সিএএ-র পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনপিআর) নিয়েও দেশের নাগরিক সমাজ-সহ বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়ে মোদী সরকার। ছবি: সংগৃহীত।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর নিয়মনীতি নির্ধারণ এবং বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আরও সময় দিল রাজ্যসভা এবং লোকসভার কমিটি। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক নির্দেশিকায় জানিয়েছে, সিএএ-র জন্য রাজ্যসভা এবং লোকসভার কমিটির তরফে কেন্দ্রকে যথাক্রমে ৯ এপ্রিল এবং ৯ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর সিএএ-র নির্দেশিকা জারি করা হয়। এর পরের বছরের ১০ জানুয়ারি তা বলবৎ করা হয়েছিল। তবে দেশজোড়া বিক্ষোভের মাঝে এ নিয়ে নিয়মনীতি নির্ধারণের প্রক্রিয়া তথা বাস্তবায়ন করা থেকে কার্যত পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটির তরফে চলতি বছরের এপ্রিল এবং জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের স্বাক্ষরের পর এই আইন নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। এই আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে নিপীড়নের জন্য এ দেশে আসা শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই দেশগুলি থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি সিএএ-তে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও এই আইনে মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্তদের কথা বলা হয়নি। সিএএ-বিরোধী তথা এই আইন নিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবি, এতে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য বা ভেদাভেদ করা হয়েছে, যা ভারতীয় সংবিধানের মূল ভাবনার পরিপন্থী।
সিএএ-র পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনপিআর) নিয়েও দেশের নাগরিক সমাজ-সহ বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়ে মোদী সরকার। পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বহু রাজ্যেই এই আইনের বিরোধিতায় প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে।
তাদের মতে, এই সিএএ এবং এনপিআর বলবৎ হলে নাগরিকত্বের প্রশ্নে দেশের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় অংশকে নিশানা করা সহজ হবে। যদিও বিরোধী বা সিএএ-বিরোধী আন্দোলনকারীদের এই যুক্তি মানতে বিজেপি সরকার। বিজেপি-র দাবি, সিএএ বলবৎ হলেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত অথবা কোনও ভারতীয় নাগরিকই নাগরিকত্ব হারাবেন না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অথবা বিজেপি নেতারা বরাবরই সিএএ-র বিরোধিতাকে ‘রাজনৈতিক ভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আখ্যা দিয়ে এসেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy