ফাইল চিত্র।
অবশেষে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য পাঠ্যক্রমের ভার কমানোর কথা ঘোষণা করল সিবিএসই। আজ মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের টুইট, “প্রত্যেক বিষয়ের (সাবজেক্ট) মূল ধারণাগুলিকে কাটছাঁট না-করেও ৩০% পর্যন্ত পাঠ্যক্রম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
যদিও যে সব অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়ে গিয়েছে। শিক্ষাজগত থেকে শুরু করে বিরোধী শিবির, উভয়েরই মত হল, যা যা বাদ পড়েছে তার মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে এবং শিক্ষামন্ত্রী যা বলছেন, তার ঠিক উল্টো ঘটনাটাই ঘটেছে। অর্থাৎ বিষয়ের মূল ধারণাগুলিতেই কোপ পড়েছে। তাঁদের অভিযোগ, মোদী সরকার রাষ্ট্রবাদী মতাদর্শ চাপিয়ে দিতে চায়। সব রকম প্রশ্নের মুখ চাপা দিতে চায়। কাই ধর্মনিরপেক্ষতা, নাগরিকত্ব, গণতান্ত্রিক অধিকারের মতো বিষয় বাদ পড়ে রাষ্টবিজ্ঞানের সিলেবাস থেকে।
সিবিএসই-র দাবি, অতিমারির আক্রমণে এ বছর পড়ানোর সময় মিলছে কম। সে কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। তা করা হয়েছে প্রত্যেক বিষয়ের জন্য নির্দিষ্ট কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী। পরিবর্তিত পাঠ্যক্রম তুলে দেওয়া হয়েছে বোর্ডের ওয়েবসাইটে। ২৫% পর্যন্ত পাঠ্যক্রম কমানোর কথা জানিয়েছে আইসিএসই-ও।
সিবিএসই যা যা বাদ দিল*
• দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান: ১. আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষা, ২. সামাজিক এবং নয়া সামাজিক আন্দোলন, ৩. পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ (সবই পুরো বাদ),
৪. পরিকল্পিত উন্নয়ন (যোজনা কমিশন ও পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাদ), ৫. ভারতের বিদেশ নীতি (প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বাদ)
• দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস: ১. দেশভাগ
• একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান: ১. যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, ২. নাগরিকত্ব, ৩. জাতীয়তাবাদ, ৪. ধর্মনিরপেক্ষতা (সবই পুরো বাদ), ৫. স্থানীয় প্রশাসন (কেন প্রয়োজন এবং স্থানীয় প্রশাসনের বিকাশ বাদ)
• দশম শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান: ১. গণতন্ত্র এবং বৈচিত্র, ২. লিঙ্গচেতনা, ধর্ম ও জাতিভেদ, ৩. গণ আন্দোলন, ৪. গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ,
• নবম শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান: ১. গণতান্ত্রিক অধিকার, ২. খাদ্য নিরাপত্তা (সবই পুরো বাদ)
* তালিকা আংশিক
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যে খরচ বাড়াতে জোর অর্থ কমিশনের
সিবিএসই-র বিবৃতি অনুযায়ী, শুধু এ বছরের জন্য পাঠ্যক্রম থেকে বাদ পড়া বিষয়ের কোনওটি যদি পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত কোনও অংশ বোঝার ক্ষেত্রে জরুরি হয়, তবে অবশ্যই পড়ুয়াদের তা বুঝিয়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু বাদ দেওয়া ওই সমস্ত অংশ সারা বছরের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন কিংবা বছর শেষের বোর্ডের পরীক্ষায় থাকবে না। বাড়িবন্দি অবস্থাতেও পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এনসিইআরটি-র তৈরি বিকল্প শিক্ষা নির্ঘণ্ট আগেই জারি করা হয়েছে। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য তা অনুসরণ করতে পারে সিবিএসই স্কুলগুলি।
অনলাইন-পাঠ চালু হলেও, তা ক্লাসে বসে শিক্ষার সমতুল নয় বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে পাঠ্যক্রম ছাঁটাইয়ের দাবি উঠছিল অনেক দিন থেকেই। কিন্তু এ দিন সে কথা ঘোষণার পরেও প্রশ্ন রয়ে গেল বিস্তর। অনেকের জিজ্ঞাসা, এই পাঠ্যক্রম পড়ে দ্বাদশের গণ্ডি টপকানো পড়ুয়াদের ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষাও কি নেওয়া হবে পরিবর্তিত পাঠ্যক্রম অনুযায়ী? বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে ভর্তির পরীক্ষাই বা নেওয়া হবে কোন পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে? যদি ওই সমস্ত পরীক্ষায় পাঠ্যক্রমের বহর না-কমে, তা হলে অন্তত দ্বাদশের পড়ুয়াদের চাপ কমবে না। একই কথা সত্যি একাদশে ভর্তির জন্য কোথাও পুরো পাঠ্যক্রমে পরীক্ষা দিতে হলে। তাই সবার আগে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি-সহ সমস্ত পক্ষকে ধোঁয়াশা কাটানোর আর্জি জানাচ্ছে পড়ুয়ারা। অনেকের দাবি, কমানো হোক প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যক্রমও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy