নকশা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত।” অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির-সহ দেশের অন্তত ১০টি মন্দিরে ঘুরেছেন তাঁরা। আঁচ করার চেষ্টা করেছেন, রোজ মন্দিরে কত জন এলে মাপ কেমন হওয়া উচিত। রামমন্দিরের নতুন নকশা সেই বুঝেই।

আশিসের মতে, রামমন্দির তৈরির আসল চ্যালেঞ্জ তার আকার বৃদ্ধি নয়। বরং তা হল, হিন্দু ধর্মের যাবতীয় নিয়ম, বাস্তুবিধি ইত্যাদি মেনে মন্দির তৈরি করা। যেমন, রামলালার মূর্তি এমন উচ্চতায় থাকতে হবে, যাতে সিঁড়ি দিয়ে উঠে মন্দিরে ঢুকলেই তা ভক্তের নজরে আসে। মন্দিরের প্রথম ভাগ হবে বেশি খোলামেলা। কিন্তু যত তা গর্ভগৃহের দিকে এগোবে, তত বন্ধ হয়ে আসবে আশপাশ। যাতে চোখ মূর্তিতেই থাকে, মন নিবদ্ধ হয় ঈশ্বরে। গর্ভগৃহে সাধারণত বাইরের আলো যে কারণে তেমন ঢোকে না। আশিস জানাচ্ছেন, অধিকাংশ মন্দির তৈরির সময়েই এমন নিয়ম মাথায় রাখতে হয়। রামমন্দিরের ক্ষেত্রে আরও বেশি।

এক সংবাদমাধ্যমে চন্দ্রকান্ত আগে জানিয়েছিলেন, এখন পর্যাপ্ত জায়গা মেলায় মন্দির তৈরি কিছুটা সহজ হবে। প্রাথমিক নকশা তৈরির কাজ ছিল অনেক বেশি ঝক্কির। কারণ প্রথমত, জায়গার কমতি ছিল। আর দ্বিতীয়ত, পরিষদ স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে, রামলালার মূর্তি বসতে হবে তাঁর জন্মস্থলেই। বাবরি মসজিদের মূল গম্বুজের ঠিক নীচের জায়গায় ৬ ফুট বাই ৩ ফুটের খাটিয়ায় রামের জন্ম বলে তাঁদের বিশ্বাস। ফলে মন্দিরের নকশা করতে হয়েছে সেই অনুযায়ী।

বয়সের কারণে চন্দ্রকান্ত বাড়ি থেকে তদারকি করলেও নকশা মেনে কাজ করাবেন আশিস আর নিখিল। কিন্তু তাঁরাও স্পষ্ট জানাচ্ছেন, এর সঙ্গে বহু মানুষের বহু বছরের বিশ্বাস আর স্বপ্ন জড়িত। তাই অযোধ্যায় এত বছর ধরে যে পাথরের কাজ হয়ে আছে, সাফসুতরো করে কাজে লাগানো হবে তার প্রত্যেকটিকে। ব্যবহৃত হবে ‘শ্রীরাম’ লেখা প্রতিটি ইট। মন্দিরের নকশা বাহারি হলেও তার ভিত যে বিশ্বাস, তা ভুলছেন না তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Ram Mandir Ayodhya Chandrakant Sompura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy