ছবি: পিটিআই।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ ও তাঁর স্বামী আনন্দ গ্রোভারের বাড়ি এবং তাঁদের বেসরকারি সংস্থা ‘লইয়ারস কালেকটিভ’-এর অফিসে হানা দিল সিবিআই। বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন (এফসিআরএ) ভাঙার জন্য গ্রোভার ও সংস্থাটির বিরুদ্ধে গত মাসেই মামলা হয়েছে। সেই সূত্রেই বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা থেকে দিল্লির নিজ়ামুদ্দিনে জয়সিংহের বাড়ি ও অফিস এবং মুম্বইয়ের জঙ্গপুরায় তাঁদের বেসরকারি সংস্থাটির অফিসে তল্লাশি চালায় সিবিআই।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অভিযোগ, ইন্দিরা জয়সিংহ ও তাঁর স্বামী আনন্দ গ্রোভারের বেসরকারি সংস্থা ‘লইয়ারস কলেকটিভ’ মানবাধিকার সংক্রান্ত মামলা লড়ার জন্য পাওয়া বিদেশি অনুদানের টাকা নয়ছয় করেছে। যার ভিত্তিতে গত মাসে এফআইআর দায়ের হয়েছে সংস্থা ও তার প্রেসিডেন্ট গ্রোভারের বিরুদ্ধে। এফআইআরে প্রাক্তন অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল জয়সিংহের নাম না থাকলেও,মন্ত্রকের অভিযোগে তাঁর ভূমিকার উল্লেখ রয়েছে। সংস্থার একাধিক কর্মকর্তারও নাম রয়েছে এফআইআরে। মন্ত্রকের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০০৬ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা বিদেশি অনুদান পায় ‘লইয়ারস কলেকটিভ’। বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন (এফসিআরএ)-এর বিভিন্ন ধারা ভেঙে যা ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রভাবিত’ করতে ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল থাকাকালীন মন্ত্রকের অনুমতি না নিয়েই এই অনুদান থেকে জয়সিংহের বিদেশ সফরের টাকাও দিয়েছে সংস্থাটি। এফআইআরে এ-ও বলা হয়েছে, আইন ভাঙার বিষয়টি নজরে আসার পরেই ২০১৬ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ওই সংস্থাটির কাজকর্ম নিয়ে অনুসন্ধান করে। কিছু প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয় সংস্থার।
সম্প্রতি ‘লইয়ারস ভয়েস’ নামে একটি সংস্থা সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে জানায়, ‘লইয়ারস কালেকটিভ’ যে অনুদান পায়, তা ‘দেশবিরোধী কাজের’ জন্য ব্যবহার করা হয়। এই অভিযোগের জবাব চেয়ে জয়সিংহ ও গ্রোভারের কাছে নোটিস পাঠিয়েছে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি দীপক গুপ্তের বেঞ্চ।
যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে জয়সিংহ দাবি করেছেন, মানবাধিকার সংক্রান্ত একাধিক মামলা লড়ার জন্য গত কয়েক বছর ধরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নিশানায় রয়েছেন তিনি। ‘লইয়ারস কালেকটিভ’-এর তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে আজ বলা হয়েছে, ‘‘এটা যে হবে তা জানাই ছিল। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন মহিলা কর্মী প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনার পরে একজন দায়িত্বশীল নাগরিক, বার কাউন্সিলের সিনিয়র সদস্য ও নারী অধিকার কর্মী হিসেবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন জয়সিংহ। তারই প্রতিশোধ নেওয়া হল।’’
এই ঘটনায় ফের রাজনৈতিক স্বার্থে সিবিআইকে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘কেন্দ্র তার হাতে থাকা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে অভিজ্ঞ আইনজীবীদের হেনস্থা করছে। এতে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের টুইট, ‘‘সরকারের ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার আর এক নমুনা। বিরোধী যে কোনও স্বরকেই এই সরকার চেপে দেওয়ার চেষ্টা করে। সুপার ইমার্জেন্সি চলছে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy