Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Omicron

Omicron: তৃতীয় ঢেউ দেখছে কেন্দ্র

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম চিহ্নিত হওয়া ওমিক্রনকে গত ২৬ নভেম্বর ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বলেছিল হু।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৩০
Share: Save:

সংখ্যাতত্ত্বের সব হিসাবকে ছাপিয়ে গিয়ে দ্রুত হারে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি ওমিক্রন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গতিতে তা ছড়াতে থাকলে ভারতে খুব দ্রুত আছড়ে পড়তে চলেছে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ। বুস্টার ডোজ় ও ছোটদের প্রতিষেধক দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে আজ সবিস্তার আলোচনা হলেও ঐকমত্য হয়নি। তবে সিরাম ইনস্টিটিউট ও নোভাভ্যাক্সের টিকা কোভোভ্যাক্সকে আজ স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। আগামী বছরে ছোটদের জন্য কোভোভ্যাক্স বাজারে ছাড়া যাবে বলে সিরাম-কর্তা আদার পুনাওয়ালা আশাবাদী।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম চিহ্নিত হওয়া ওমিক্রনকে গত ২৬ নভেম্বর ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বলেছিল হু। সে দিন পাঁচটি দেশে ৮৭ জন ওমিক্রন-আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেলেও মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে সেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ৯০টি দেশে। ভারতে গত ২ ডিসেম্বর বেঙ্গালুরুতে প্রথম ওমিক্রন-আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেলেও গত ১৫ দিনে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১১টি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ওই স্ট্রেন। আক্রান্ত হয়েছেন ১০৮ জন। শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র (৪০ জন)। তার পরেই দিল্লি (২২ জন)। আক্রান্তদের মধ্যে বেঙ্গালুরুর এক চিকিৎসক বাদে বাকি সবার সংক্রমণের উৎস চিহ্নিত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রক মনে করছে, ওমিক্রনে আক্রান্তদের অধিকাংশের মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে বলে দেশবাসী গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে। মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়ালের কথায়, ‘‘দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে ঠিক এ ভাবেই গা-ছাড়া দিয়েছিল আমজনতা। তার পরিণাম আমরা জানি।’’ স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, ব্রিটেন, ডেনমার্কের মতো দেশগুলিতে যে গতিতে ওমিক্রন সংক্রমণ বাড়ছে, তা অতীতে কোনও প্রজাতির ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পলের কথায়, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকাতে ডেল্টা প্রজাতির উপস্থিতি কম ছিল। আবার ব্রিটেনে এত দিন সংক্রমণের প্রধান কারণ ছিল ডেল্টা। দু’টি দেশেই এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ওমিক্রন। জনগোষ্ঠীতে সংক্রমণের প্রশ্নে ওই প্রজাতি খুব দ্রুত ডেল্টাকেও ছাপিয়ে যাবে।’’

কেন্দ্রের আশঙ্কা, ওমিক্রনের সংক্রমণের হার এতটাই বেশি যে, তা নতুন করে গোটা পৃথিবীতে সংক্রমণের ঢেউ আনতে চলেছে। এখন থেকেই সতর্ক না হলে আগামী দিনে ওমিক্রনের সংক্রমণ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। বিনোদ পলের কথায়, ‘‘শুধু প্রতিষেধক ওই ঢেউকে রুখতে পারবে না। অন্যান্য কোভিড বিধিও মানতে হবে।’’ লব আগরওয়ালের মতে, তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী। সার্স-এর ঢেউ যেমন দু’দশক ধরে এখনও এসে চলেছে, তেমনই আগামী দিনে করোনার তৃতীয় বা চতুর্থ ঢেউ আসাটাও স্বাভাবিক। যদিও লবের মতে, ভারতে ওমিক্রনের ঢেউ এলেও অন্যান্য দেশের মতো এখানেও অধিকাংশ রোগীর শরীরে মৃদু উপসর্গই দেখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অনেককেই হয়তো হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হবে না। বরং সংক্রমণের যত ঢেউ আসবে, জনগোষ্ঠীর মধ্যে ততই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (হার্ড ইমিউনিটি) তৈরি হবে। দেশের কত মানুষের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে, তা অবশ্য আজ বলতে পারেননি লব।

তবে ছবিটা ঠিক উল্টো হতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে লবের। তিনি বলেন, এমনও হতে পারে যে, তৃতীয় ঢেউয়ের বিস্তার এতটাই শক্তিশালী হল যে, তা দ্বিতীয় ঢেউয়ে চার লক্ষ দৈনিক সংক্রমণের নজিরকেও ছাপিয়ে গেল। ডেল্টার মতো যদি ওমিক্রনের মারণক্ষমতা থাকে তা হলে ক্যানসার, যক্ষ্মা বা এড্‌স রোগী, অর্থাৎ যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের মধ্যে বড় অংশের মৃত্যু হতে পারে। স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের জিনে ওমিক্রন কেমন প্রভাব ফেলবে, তা এখনও জানা যায়নি। তা বোঝা গেলেই ওমিক্রন সম্বন্ধে অনেকটাই ধারণা স্পষ্ট হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Omicron Coronavirus Third Wave COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy