Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

উদ্বাস্তু ভোট টানবে বিল, অঙ্কে বিজেপি

সিএবি বিলের মূল প্রতিপাদ্য হল, প্রতিবেশী আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে শরণার্থী হয়ে আসা অ-মুসলিম ধর্মের লোকেদের নাগরিকত্ব দেবে সরকার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১৫
Share: Save:

সদ্য রাজ্যসভায় পাশ হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা যখন তা থেকে ফায়দা নেওয়ার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন অসমের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি দেখিয়ে তৃণমূলের নেতাদের আক্ষেপ, বিজেপির ভুল নীতির কারণে ফের একটি রাজ্যে আগুন জ্বলল। দল আগেই সাবধান করেছিল সরকারকে। শেষ পর্যন্ত প্রমাণ হবে এনআরসির মতোই সিএবি বিল আসলে বাঙালি-বিরোধী।

সিএবি বিলের মূল প্রতিপাদ্য হল, প্রতিবেশী আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে শরণার্থী হয়ে আসা অ-মুসলিম ধর্মের লোকেদের নাগরিকত্ব দেবে সরকার। বিজেপি নেতারা ঘরোয়া মহলে স্বীকার করে নিচ্ছেন, ওই বিলের আসল উদ্দেশ্য বাংলাদেশ থেকে আসা এক থেকে দেড় কোটি হিন্দু বাঙালিকে নাগরিকত্ব দিয়ে ভোটের বাক্সে তার সুফল কুড়ানো। ওই শরণার্থীদের একটি বড় অংশ বসবাস করেন পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে। পশ্চিমবঙ্গে যে শরণার্থীরা রয়েছেন তারা নাগরিকত্ব পেলে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ইতিবাচক ফল হবে বলে মনে করছেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। তাঁদের মতে, বিলটি পাশ হলে নাগরিকত্ব পাবেন বর্তমানে উদ্বাস্তু শিবিরে থাকা উত্তরবঙ্গের বহু মানুষ। এর ফলে উত্তরবঙ্গ-সহ নদিয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় ভাল ফল করার আশা করছেন রাজ্য বিজেপি নেতারা।

বিলটিকে ঘিরে অসমে গত ক’দিন ধরে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছে বিজেপির একটি অংশ। নরেন্দ্র মোদী থেকে অমিত শাহ— সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব যতই আশ্বাস দিন না কেন, অসমবাসীদের মূল চিন্তার বিষয় হল, ওই আইন বলবৎ হলে রাজ্যে এক ঘরে হয়ে পড়বে ভূমিপুত্ররাই। ফলে সেখানে বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নে প্রবল বিরোধিতা রয়েছে। বিজেপি নেতাদের একটি অংশের মতে, সে ক্ষেত্রে অসমবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হিসবে আসা হিন্দুরাই। যার সুযোগ নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূল শিবির শুরু থেকেই দাবি করছে, অসংবিধানিক ও ধর্মীয় বিভাজন করা ওই বিলটি বাঙালি বিরোধী। এর ফলে মূলত অসম-সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সমস্যায় পড়তে হবে স্থানীয় বাঙালিদের।

যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘অসমে আগে থেকেই বাঙালিদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালু রয়েছে। অসমে বাঙালিদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হওয়াটা স্বাভাবিক। অসমিয়াদের কিছু অভিযোগ থাকতেই পারে যে বাঙালিরা এখানে এসে থাকছে। তাই তারা সিএবি-র বিরোধিতায় সরব রয়েছে।’’

দিলীপবাবুর প্রশ্ন, পশ্চিমবঙ্গে কেন বিরোধিতা হচ্ছে? যে মতুয়াদের জন্য বিল আনা হয়েছে তাদের খেপানো হচ্ছে। প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর এক দিকে বলছেন তিনিও নাগরিকত্বের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। আর তাঁর দল বিরোধিতা করছে। দিলীরবাবুর প্রশ্ন, ‘‘তা হলে তৃণমূল কি বাঙালি বিরোধী পার্টি?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Citizenship Amendment Bill BJP Refugee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy