কেন্দ্রের চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও অন্যান্য অনিয়ম রুখতে আজ কঠোর আইন তৈরির পথে পা বাড়াল মোদী সরকার। —ফাইল চিত্র।
স্কুল থেকে পুরসভা— পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে চাকরির পরীক্ষায় ভূরি ভূরি দুর্নীতির অভিযোগ গড়িয়েছে আদালতে। বিরোধীরা তুলছেন প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগও। এই আবহে কেন্দ্রের চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও অন্যান্য অনিয়ম রুখতে আজ কঠোর আইন তৈরির পথে পা বাড়াল মোদী সরকার। কেন্দ্র এ দিন সংসদে ‘সরকারি পরীক্ষা অনিয়ম প্রতিরোধ বিল’ পেশ করেছে। এই বিলে ইউপিএসসি, স্টাফ সিলেকশন কমিশন, রেল, ব্যাঙ্ক, ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র ফাঁসে ১০ বছর পর্যন্ত জেল ও ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।
বিজেপি নেতাদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারে কেন্দ্রের এই আইন বিজেপির নতুন অস্ত্র হবে। যুক্তি, রাজ্যে তৃণমূল সরকার যখন চাকরির পরীক্ষায় দুর্নীতিতে মদতের অভিযোগে বিদ্ধ, তখন কেন্দ্র সরকারি চাকরিতে দুর্নীতি রুখতে আইন আনছে। বিষয়ের গুরুত্ব বোঝাতেই লোকসভা ভোটের আগে শেষ অধিবেশনে এই বিল পেশ।
পরীক্ষায় কঠোর
· সরকারি চাকরির পরীক্ষা (অনিয়ম প্রতিরোধ) বিল
· স্টাফ সিলেকশন কমিশন, ইউপিএসসি, রেল, ব্যাঙ্কের নিয়োগ-পরীক্ষা ও এনটিএ পরিচালিত সমস্ত কম্পিউটার-ভিত্তিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
· সরকারি কর্মীদের সঙ্গে আঁতাঁত করে প্রশ্ন ফাঁস বা উত্তরপত্র বিকৃতিতে শাস্তি
· ৩-১০ বছর জেল, ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা
· জামিন অযোগ্য অপরাধ
· দরকারে গ্রেফতার কোর্টের অনুমতি ও পরোয়ানা ছাড়া
· আপসে মীমাংসা নয়
আজ লোকসভায় কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ দফতরের মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ এই বিল পেশ করেছেন। বিলে বলা হয়েছে, রাজ্যগুলি চাইলে এই আইনের খসড়াকে ‘মডেল’ করে এই রকম আইন চালু করতে পারে। তাতে রাজ্যও সরকারি চাকরির পরীক্ষায় দুর্নীতিমূলক অপরাধ রুখতে পারবে। বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচিত এই পদক্ষেপ অনুসরণ করা।”
সরকারি পরীক্ষা অনিয়ম প্রতিরোধ বিলে ১৫ রকমের অনিয়মের কথা বলা হয়েছে। তাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস, তা ফাঁসের চক্রান্ত, প্রশ্নপত্র বা ওএমআর শিট জোগাড় করা, উত্তর ফাঁস, পরীক্ষার্থীদের অনৈতিক সাহায্য, পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় কারচুপি, জাল পরীক্ষা নেওয়া, জাল অ্যাডমিট কার্ড বিলির মতো অপরাধ রয়েছে। সবই দণ্ডনীয়, জামিন-অযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। সব ক্ষেত্রেই ন্যূনতম তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লক্ষ টাকার জরিমানা।
কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের বক্তব্য, সম্প্রতি বহু রাজ্যেই সরকারি চাকরির পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে এই অভিযোগ উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছে বা সময়মতো ফল প্রকাশ করে নিয়োগ করা যায়নি। তার খেসারত দিয়েছেন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। অনেক ক্ষেত্রেই এর মধ্যে সংগঠিত গোষ্ঠী বা মাফিয়া-চক্র কাজ করে। এই বিল এনে পরীক্ষার্থীদের শাস্তি দেওয়ার বদলে মূলত সেই অপরাধ-চক্রকে ঠেকানোর লক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে। এত দিন এ জন্য কোনও আইন ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy