পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রতারণার মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত মেহুল চোক্সীকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় সিবিআই, ইডি, তাদের আইনজীবী ও বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের একটি দল বেলজিয়াম রওনা হচ্ছে।
সিবিআই ও ইডি সূত্রের খবর, দুই সংস্থার সদর দফতরেই এ নিয়ে বৈঠক শুরু হয়েছে। ১২ এপ্রিল বেলজিয়ামের পুলিশ হিরে ব্যবসায়ী মেহুলকে সে দেশে গ্রেফতার করেছে। মেহুল রক্তের ক্যানসারের চিকিৎসার কারণ দেখিয়ে সুইৎজ়ারল্যান্ডে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ভারতীয় দলটি বেলজিয়ামে গিয়ে মেহুলকে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করবে।
সিবিআই-ইডি কর্তারা অবশ্য মনে করছেন, বেলজিয়ামের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকলেও দু’তিনটি দিক থেকে বাধা আসতে পারে। এক, মেহুল অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব নিয়ে রেখেছেন। দুই, শারীরিক অবস্থার কারণ দেখিয়ে মেহুলের ভারতে ফেরায় আপত্তি তুলতে পারেন তাঁর আইনজীবীরা। তিন, এর আগে মেহুল ডমিনিকান রিপাবলিকে ধরা পড়ার পরে ভারতের তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে তাঁকে অপহরণ করে ভারতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল। সেই যুক্তি দিয়ে মেহুলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হতে পারে। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা প্রতারণার মামলায় মেহুলের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের আদালতের দু’টি জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। মেহুলকে প্রত্যর্পণের জন্য মূলত আদালতের এই পরোয়ানাকেই হাতিয়ার করা হবে।
২০১৮-য় মেহুল সস্ত্রীক দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। গত সাত বছর ধরে পলাতক হিরে ব্যবসায়ীর মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটের দেখভালের খরচ বাকি পড়ে রয়েছে। মুম্বইয়ের মালাবার হিল এলাকায় একটি আবাসনের নবম, দশম এবং একাদশ তল মিলিয়ে তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে মেহুলের। ওই আবাসনের সদস্যেরা জানান, ফ্ল্যাটের দেখভাল বাবদ ৬৩ লক্ষ টাকা বাকি রয়েছে তাঁর। আবাসনের বাসিন্দাদের দাবি, ২০২০ সালে আবাসনের ফ্ল্যাটগুলিতে কিছু সংস্কারের কাজ হয়েছিল। তাতে ফ্ল্যাট-পিছু প্রায় ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। সেই টাকা যোগ করে মেহুলের তিনটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রায় ৯৫ লক্ষ টাকা খরচ পড়েছে। এক বাসিন্দা বলেন, “ফ্ল্যাটে গাছ গজাতে শুরু করেছে। গাছের শিকড় ফ্ল্যাটবাড়িকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এটি আমাদের কাছে একটি বোঝা হয়ে উঠেছে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)