—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে যে সব বিষয় গেরুয়া শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলেছিল, তার মধ্যে অন্যতম হল সেনার অগ্নিবীর প্রকল্প। আজ সেই বিতর্কিত প্রকল্প নিয়ে বাজেটে একটি শব্দও খরচ করেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু বাজেট নথি বলছে, স্থলসেনায় অগ্নিবীর প্রকল্পে গত বার যেখানে ২৮৩৫ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছিল, এ বারে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৫২০২ কোটি টাকা। সেনা কর্তাদের একাংশ, সেনায় যোগ দিতে উৎসাহীদের একাংশ এবং বিরোধীরা ওই প্রকল্প বাতিলের দাবিতে সরব হলেও মঙ্গলবার বরাদ্দ বৃদ্ধি করে কার্যত বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, আপাতত ওই প্রকল্প বাতিল করার কোনও পরিকল্পনা নরেন্দ্র মোদী সরকারের নেই।
এ বারে প্রতিরক্ষা খাতে ৬.২ লক্ষ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, যা কার্যত অন্তর্বর্তী বাজেটের সমান। তা সত্ত্বেও অগ্নিবীর প্রকল্পে (স্থলসেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনা) খাতে যে ভাবে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে, তা তাৎপর্যপূর্ণ। অথচ খোদ সেনাবাহিনীর একাংশেরই ওই প্রকল্প নিয়ে আপত্তি রয়েছে। অগ্নিবীর প্রকল্পের জওয়ানেরা আর পাঁচ জন সেনার মতো ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না বলে লোকসভায় দাবি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সেই দাবি খণ্ডন করতে মাঠে নামতে হয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে। পরে দেখা যায়, মৃত অগ্নিবীর জওয়ানের পরিবারও দাবি করছে যে, ক্ষতিপূরণ তাঁরা হাতে পাননি। অস্বস্তিতে পড়তে হয় সরকারকে।
অগ্নিবীর প্রকল্প বাতিল করার দাবিতে সরব রয়েছেন রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য থেকে সেনায় যোগ দিতে আগ্রহী যুবকেরাও। সেই ক্ষোভের আঁচ ভোটের সময়ে পেয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু সেনাদের দীর্ঘ চাকরি জীবনের বেতন ও পেনশনের দায় এড়াতে মরিয়া সরকার যে অগ্নিবীর প্রকল্প বাতিল করার কথা ভাবছে না, তা আজ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বাজেট নথি থেকেই। গত বাজেটে (২০২৩-২৪) অগ্নিবীর প্রকল্পে স্থলসেনা খাতে ২,৮৩৫.৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এ বারে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫,২০৭.২৮ কোটিতে। একই ভাবে অগ্নিবীরের নৌসেনা খাতে বরাদ্দ ছিল ২৯৫.৫৬ কোটি টাকা। এ বারে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫২ কোটি। আর অগ্নিবীরের বায়ুসেনা খাতে বরাদ্দ হয়েছিল ১৮৬.১৪ কোটি টাকা। এ বার তা দাঁড়িয়েছে ৪২০ কোটি টাকায়।
অগ্নিবীর ছাড়াও সীমান্ত এলাকায় পরিকাঠামো উন্নয়নে বর্ডার রোড অর্গানাইজ়েশন (বিআরও)-এর বাজেট প্রায় ৩০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। মোদী সরকার চিন ও পাকিস্তান সীমান্তে দ্রুত পৌঁছতে দুর্গম এলাকাগুলিতে সড়ক নির্মাণে জোর দেওয়ার পক্ষপাতী। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘বিআরও-র জন্য ৬৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ায় সীমান্তে পরিকাঠামো উন্নয়ন আরও দ্রুত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy