কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ফাইল চিত্র।
অর্থনীতির চাকায় গতি আনতে পরিকাঠামোয় খরচের জন্য চলতি মাসে দ্বিগুণ অর্থ জোগাবে কেন্দ্র। প্রতি মাসেই কেন্দ্রের কর বাবদ আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ রাজ্যগুলির কাছে পাঠানো হয়। নভেম্বর মাসে তার দ্বিগুণ অর্থ রাজ্যগুলিকে দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গ সাধারণত প্রতি মাসে কেন্দ্রীয় করের ভাগ হিসেবে ৩,৫৭৬ কোটি টাকা পেয়ে থাকে। নভেম্বর মাসে পাবে প্রায় ৭,১৫২ কোটি টাকা।
আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে দেশের অর্থনীতি নিয়ে বৈঠক করেছেন। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতি আর্থিক বৃদ্ধির পথে ফিরতে শুরু করেছে। সেই আর্থিক বৃদ্ধির গতি ধরে রাখতে রাজ্য স্তরে কী কী পদক্ষেপ করা দরকার, মূলত তা নিয়েই এই বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠকের পরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “প্রতি মাসে কেন্দ্রীয় করের ভাগ হিসেবে মোদী সরকার রাজ্যগুলিকে মোট ৪৭,৫৪১ কোটি টাকা দেয়। সাধারণত মাসের ২০-২১ তারিখে তা রাজ্যের কাছে পৌঁছে যায়। এই মাসের ২২ তারিখে রাজ্যগুলির কোষাগারে তার দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৯৫,০৮২ কোটি টাকা পৌঁছে যাবে।”
কেন্দ্র অবশ্য বাড়তি কোনও অর্থ জোগাচ্ছে না রাজ্যগুলিকে। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের ব্যাখ্যা, কেন্দ্রীয় করের ভাগ রাজ্যগুলিকে মোট ১৪ কিস্তিতে দেওয়া হয়। ১২ মাসে ১২ কিস্তি, তার সঙ্গে মার্চ মাসে বাড়তি দুই কিস্তি। মার্চ মাসের বাড়তি দুই কিস্তির মধ্যেই এক কিস্তি নভেম্বরেই দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যগুলি এ বছর পরিকাঠামোয় ৫.৯৭ লক্ষ কোটি টাকা ঢালবে বলে কেন্দ্র লক্ষ্য স্থির করেছিল। কিন্তু রাজ্যগুলির ঋণ নেওয়ার হার দেখে কেন্দ্র মনে করছে, যথেষ্ট পরিমাণে পরিকাঠামোয় খরচ হচ্ছে না। নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিকাঠামোয় খরচ করলে, কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে বাড়তি ঋণ দেবে বলেছিল। অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে ১১টি রাজ্য, পরের তিন মাসে ৭টি রাজ্য সেই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পেরেছে। পশ্চিমবঙ্গ তো দূরের কথা, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ুর মতো শিল্পোন্নত রাজ্যও সেই তালিকায় নেই।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের তরফে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এ দিনের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। শুরুর দিকে রাজ্যগুলি তুলনায় বেশি সময় পেলেও পশ্চিমবঙ্গ শেষের দিকে থাকায় রাজ্যের জন্য বরাদ্দ সময় তিন মিনিটে নেমে আসে। অর্থ প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে অনুরোধ করেন যে, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গেলে সেটা ৩ মিনিটে বলা সম্ভব নয় ফলে তাকে কিছুটা বেশি সময় দেওয়া হোক। বাড়তি সময় বরাদ্দ হলে চন্দ্রিমা সবিস্তারে রাজ্যের বক্তব্য তুলে ধরেন।
চন্দ্রিমা বৈঠকে জানান, কোভিড মোকাবিলার পাশাপাশি ইয়াস-আমপানের মতো দুর্যোগেরও মোকাবিলা করতে হয়েছে রাজ্যকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, দুয়ারে রেশন, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের হাতে টাকা এবং সুবিধা পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে রাজ্য। রাজ্যের অভিযোগ, জ্বালানিতে সেস এবং সারচার্জ থেকে কেন্দ্রীয় সরকার আয় বাড়িয়েছে। রাজ্যগুলি তার ভাগ পায়নি। বরং উল্টে ভ্যাট কমে যাওয়ায় রাজ্যের আয় ধাক্কা খেয়েছে।
বৈঠকের পরে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কাছ থেকে যে আর্থিক সহযোগিতা পাওয়ার কথা, তা সে ভাবে পাচ্ছেনা রাজ্য সরকার। তার পরেও রাজ্য পরিকাঠামো এবং মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সর্বতো ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই সময়ে যেটা সব চেয়ে জরুরি, অর্থাৎ মানুষের হাতে টাকা পৌঁছনো, সেই কাজও নিপুণ ভাবে করছে রাজ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy