ফল প্রকাশের পর উচ্ছসিত ছাত্রীরা।—ছবি এএফপি।
দ্বাদশের পরীক্ষায় গত বছরের তুলনায় পাশের হার বেড়েছে ৫ শতাংশ বিন্দুরও বেশি। কিন্তু পড়ুয়াদের বড় অংশের অভিযোগ, ফল প্রকাশের দিনে ডাহা ফেল সিবিএসই।
এমনিতেই করোনার কারণে অসমাপ্ত বোর্ড-পরীক্ষা নিয়ে মাসের পর মাস প্রবল উৎকণ্ঠায় ভুগতে হয়েছে পড়ুয়াদের। বাতিল হওয়ার কারণে শেষমেশ সব পরীক্ষা দেওয়াও হয়ে ওঠেনি। নম্বর মিলেছে মূলত যে ক’টি বিষয় দেওয়া গিয়েছে, তার ভিত্তিতে। কিন্তু সেই অনুযায়ী হিসেব কষে তৈরি রেজাল্ট হাতে পেতেও প্রায় দিনভর নাকাল হতে হল তাদের। যার দরুন প্রশ্নের মুখে সিবিএসই। কিছুটা মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকও।
সাধারণত এমন পরীক্ষার ফল কবে, কখন প্রকাশিত হবে, তা আগাম জানিয়ে দেয় বোর্ড। যাতে পড়ুয়ারা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী নম্বর জানতে পারে দ্রুত। কিন্তু এ বার সিবিএসই শুধু জানিয়েছিল, দশম এবং দ্বাদশের ফল প্রকাশিত হবে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে। কিন্তু তা কবে, নির্দিষ্ট করে তারা তা জানায়নি।
সোমবার সকাল থেকেও এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, মুখে কুলুপ এঁটেছিল বোর্ড। তারই মধ্যে দুপুর একটার আশেপাশে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের টুইট, “দ্বাদশের ফল ঘোষণা করেছে সিবিএসই। তা সম্ভব করতে পারার জন্য সকলকে অভিনন্দন। আবার বলছি, পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য এবং ভাল মানের শিক্ষাই আমাদের অগ্রাধিকার।”
আরও পড়ুন: দু’টি বড় পরীক্ষার ফল ঘোষণার পরে কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তির দাবি
মন্ত্রী পড়ুয়াদের অভিনন্দন জানালেও, দিনভর রেজাল্ট হাতে পেতেই নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে তাদের। শুরুতেই বসে গিয়েছে সিবিএসই-র ওয়েবসাইট। পড়ুয়ারা সেখানে ফল দেখতে পাচ্ছে না জেনে বোর্ড জানিয়েছে, এই প্রযুক্তিগত ত্রুটি ঠিক হতে লাগবে ঘণ্টা দুয়েক! অনেকের যদিও অভিযোগ, পাঁচ ঘণ্টাতেও পোর্টালে প্রাণ ফেরেনি।
পড়ুয়ারা কত ভাবে নম্বর জানতে কিংবা রেজাল্ট হাতে পেতে পারবেন, দিনের শুরুতে তার লম্বা তালিকা দিয়েছিল সিবিএসই। তাতে নিজেদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা তো ছিলই, সঙ্গে ছিল আইভিআরএস পদ্ধতিতে (যে ভাবে এখন মোবাইলে গ্যাসের সিলিন্ডার বুক করা হয়) নম্বর জানানোর প্রতিশ্রুতি। বলা হয়েছিল, উমঙ্গ অ্যাপ এবং ডিজিটাল লকারেও নিজেদের রেজাল্ট হাতে পাবে পড়ুয়ারা। পরীক্ষার পরে মানসিক চাপমুক্তির জন্য দেওয়া হয়েছিল টোল-ফ্রি নম্বরও। কিন্তু এক পড়ুয়ার প্রতিক্রিয়া, “প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে যে মানসিক চাপ আমাদের রেজাল্টের দিনেও পোহাতে হল, তা বলার নয়। আগে থেকে কি একটু বাড়তি যত্ন নিতে পারত না বোর্ড?”
অনেকে আবার প্রশ্ন তুলছেন, তবে কি প্রস্তুতির খামতি ছিল? নইলে প্রযুক্তিগত ত্রুটি দ্রুত ঠিক করা গেল না কেন? কারও আবার অভিযোগ, সব কিছুকে ‘ইভেন্টে’ বদলে চমক দিতে গিয়েই সমস্যার সূত্রপাত। তাঁদের প্রশ্ন, ফল ঘোষণার দিন আগে থেকে জানানো হল না কেন? কেনই বা রেজাল্ট বেরনোর কথা টুইটে প্রথম জানাতে হবে মন্ত্রীকে? কোথায়-কোথায় নম্বর বা রেজাল্ট দেখা যাবে, তা আগে থেকে জেনে রাখা সুবিধার নয় কি?
সিবিএসই-র অবশ্য দাবি, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই এই ভোগান্তি। পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখেই ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যে প্রত্যেকের রেজাল্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাদের স্কুলে। যাতে চাইলে, অন্তত সেখান থেকে তা জেনে নিতে পারে তারা। কিন্তু পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের ক্ষোভ তাতে কমেনি।
উদ্বেগে দশমের পড়ুয়ারাও। কারণ, তাদের ফল প্রকাশের দিনও অন্তত এখনও পর্যন্ত ঘোষণা করেনি সিবিএসই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy