প্রতীকী ছবি।
জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তি দিয়ে পেগাসাস-কাণ্ডের তথ্য গোপন করতে চেয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু সোমবার সেই যুক্তি সরাসরি খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা এ নিয়ে কার্যত ভর্ৎসনা করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে।
পেগাসাস নিয়ে সোমবার শীর্ষ আদালতে সুর বদলায় কেন্দ্র। এত দিন পর্যন্ত মোদী সরকার জানিয়ে এসেছে, ইজরায়েল থেকে ফোনে আড়ি পাতার স্পাইওয়্যার কেনার বিষয়ে কোনও তথ্য গোপন করা হবে না। কিন্তু সোমবার শীর্ষ আদালতে শুনানির সময় কেন্দ্রের কৌঁসুলী তুষার বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টির সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত। আমরা সন্ত্রাসবাদীদের জানাতে পারি না, কোন সফ্টঅয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কোনও জনসমক্ষে কোনও বিবৃতি দেওয়া যাবে না।’’
পেগাসাস-কাণ্ডে বিরোধীদের প্রধান দাবি ছিল, মোদী সরকার কি ইজরায়েলেয় এনএসও সংস্থার থেকে ফোনে আড়ি পাতার পেগাসাস স্পাইওয়্যার কিনেছে কি না, তা প্রকাশ্যে জানাতে হবে। কেন্দ্র পেগাসাস নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিলেও এ প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। এর পর পেগাসাস-কাণ্ডের তদন্তের দাবিতে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার জেরে সুপ্রিম কোর্টে তিন পৃষ্ঠার হলফনামা দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু ইজরায়েল থেকে স্পাইওয়্যার কেনা হয়েছিল কি না, তা খোলসা করা হয়নি সেই হফলনামায়।
অগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে প্রধান বিচারপতি রমণা কেন্দ্রের ‘দায় এড়ানো’ নিয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষারের কাছে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। সুনির্দিষ্ট হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য এক মাস সময়ও দিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার পেগাসার নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন এড়াতে ‘জাতীয় নিরাপত্তার’ যুক্তি সামলে আনেন তুষার। যদিও প্রধান বিচারপতি সেই যুক্তি পত্রপাঠ খারিজ করে দেন। তুষারকে তিনি বলেন, ‘‘আগের শুনানিতে আমরা হলফনামা চেয়েছিলাম আপনার কাছে। সে জন্য সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আপনি সেই একই কাজ করছেন। এ ক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তি খাড়া করা যাবে না। আমাদের নাগরিকরা বলছেন, তাঁদের ফোনে আড়া পাতা হয়েছে।’’
শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি সরাসরি সলিসিটর জেনারেলকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনার কি আর কোনও কথা বলা আছে?’’ জবাবে তুষার বলেন, ‘‘না’’। এর পরে শুনানি-পর্ব শেষ করে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘দেখা যাক, এ নিয়ে আমরা কী নির্দেশ দিতে পারি।’’ আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যে পেগাসাস মামলায় অন্তর্বর্তী আদেশ ঘোষণা করা হবে বলে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাহুল গাঁধী, অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংবাদিক, সমাজকর্মী থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, আইনজীবী, নির্বাচন কমিশনার, সিবিআই-কর্তা সহ একাধিক ব্যক্তির মোবাইল হ্যাক করে আড়ি পাতার অভিযোগ রয়েছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতে ৩০০র বেশি ফোনে ইজরায়েল থেকে কেনা স্পাইওয়্যার আড়ি পাতা হয়েছিল বলে ‘পেগাসাস প্রোজেক্ট’ নামে একটি তদন্ত রিপোর্টের দাবি। ভারত-সহ ১৬টি দেশের সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা মিলে এই তদন্ত চালিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy