Advertisement
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Corona

কোন রাজ্যে কত টিকা প্রকাশ্যে বলছে না কেন্দ্র

প্রশ্ন উঠেছে, কোন রাজ্যকে কত টিকা পাঠানো হয়েছে তা সুপ্রিম কোর্টে জানালেও প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেন মুখ খুলতে নারাজ স্বাস্থ্যকর্তারা?

ভয়ে কাবু: করোনা-প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে প্রয়াগরাজের এক হাসপাতালে। শুক্রবার।

ভয়ে কাবু: করোনা-প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে প্রয়াগরাজের এক হাসপাতালে। শুক্রবার। ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২১ ০৭:১২
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলিতে কম টিকা পাঠানোর অভিযোগ আজ ফের অস্বীকার করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আজ মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রত্যেকটি রাজ্যকে নির্দিষ্ট হিসেবের ভিত্তিতেই টিকা পাঠানো হয়ে থাকে। কোনও রাজ্যের সঙ্গে বঞ্চনা করা হয়নি। কিন্তু কোন রাজ্যকে কত টিকা পাঠানো হয়েছে, তা-ও প্রকাশ্যে আনতে চায়নি কেন্দ্র। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, কেন তথ্য গোপন করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার?

দিন দুয়েক আগে এক কোটি টিকা কম পেয়েছেন বলে সরব হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই ধরনের অভিযোগে সরব বিরোধী-শাসিত অন্যান্য রাজ্য। আজ রাজ্যগুলির ওই ক্ষোভের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেন, ‘‘কোনও রাজ্যকে বঞ্চনা করার প্রশ্নই নেই। অনেকগুলি কারণের উপরে ভিত্তি করে রাজ্যকে টিকা পাঠানো হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে রাজ্যের জনঘনত্ব, সংক্রমণের হার, রাজ্যে টিকাকরণের গতি, খরচ হওয়া টিকার পরিমাণ, সর্বোপরি রাজ্যে কত টিকা অপচয় হয়েছে তার পরিমাণ, ইত্যাদি। এমনকি রাজ্যগুলি যাতে আগে থেকেই পরিকল্পনা সেরে ফেলতে পারে, তার জন্য ১৫ দিন আগেই কত টিকা যাবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়।’’ কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কোন রাজ্যকে কত টিকা পাঠানো হয়েছে তা সুপ্রিম কোর্টে জানালেও প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেন মুখ খুলতে নারাজ স্বাস্থ্যকর্তারা? কংগ্রেসের অভিযোগ, পরিসংখ্যান দিলে প্রমাণ হয়ে যাবে, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বেশি টিকা পাঠানো হয়েছে। তাই এ নিয়ে তথ্য প্রকাশে অনীহা রয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের।

যদিও টিকার ঘাটতির অভিযোগ পিছু ছাড়ছে না কেন্দ্রের। গত কালই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন টুইটারে জানিয়েছিলেন, জুলাই মাসে রাজ্যগুলিকে ১২ কোটি টিকা সরবরাহ করা হবে। গোড়া থেকেই সরকারের টিকা-নীতির সমালোচনায় সরব রাহুল গাঁধী আজ ফের টুইট করে বলেন, ‘‘জুলাই এসে গেল। কিন্তু টিকা এল না।’’ রাহুলের লাগাতার টিকা-নীতির সমালোচনা ও টিকার আকাল নিয়ে আক্রমণে বিজেপি যে অস্বস্তিতে, তা প্রমাণ হয়ে যায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পাল্টা টুইটে। ক্ষুব্ধ হর্ষ টুইট করে লেখেন, ‘‘রাহুল গাঁধীর সমস্যাটি ঠিক কী? উনি কি পড়তে পারেন না? নাকি বোঝার অসুবিধে রয়েছে? আমি তো গত কালই লিখেছি, রাজ্যগুলিকে কত টিকা জুলাই মাসে দেওয়া হবে। ‘ঔদ্ধত্য’ ও ‘বোকামি’ নামক ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক নেই। দলের নেতৃত্ব নিয়ে ভাবা উচিত কংগ্রেসের।

দেশে যেখানে ফি-দিন ১ কোটি টিকাকরণ হওয়া উচিত, সেখানে ১২ কোটি টিকায় লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যে সম্ভব নয়, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাই টিকার জোগান বাড়াতে এখন বিদেশি প্রতিষেধক সংস্থাগুলিকে দ্রুত ভারতে আসার ছাড়পত্র দিতে চাইছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যে মডার্না ছাড়পত্র পেয়েছে। দৌড়ে রয়েছে ফাইজ়ার। আজ নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল জানান, জনসন অ্যান্ড জনসন খুব দ্রুত ছাড়পত্র পেতে চলেছে। হায়দরাবাদের সংস্থা বায়োলজিক্যাল ই-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ দেশে টিকা উৎপাদন করবে তারা। সেই টিকা এ দেশের টিকাকরণে ব্যবহার করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court of India Corona Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE