জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। ফাইল চিত্র।
সমন ধরানো হয়েছিল এক সপ্তাহ আগে। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের নয়াদিল্লির বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এল সিবিআই। সত্যপাল তার পরে ফের অভিযোগ করেছেন, পুলওয়ামা জঙ্গি-হামলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় হয়রান করা হচ্ছে তাঁকে।
শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ আর কে পুরমের সোম বিহারে সত্যপালের বাড়িতে বাড়িতে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি দল। তারা জানিয়েছে, তিনি এই মামলায় অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন নন। নিজের দাবির ব্যখ্যা তাঁর কাছে চাওয়া হয়েছে। গত সাত মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হলেন সত্যপাল। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ২০১৮ সালের অগস্ট থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল হিসাবে ৩০০ কোটি টাকা ঘুষের প্রস্তাব এসেছিল দু’টি ফাইল ছাড়ার জন্য। সিবিআই দু’টি এফআইআর রুজু করে। একটি কিরু জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং অন্যটি রিলায়্যান্স জেনারেল ইনশিওরেন্স সংক্রান্ত।
মোদী-জমানায় নানা রাজ্যের রাজ্যপাল থেকেছেন সত্যপাল। তিনি নিজে এক জন বিজেপি নেতাও। সম্প্রতি মোদী-সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সমালোচনা করেছেন সত্যপাল। তার পরে রিলায়্যান্স মামলায় সমন পেয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে গত সাত মাসে তার সিবিআইয়ের মুখোমুখি হওয়া এই-প্রথম নয়, এ কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, সিবিআই নিশ্চয় নতুন সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। বিজেপি ও আরএসএসের নেতা রাম মাধব কাশ্মীরে রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য বিমা প্রকল্পে অম্বানীদের রিলায়্যান্স সংস্থার হয়ে তাঁর কাছে অনৈতিক প্রস্তাব এনেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন সত্যপাল। তদন্তে সিবিআই দাবি করে, চুক্তি সইয়ের আগেই সরকারি কোষাগার থেকে বিমার প্রথম কিস্তির টাকা রিলায়্যান্সকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই সূত্রেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাওয়া হয়েছিল বলে সূত্রের দাবি।
এ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পরে সত্যপাল বলেন, ‘‘আমি এই মামলার অভিযোগকারী। সিবিআই-এর এ ভাবে অভিযোগকারীকে প্রশ্ন করার কোনও দরকার ছিল না। আমি পুলওয়ামা নিয়ে যা বলেছি, এই হয়রানি শুধু সে জন্য।’’ গত লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে জঙ্গি হামলা হয়। ওই ঘটনার নেপথ্য সরকারি ব্যর্থতার কথা তৎকালীন রাজ্যপাল হিসাবে তাঁকে জানানোয় প্রধানমন্ত্রী মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন, সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে এমন অভিযোগ করেছিলেন সত্যপাল। এ দিন তিনি বলেছেন, ‘‘আমি বলতেই থাকব। পুরো উত্তর এবং দক্ষিণ ভারত ঘুরে বেড়াব। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এটা চালিয়ে যাব, বোফর্সের মতো বাঁচিয়ে রাখব এই ইস্যুকেও।’’
সিবিআই আর আসবে কি-না, তা নিয়ে তাঁকে কিছু বলেনি বলে জানিয়েছেন সত্যপাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy