Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
West Bengal

রাজ্য উদাসীন: কেন্দ্র

বাংলার মাটিতে ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর ক্রমশ প্রভাব বাড়ছে— চলতি সপ্তাহেই সংসদে জানিয়েছে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:২৭
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গ থেকে ধারাবাহিক ভাবে জঙ্গিদের গ্রেফতারির ঘটনা ও বিস্ফোরক উদ্ধারে ঘটনায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সূত্রের মতে, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে ক্রমশ প্রভাব বাড়িয়ে চলেছে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), যারা নিজেদের এখন জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া (জেএমআই) নামেও পরিচয় দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে ঘাঁটি তৈরি করছে এরা। এদের কারণে বাংলার মাটিতে ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর ক্রমশ প্রভাব বাড়ছে— চলতি সপ্তাহেই সংসদে জানিয়েছে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রের অভিযোগ, ওই সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে বলা হলেও, কাজ হচ্ছে না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, গত কয়েক বছর ধরেই সীমান্ত এলাকায় সদস্য সংখ্যা বাড়াতে ঝাঁপিয়েছে জেএমবি তথা জেএমআই। এদের লক্ষ্যই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরার এক শ্রেণির মাদ্রাসায় ধীরে ধীরে ঘাঁটি তৈরি করা। অসম ও ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার আসার পরে কড়াকড়ি বেড়ে যাওয়ায়, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, মালদহের প্রান্তিক এলাকায় থাকা কিছু মাদ্রাসাকে মূলত নিশানা করেছে জামাতুল জঙ্গিরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্র বলছে, একটি নির্দিষ্ট ছক মেনে এরা পশ্চিমবঙ্গে কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ জেএমবি সদস্যের মূল বাসস্থান বাংলাদেশ। কিন্তু ভাষার সুবিধে নিয়ে এরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে যায়। তৈরি করে নেয় ভারতীয় পরিচয়পত্র। পরবর্তী ধাপে ছোটখাটো ব্যবসা ফেঁদে এরা স্থানীয় মেয়েকে বিয়ে করে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্ত্রীকেও জঙ্গি কার্যকলাপে টেনে আনে তারা। তার পরে ব্যবসার আড়ালে স্বামী-স্ত্রী আলাদা ভাবে সদস্য সংগ্রহ শুরু করে।

কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় জেএমবি-র জঙ্গি কার্যকলাপে মূলত মদত দিচ্ছে পাক জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবা। যাদের পিছনে সমর্থন রয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর। অর্থ ছাড়াও প্রযুক্তিগত নানা ধরনের সাহায্য আসছে পাকিস্তান, সৌদি, নেপালের মতো দেশগুলি থেকে। এক স্বরাষ্ট্র কর্তার মতে, ‘‘খাগড়াগড়ের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে যে সব জঙ্গি গ্রেফতার হচ্ছে, তাদের কাছে বাংলায় তীব্র ঘৃণা ভরা প্রচারপত্র মিলছে। আজ যারা গ্রেফতার হয়েছে, তাদের কাছেও তা মিলেছে।’’ ওই কাগজগুলির মূল সুর হল, কাশ্মীরকে মুক্ত করা, কাশ্মীরে ‘হিন্দু সেনার অত্যাচারের’ প্রতিশোধ, হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, হিন্দুস্থানে ইসলামি খিলাফতের প্রতিষ্ঠা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্রের মতে, আইএস ইতিমধ্যেই ভারতীয় উপমহাদেশে ভারতের বিরুদ্ধে ‘পবিত্র যুদ্ধে’র ডাক দিয়েছে। গোয়েন্দাদের মতে, এ ধরনের প্রচারের উদ্দেশ্য— সংখ্যালঘু তরুণদের বিভ্রান্ত করে ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের নামে জেহাদে ঠেলে দেওয়া।

পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু সংগঠন রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ, পরিচয়পত্র তৈরি করে কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য সক্রিয়। তবে সীমান্তে বিএসএফের পাহারা বাড়ায় আগের থেকে অনুপ্রবেশ কমেছে বলেই দাবি কেন্দ্রের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘পশ্চিম সীমান্তে পাহারা বাড়ায় পাকিস্তান পূর্ব সীমান্তের মাধ্যমে জঙ্গি, অস্ত্র, ড্রাগস, জাল টাকা ঢোকাতে চাইছে। বাংলাদেশ সীমান্তে পাহারা বাড়ানো হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Terrorism JMB IS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy