Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

‘আমার পুতুল জ্বালান’, পুরনো কৌশলে মোদী

প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘‘আমাকে রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। মোদীর পুতুলে যেতে-আসতে যত ইচ্ছে জুতো মারুন।”

নরেন্দ্র মোদী।

নরেন্দ্র মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৭
Share: Save:

নোটবন্দির পরে বলেছিলেন, অর্থনীতির হাল না-শুধরোলে চৌরাস্তায় যে কোনও শাস্তি মাথা পেতে নিতে তিনি প্রস্তুত। নয়া নাগরিকত্ব বিল নিয়ে সেই দায়টুকুও নিলেন না। বললেন, প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা হিন্দু-শিখেদের মতো শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ভাবনা তাঁর মাথায় রাতারাতি আসেনি। গাঁধীজিই অনেক দিন আগে এই কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন মনমোহন সিংহ, তরুণ গগৈ, অশোক গহলৌতের মতো কংগ্রেস নেতারাও।

তা হলে যে দেশ জুড়ে তাঁর এবং অমিত শাহের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ? মুসলিমরা পথে নামছেন, ছাত্রেরা প্রতিবাদ করছেন, রাজনৈতিক দলের নেতারাও মিছিলে হাঁটছেন প্রতিবাদে! হিংসা, মারধর, পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ। এই সব কিছুর দায় আজ কার্যত ‘কংগ্রেস ও তাদের সঙ্গীদের’ উপরেই ঠেলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেসের সঙ্গী কারা? প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, ‘শহুরে নকশাল’, ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাম, কিছু দলিত নেতা আর বুদ্ধিজীবী। এবং অবশ্যই পাকিস্তান আর তাদের জঙ্গিরা।

কয়েক দিন আগে ঠিক এই চিত্রনাট্যই তৈরি হয়েছে বিজেপিতে— ‘সকলে মোদীর বিরুদ্ধে। শুধু আমজনতা মোদীর পাশে।’ ২০০২ সালের পরে যে কৌশল নিয়েছিলেন মোদী, এ বারও তার পুনরাবৃত্তি। তাই প্রধানমন্ত্রীই আজ বললেন, ‘‘আমাকে রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। মোদীর পুতুলে যেতে-আসতে যত ইচ্ছে জুতো মারুন। মোদীর পুতুল জ্বালান। কিন্তু দেশের সম্পত্তি জ্বালাবেন না। গরিবের অটো, বস্তি জ্বালাবেন না। গরিবকে মেরে কী পাবেন? যত রাগ, ঘৃণা বার করুন মোদীর উপরেই।’’ কংগ্রেসের নাম না-করে মোদীর অভিযোগ, ‘একশো বছরের পুরনো দলের’ কোনও নেতা শান্তি বজায় রাখা বা পুলিশের উপরে হামলা নিয়ে কোনও কথাই বলছেন না। অথচ স্বাধীনতার পর থেকে দেশে ৩৩ হাজার পুলিশ মারা গিয়েছেন। দিল্লিতে পুলিশ স্মারক ফুল দেওয়ার জন্য জনতাকে আহ্বান জানান তিনি।

যাঁরা হিংসা ছড়াচ্ছেন, সম্প্রতি তাঁদের পোশাক দেখে ‘চিনতে’ পেরেছিলেন মোদী। আজ অবশ্য ‘তাঁদের’ নাম নেননি। কিন্তু গাঁধী পরিবার, মমতা, বাম ও শহুরে নকশালরাই যে ‘রিমোট কন্ট্রোল’ চালাচ্ছেন, সেই কথা বলে কার্যত নিজেদের হিন্দুত্বের ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করতে সলতে পাকিয়েছেন।

তাই নিজেই তুলে এনেছেন এক বার গুজরাত বিধানসভা ভোটের সময়ে তাঁর উদ্দেশে সনিয়া গাঁধীর ‘মওত কা সওদাগর’ মন্তব্য। বলেছেন, ‘‘(আমার) দ্বিতীয় বার জিতে আসার শোক এখনও মেটেনি। দুই দশক ধরে আমার পিছনে পড়ে আছে। রন্ধ্রে রন্ধ্রে চিনি এদের। ‘মওত কা সওদাগর’ যাঁরা বলেছেন, এখনও তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছেন। গাঁধী পদবির ফায়দা তুলতে চাইছেন। যত এঁরা ষড়যন্ত্র করবেন, মানুষের প্রেমও আরও বাড়বে।’’ কারও কারও মতে, এতেই মোদী ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, বিরোধীরা যত বেশি মুসলিমদের পাশে থাকবে, ততই হিন্দু ভোট বাড়বে বিজেপির। এর সঙ্গে জাতীয়তাবাদও জুড়ে দিয়েছেন মোদী। পাক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তেরঙ্গা হাতে আওয়াজ তোলার ডাক দেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

CAA Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy