আড়াই বছরের মাথাতেই বিচ্ছেদ হতে চলেছে ‘বুয়া-বাবুয়া’ (পিসি-ভাইপো)-র। রাজ্যসভা নির্বাচন ঘিরে ভাঙন ধরল উত্তরপ্রদেশের বিরোধী জোটে।
বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) প্রধান মায়াবতী বৃহস্পতিবার বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেছেন সহযোগী সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র প্রধান অখিলেশ যাদবের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া বিবৃতিতে তাঁর ঘোষণা, ‘‘সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীকে হারানোর জন্য প্রয়োজনে আমরা বিজেপি বা অন্য কোনও দলকে ভোট দেব।’’ অখিলেশের বাবা মুলায়মের বিরুদ্ধে লখনউ গেস্টহাউস-কাণ্ড মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে এ দিন ‘বড় ভুল’ হিসেবে বর্ণনা করেন মায়া।
মায়ার বিজেপিকে সমর্থনের ঘোষণার ভিডিয়ো এ দিন টুইট করেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা বঢরা। সেই সঙ্গে লেখেন, ‘এর পরেও কি কিছু বাকি থাকে?’
इसके बाद भी कुछ बाकी है? pic.twitter.com/WGNxMWq9gh
— Priyanka Gandhi Vadra (@priyankagandhi) October 29, 2020
আগামী ৯ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশে রাজ্যসভার ১০টি আসনে ভোট। পরিষদীয় পাটিগণিতের হিসেব মেনে একটিতে প্রার্থী দিয়েছে অখিলেশের দল। কিন্তু বিধায়ক সংখ্যার হিসেবে বিএসপি-র কোনও আসন জেতার শক্তি না থাকা সত্ত্বেও সোমবার মায়াবতী একটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ৮টি জেতার পরে বাড়তি ভোট থাকা সত্ত্বেও নবম আসনে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। এসপি এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, বিএসপি প্রার্থীর জয় সুনিশ্চিত করতেই ৮টি আসনে লড়ছে বিজেপি। বিএসপি-র ছ’জন বিধায়কও মায়াবতীর বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলেছেন।
অখিলেশের সঙ্গে বুধবার বৈঠকও করেন বিদ্রোহী বিএসপি বিধায়কেরা। এর পরেই এ দিন ‘বহেনজি’র প্রত্যাঘাত। আগামী ৩ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশে ৭টি বিধানসভার উপনির্বাচন। এর পর রয়েছে বিধান পরিষদের ভোট। সেখানে বিরোধী জোটের ভাঙনের প্রভাব পড়তে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন।
আরও পড়ুন: জঙ্গি-অর্থের উৎস সন্ধানে ফের অভিযানে এনআইএ, দিল্লিতে হানা
প্রায় আড়াই দশকের পুরনো তিক্ততা ভুলে ২০১৮-র গোড়ায় উত্তরপ্রদেশে কয়েকটি লোকসভা ও বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে সমঝোতা করেছিল এসপি-বিএসপি। অখিলেশের তৎপরতাতেই যা সম্ভব হয়েছিল। গত লোকসভা ভোটেও জোট করে লড়েছিল দু’দল। এরপর অখিলেশের অনুরোধেই মুলায়মের বিরুদ্ধে ১৯৯৫ সালে জুন মাসের গেস্ট হাউসে হামলার অভিযোগ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মায়া। এ দিন দলিত নেত্রী বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের পরে এসপি-র আচরণ দেখে আমি বুঝতে পেরেছিলাম, মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বড় ভুল ছিল।’’
আরও পড়ুন: ভারতের হামলার ভয়ে হাঁটু কাঁপছিল সেনাপ্রধানের, অভিনন্দনের মুক্তি প্রসঙ্গে দাবি পাক বিরোধী নেতার
লোকসভা ভোটের পর থেকে জাতীয় রাজনীতিতে মায়াবতীর ‘ভূমিকা’ নিয়ে বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন উঠছে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যেও বিএসপি আদতে বিজেপিকে সাহায্য করছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ এ বার ‘বুয়া’-কে ছেড়ে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছে।