— প্রতীকী চিত্র।
কানাডায় লুকিয়ে রয়েছেন খলিস্তানি জঙ্গি গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুন কিংবা গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রার। বিদেশ লুকিয়ে থাকা ভারতে জন্মগ্রহণকারী জঙ্গিরা ধরা পড়লে বা প্রত্যর্পণের ফলে ভারতে এলেই সরাসরি শাস্তির মুখে পড়তে হবে। সৌজন্যে গত জুলাই মাস থেকে চালু হওয়া ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস)। অতীতের আইনানুযায়ী অভিযুক্তের প্রত্যর্পণ বা গ্রেফতারির পরেই বিচার শুরু হত। কিন্তু নতুন আইনে বিদেশে বা ভিন্ রাজ্যে লুকিয়ে থাকা অভিযুক্তদের গ্রেফতারি বা প্রত্যর্পণ না হলেও মামলা শুরু করে শুনানির সংস্থান করা হয়েছে।
ভারতীয় শাসনব্যবস্থায় ব্রিটিশ প্রভাব মুছে ফেলতে ভারতীয় দণ্ডবিধি বা আইপিসির পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ফৌজদারি কার্যবিধি বা সিআরপিসি-র পরিবর্তে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, এভিডেন্স অ্যাক্টের জায়গায় ভারতীয় সাক্ষ্য আইন সংসদে পাশ হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের সব রাজ্যে ওই তিন আইন সম্পূর্ণ ভাবে চালু করার লক্ষ্য নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
নতুন আইনের রূপায়ণ অনেকাংশেই ডিজিটাল মাধ্যম নির্ভর। যাতে থানা, অপধারী চিহ্নিতকরণ, হাসপাতাল, ফরেন্সিক শাখা, জেল ও আদালতের মধ্যে ডিজিটাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। দেশের প্রথম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে চণ্ডীগড় প্রশাসন প্রথম সবক’টি শাখার মধ্যে ওই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। চলতি মাসেই ওই ডিজিটাল ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চণ্ডীগড়ের ডিজি এস এস যাদব বলেন, ‘‘নতুন আইনে একাধিক পরিবর্তন হয়েছে। যার একটি হল অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু করে শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা। বর্তমানে প্রায় ১৫০০-র কাছাকাছি অভিযুক্ত পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমাদের লক্ষ্যই হল, যত বেশি সম্ভব অভিযুক্তের শুনানি শেষ করা।’’
কৃত্রিম মেধা (এআই)-র মাধ্যমে ‘ক্রিমিনাল ডেটা নেটওয়ার্ক সিস্টেম’-কে ব্যবহার করে ডিজিটাল মাধ্যমে অপরাধীদের চিহ্নিত করা শুরু করেছে চণ্ডীগড় পুলিশ। এর ফলে কোনও অভিযুক্তের ছবি পেলে চেহারা চিহ্নিতকরণ পদ্ধতিতে দেখে নেওয়া যাচ্ছে, ওই ব্যক্তির ছবি অপরাধী-তথ্যভান্ডারে রয়েছে কি না। অপরাধস্থলে আঙুলের ছাপ পাওয়া গেলে তাও মিলিয়ে দেখে নেওয়া হচ্ছে ‘ন্যাশনাল অটোমেটেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম’-এ। চণ্ডীগড়ের সিনিয়র পুলিশ সুপার কানওয়ারদীপ কউর বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই ধৃত বা অপরাধীর আঙুলের ছাপ, ছবি ডিজিটাল তথ্যভান্ডারে রাখা হয়। অপরাধস্থলে পাওয়া আঙুলের ছাপ মিলিয়ে নিলেই বোঝা যায় ওই ব্যক্তির অপরাধের রেকর্ড রয়েছে কি না। ছাপ বা ছবি মিলে গেলেই অপরাধীকে ধরাসময়ের অপেক্ষা।’’
কিন্তু অপরাধী যদি প্রথম বার অপরাধ করে, তথ্যভান্ডারে সেই ব্যক্তির তথ্য থাকে না। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের একাংশের দাবি, সে ক্ষেত্রে ওই প্রাপ্ত ছাপ আধারের তথ্যভাণ্ডারে খুঁজে দেখার অধিকার দেওয়া হোক পুলিশকে। সে ক্ষেত্রে অপরাধীর চিহ্নিতকরণ আরও দ্রুত হবে। যদিও এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। পরিসংখ্যান বলছে, গত জুলাই মাস থেকে নতুন আইনে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২০০ অভিযোগ দায়ের হয়েছে চণ্ডীগড়ের বিভিন্ন থানায়। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ইতিমধ্যেই ২৪৫টি অভিযোগের চার্জশিট জমা পড়ে গিয়েছে। চারটি মামলায় রায়ও বেরিয়ে গিয়েছে।
কউরের দাবি, ‘‘এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে অপরাধের ধরন বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, কোন এলাকায় ছিনতাই, কোথায় ডাকাতি, কোথায় ট্র্যাফিক সিগন্যাল ভাঙারপ্রবণতা বেশি। সেই ভিত্তিতে পদক্ষেপ করে অপরাধ আগেই রুখে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy