চম্পই সোরেন। — ফাইল চিত্র।
সামনেই ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন। দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। তার আগে এ বার কি ঘর ভাঙতে চলেছে ঝাড়খণ্ডের শাসকদল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম)? গত কয়েক দিন ধরে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএমের অন্যতম নেতা চম্পই সোরেনের সাম্প্রতিক গতিবিধিতে সেই জল্পনাই শুরু হয়েছে। রবিবার তা আরও দানা বাঁধল। জেএমএমের ছয় বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন চম্পই। তবে রবিবারই কি তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন? প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে।
গত ৩১ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডে জমি দুর্নীতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় হেমন্তকে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গ্রেফতারির আগে মুখ্যমন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। হেমন্তের অনুপস্থিতিতে চম্পইকে মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত করেন জেএমএম নেতৃত্ব। পাঁচ মাস রাঁচীর বিরসা মুন্ডা জেলে বন্দি থাকার পরে ২৮ জুন ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের নির্দেশে মুক্তি পান হেমন্ত। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আবারও মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তিনি। পদ ছাড়তে হয় চম্পইকে। তবে রেখে দেওয়া হয় মন্ত্রিসভায়।
শোনা যাচ্ছিল, মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারানোর পর থেকেই দলের মধ্যেও নাকি কোণঠাসা চম্পই। হেমন্তsর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সিদ্ধান্তকে ভাল ভাবে নেননি, এমন খবরও ছড়ায়। শুরু হয় দলবদলের জল্পনাও। শনিবার চম্পই বলেন, ‘‘আমি জানি না কী নিয়ে জল্পনা চলছে। তাই কোনটা সত্যি, আর কোনটা মিথ্যে বলতে পারব না। যেখানে আছি সেখানেই থাকব।’’
রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, বিজেপি যোগের জল্পনার অবসান ঘটিয়েছেন চম্পই। এমনকি, অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মাও দাবি করেন, বিজেপির কেউই চম্পইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তবে রবিবার ছয় বিধায়ককে নিয়ে চম্পইয়ের দিল্লিযাত্রা নতুন করে জল্পনার জন্ম দিয়েছে। বিজেপির এক সূত্রের দাবি, ঝাড়খণ্ডের বিধায়ক লবিন হেমব্রমের মাধ্যমেই নাকি চম্পই পদ্মশিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সম্ভবত রবিবারই বিজেপিতে যোগ দেবেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
সিংভূম তথা ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে ‘টাইগার’ নামে পরিচিত চম্পই। রাজনীতিতে তাঁর উত্থান বেশ চমকপ্রদ। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করার পরেই লেখাপড়ায় ইতি টেনে জেএমএম প্রতিষ্ঠাতা শিবু সোরেনের ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রাজনীতিতে। অবিভক্ত বিহার ভেঙে পৃথক আদিবাসী ভূম ঝাড়খণ্ড গড়ার আন্দোলনে যোগ দেন চম্পই। গোটা সিংভূম অঞ্চলের অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা তিনি। ১৯৯১ সালে সেরাইকেলা আসনে উপনির্বাচনে জিতে প্রথম বার বিধায়ক হন চম্পই। শিবুর দল এনডিএ-তে থাকাকালীন বিজেপি নেতা অর্জুন মুন্ডার নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারে মন্ত্রীও হয়েছিলেন চম্পই। পরবর্তী সময়ে হেমন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী হলে আবার ক্যাবিনেটে ঠাঁই পান তিনি। সোরেনের মন্ত্রিসভায় খাদ্য এবং পরিবহণ মন্ত্রী ছিলেন চম্পই।
২০১৯ সালে ৮১ আসন বিশিষ্ট ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় ৩০টি আসনে জয়ী হয় জেএমএম। বিজেপি ২৫ ও কংগ্রেসের দখলে যায় ১৬টি আসন। অন্যেরা জয়ী হয় ১০টি আসনে। কংগ্রেসের সমর্থনে জোট সরকার গড়েছিল শিবু সোরেনের পুত্র হেমন্তর নেতৃত্বাধীন জেএমএম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy