Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Ayodhya Case

সাধুদের দাবিতেই শহর ছাড়িয়ে মসজিদের জমি

অযোধ্যা শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:২৮
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, অযোধ্যাতেই মসজিদ তৈরির জন্য ৫ একর বিকল্প জমি দেওয়া হবে। কিন্তু তা অযোধ্যা শহর না জেলায়, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করেনি।

এ বার কেন্দ্রীয় সরকার উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে অযোধ্যার রাম মন্দিরের জমি থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে, লখনউ হাইওয়ের পাশে জমি বরাদ্দ করল। অযোধ্যা শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। ফৈজাবাদ জেলার নাম বদলে অযোধ্যা করেছিল যোগী সরকার। এই জেলার মধ্যেই ধন্নীপুর গ্রামে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের জন্য মসজিদের জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। সর্বভারতীয় মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের একাধিক সদস্য আজ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে বলেছেন, তারা যেন এই জমি গ্রহণ না করে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে অন্যতম মামলাকারী ইকবাল আনসারি দাবি করেছিলেন, বিতর্কিত জমি ঘিরে কেন্দ্রের অধিগৃহীত ৬৭ একর জমির মধ্যেই মসজিদের জন্য জমি দিতে হবে। আনসারির যুক্তি ছিল, লোকে বলছে, চৌদ্দ ক্রোশের বাইরে গিয়ে মসজিদ করতে হবে। তা ঠিক নয়। কিন্তু আজ সেই জমিও রামমন্দির ট্রাস্টকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।

কেন অযোধ্যা শহরের মধ্যেই জমি বরাদ্দ করা হল না? সরকারি সূত্রের খবর, অযোধ্যার সাধুরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, অযোধ্যার রামজন্মভূমি ঘিরে হিন্দুরা কার্তিক মাসে ১৪ ক্রোশ পথ পরিক্রমা করেন। পরিক্রমার পরিধির বাইরে মসজিদের জমি দিতে হবে। সেই দাবি মেনে নিয়েই ওই জমি বেছে নেওয়া হয়েছে। যোগী সরকারের মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে তিনটি বিকল্প পাঠিয়েছিল। কেন্দ্রই ধন্নীপুরের জমিটি পছন্দ করেছে।’’

মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সদস্য কমল ফারুকির মতে, ‘‘তাজমহলে জমি দিলেও আমাদের তা গ্রহণ করা উচিত নয়।’’ বোর্ডের আর এক সদস্য উসমান ফারুকির মত, ‘‘সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড দেশের মুসলিমদের প্রতিনিধি নয়। ওয়াকফ বোর্ড জমি নিলেও তা দেশের মুসলিমদের সিদ্ধান্ত বলে ধরে নেওয়া উচিত হবে না।’’ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড কী করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি বোর্ডের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। বোর্ডের চেয়ারম্যান জাফর ফারুকির যুক্তি, ‘‘এ দেশের মুসলিমরা ফকির নন যে অর্থের দরকার। এটা ন্যায়ের প্রশ্ন।’’

অযোধ্যার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট কী বলেছিল?

রায়: ৯ নভেম্বর, ২০১৯

• রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ এলাকায় ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমি হিন্দুরাই পাবেন, সেখানেই তৈরি হবে রামমন্দির

• কেন্দ্র তিন মাসের মধ্যে মন্দির তৈরির প্রকল্প তৈরি করবে। মন্দির তৈরি পরিচালনার জন্য ট্রাস্ট ও ‘বোর্ড অব ট্রাস্টিজ’ গঠন করবে। বাবরি মসজিদের ভিতরের ও বাইরের চত্বর ট্রাস্টের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

• ১৯৯৩-তে বিতর্কিত জমি ঘিরে কেন্দ্র বাড়তি প্রায় ৬৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল। কেন্দ্র চাইলে সেই জমিও ট্রাস্টকে দিতে পারে

• মসজিদ তৈরির জন্য অযোধ্যাতেই চোখে পড়ার মতো জায়গায় ৫ একর বিকল্প জমি দেবে কেন্দ্র বা রাজ্য।

সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, অধিগৃহীত বাড়তি প্রায় ৬৭ একর জমি কেন্দ্র চাইলে মন্দির প্রকল্পের জন্য ট্রাস্টকে দিতে পারে। এই জমির মধ্যে ৪২ একর জমি রাম জন্মভূমি ন্যাসের হাতে ছিল। প্রসঙ্গত, ২০০৪-এর লোকসভা ভোটের দু’বছর আগে শিলাপুজোর পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, ওই ৬৭.৭০৩ একর এলাকায় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান
চলবে না। কিন্তু ২০১৯-এর ভোটের আগে কেন্দ্র আচমকাই শীর্ষ আদালতে আর্জি জানায়, সরকারের হাতে থাকা জমি প্রকৃত মালিকদের বা ন্যাসকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Case Ram Temple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy