—প্রতীকী চিত্র।
বিধিনিষেধ না থাকায় ওয়েব দুনিয়ায় অপরাধমূলক কাজকর্ম বাড়ছে। তা রুখতে ২০১৯ সালে প্রায় সাড়ে তিন হাজার সোশ্যাল মিডিয়া পেজ এবং অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং গেরুয়া শিবিরের প্রতি ফেসবুকের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই এমন তথ্য প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় সরকার। তথ্য-প্রযুক্তি আইন লঙ্ঘন করার দায়ে সেগুলিকে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার সংসদের অধিবেশন চলাকালীন ফেসবুক বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে আনেন কংগ্রেস সাংসদ রণবীত সিংহ বিট্টু। সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের আলাদা কী বিধিনিয়ম রয়েছে, তা জানতে চান তিনি। জবাবে তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, ‘‘তথ্য-প্রযুক্তি আইন লঙ্ঘনের দায়ে গত বছর তিন হাজার ৬৩৫টি সোশ্যাল মিডিয়া পেজ এবং অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে এই সংখ্যাটা ছিল দু’হাজার ৭৯৯ এবং ২০১৭-তে তা ছিল এক হাজার ৩৮৫।’’
ওই সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া পেজ ও অ্যাকাউন্ড ব্লক করে দেওয়ার পক্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, কোনও লাগাম না থাকায় সাইবার দুনিয়ায় যখন, যা খুশি ছড়িয়ে দেওয়া যায়। পরিচয় লুকিয়ে সাইবার দুনিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার এবং অপরাধমূলক কাজকর্ম এখন বিশ্বব্যাপী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: অধিবেশন বয়কটের ঘোষণা বিরোধীদের, ধর্না তুললেন সাংসদরা
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাল্লা দিয়ে গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে। সেখানে পোস্ট হওয়া বিষয়বস্তু থেকে ঘৃণা এবং হিংসা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে চলেছে। ওই সমস্ত পোস্ট এবং বিষয়বস্তু থেকে সাধারণ মানুষকে যাতে দূরে রাখা যায়, তাই তথ্য-প্রযুক্তি আইন ২০০০-এর ৬৯ (এ) ধারায় উল্লিখিত বিধিনিয়ম অনুযায়ী, নির্দিষ্ট পরিকাঠামো মেনে সেগুলি ব্লক করা হয়েছে।
বিগত লোকসভা নির্বাচনে ফেসবুকের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গেরুয়া শিবিরের প্রতি তাদের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে নানা রকম অভিযোগ সামনে এসেছে। তা নিয়ে ফেসবুকের সিইওকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিও ফেসবুকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ রাখছে বলেও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যাতে কোনও ভাবেই অপমানজনক, ক্ষতিকারক এবং বিদ্বেষপূর্ণ বিষয়বস্তু ছড়িয়ে না পড়ে, সে ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন বলেও জানায় কেন্দ্র। বলা হয়, সংবিধানে বাক স্বাধীনতার অধিকার থাকলেও, কোনও বিষয়বস্তু থেকে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তা সরিয়ে দিতে হবে এবং আদালত বা নোটিসের মাধ্যমে সরকারকে তা জানাতে হবে।
আরও পড়ুন: মোদীর আশ্বাস, ঘোষিত সহায়ক মূল্যও
এর আগে, লাদাখে সীমান্ত সংঘাতের জেরে দেশে ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে কেন্দ্র। তার পর পাবজি এবং টিকটক-সহ দু’দফায় যাথাক্রমে ৪৭ এবং ১১৮টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে পদ্ধতিতে ওই সমস্ত অ্যাপ এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলি ব্লক করা হয়েছে, তাতে যথেষ্ট স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে বলে দাবি করেছেন ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি অপার গুপ্ত। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘ভারতে এই ব্লকিং প্রক্রিয়াটা অত্যন্ত অস্বচ্ছ। সম্প্রতি পরিবেশ সংক্রান্ত বেশ কিছু ওয়েবসাইটও ব্লক করে দেওয়া হয়। ওই সমস্ত সাইটের মালিকরা জানিয়েছেন, চূড়ান্ত পদক্ষেপ করার আগে কোনও রকম নোটিস দেওয়া হয়নি তাঁদের। নিজেদের পক্ষ রাখার সুযোগটুকু পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এটা অবিলম্বে সংশোধন করা প্রয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘৃণা ভাষণ যাতে ছডি়য়ে পড়তে না পারে, তার জন্য কড়া পদক্ষেপ করাই উচিত। তবে তা যেন গোপনে সেন্সরশিপ বসানোর মতো না হয়।’’
এর মধ্যেই ডিজিটাল মিডিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেছে কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy