Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ED Probe on Digital Arrest

মাসে ২১৪ কোটির জালিয়াতি! হংকং-তাইল্যান্ড থেকে নিয়ন্ত্রণ, ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর তদন্তে ইডি

অনলাইন প্রতারণা চক্রের মাথারা বসে রয়েছে বিদেশে। বেশিরভাগই তাইল্যান্ড, মায়ানমার-সহ একাধিক দেশ থেকে থেকে পরিচালিত হয় বলে দাবি কেন্দ্রের। তাদের সাহায্যের জন্য ভারতেও বেশ কিছু লোক রয়েছে।

অনলাইন প্রতারণার মামলায় ভারতেও একাধিক ভুয়ো সংস্থার দিকে নজর ইডির।

অনলাইন প্রতারণার মামলায় ভারতেও একাধিক ভুয়ো সংস্থার দিকে নজর ইডির। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:২৯
Share: Save:

সাইবার প্রতারণার নতুন ফাঁদ ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। সরকারি হিসাবে গত দশ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) সাধারণ মানুষকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর ফাঁদে ফেলে ২ হাজার ১৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকেরা। প্রতারণার শিকার হয়ে প্রতি মাসে গড়ে ২১৪ কোটি টাকা করে খুইয়েছেন সাধারণ মানুষ। এই প্রতারণা চক্রের মাথারা মূলত বসে রয়েছে কম্বোডিয়া, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, লাওস এবং তাইল্যান্ডে। সেখান থেকেই জালিয়াতি চক্র পরিচালনা করছে তারা। তবে দেশীয় একাধিক ভুয়ো সংস্থাও এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে সন্দেহ ইডির। এমন বেশ কিছু সংস্থার উপর নজর রয়েছে তদন্তকারীদের।

অনলাইনে আর্থিক প্রতারণা সংক্রান্ত একটি মামলায় সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর এক নিম্ন আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অনলাইনে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের টোপ দিয়ে এবং ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলছিল প্রতারকেরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই ধরনের অভিযোগ মেলে। পৃথক পৃথক থানায় এফআইআর-ও দায়ের হয়েছিল। ওই সব এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে ইডি।

ইডির তদন্তে উঠে এসেছে, হংকং এবং তাইল্যান্ড থেকে প্রতারণা চক্রের মাথারা এই জালিয়াতি চালাচ্ছে। ভারতেও তাদের দলের কিছু লোকজন রয়েছে। ওই ভারতীয় প্রতারকদের সাহায্য নিয়েই চলছিল প্রতারণার কারবার। সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে প্রতারিত করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত। সেই টাকা জমা হত বিদেশ এবং দেশের বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থার নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫৯ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছেন তদন্তকারীরা। যার পুরোটাই অপরাধমূলক কাজকর্ম থেকে সঞ্চিত হয়েছে বলে সন্দেহ ইডির আধিকারিকদের।

এই মামলায় ইতিমধ্যে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন আট জন। প্রত্যেকেই বর্তমানে জেলে রয়েছেন। অপরাধের টাকা জমানোয় ব্যবহৃত ভুয়ো সংস্থার সঙ্গে অভিযুক্তদের যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। এই ভুয়ো সংস্থাগুলির বেশ কিছু এ দেশেও গজিয়ে উঠেছিল বলে জানিয়েছে ইডি। তামিলনাড়ু এবং কর্নাটক-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে এই ধরনের ভুয়ো সংস্থার দিকে নজর রয়েছে তদন্তকারীদের। যেগুলির অস্তিত্ব খাতায় কলমে থাকলেও, বাস্তবে নেই। ওই ভুয়ো সংস্থাগুলির নামে জাল নথিপত্র বার করা হয়েছিল।

এই ভুয়ো সংস্থাগুলিও আবার ‘ভাড়ায়’ নেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছিল বলে জানা গিয়েছে। অনলাইন প্রতারণার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়েই দেখা যায়, প্রতারকেরা নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে না। কারণ, এতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই তৃতীয় কোনও ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়। এগুলিকে অনেকটা ভাড়ায় নেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বলা যায়। ইডির সন্দেহ, প্রতারণার টাকা প্রাথমিক ভাবে এই অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা হত। পরে তা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বদল করে নেওয়া হত। ধৃতদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু সন্দেহজনক নথি, ব্যাঙ্কের চেক বই উদ্ধার করেছে ইডি। যা থেকে তদন্তকারীদের সন্দেহ, এগুলি ভুয়ো সংস্থায় ব্যবহার হতে পারে। ইডি ইতিমধ্যে ‘সাইবারফরেন্স টেকনোলজি প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত ২ কোটি ৮১ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber Crime Cyber fraud
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE