১০টা গুরুত্বপূর্ণ জংশন স্টেশন। তার মধ্যে ৭টাই একসঙ্গে বন্ধ।
এই পথ কোনও রেলপথ নয়। এ হল বিশেষ ধরনের ‘অপটিক্যাল ফাইবার’ পথ। যার মধ্যে দিয়ে যাওয়া-আসা করে ইন্টারনেটের যাবতীয় তথ্য (ডাটা)। বিএসএনএলের এই পথেই পড়েছে অতর্কিত কোপ। যার ফলে গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে শুক্রবার সকাল থেকে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে বিএসএনএল-এর ইন্টারনেট পরিষেবা। শুধু ইন্টারনেট নয়, বিপর্যস্ত হয়েছে ল্যান্ডলাইন ও মোবাইল পরিষেবাও।
কী ভাবে বিপর্যয়? বিএসএনএল সূত্রের বক্তব্য, গোটা দেশে মাটির নীচে জালের মতো ছড়ানো রয়েছে তাদের অপটিক্যাল ফাইবার কেব্ল। তার কিছু কিছু জায়গায় আবার ‘গেটওয়ে’ রয়েছে। যেগুলোর কাজ অনেকটা জংশন স্টেশনের মতো। ইন্টারনেটের তথ্য আদান-প্রদানের জন্য বিএসএনএল-এর এমন ১০টি জংশন রয়েছে মুম্বই ও চেন্নাইয়ে। তার মধ্যে ৭টিই শুক্রবার সকালে বসে যায়। কেব্ল কাটা পড়ার ফলেই এমন ঘটে। যদিও ঠিক কোথায় কোথায় কেব্লে কোপ পড়েছে, সংস্থার তরফে তা ভেঙে বলা হয়নি।
গুয়াহাটিতে বিএসএনএলের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার এডউইনসন সোয়্যার জানান, ইন্টারনেট পরিষেবার ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ‘প্রবেশ পথ’ কলকাতা। চেন্নাই থেকে কলকাতা হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছয়। এর মাঝপথেই একাধিক জায়গায় কেব্ল কাটা পড়ে। আপৎকালীন পরিস্থিতির কথা ভেবে গুয়াহাটি থেকে সরাসরি চেন্নাই পর্যন্ত একটি লিঙ্কও (পিবিসিআইএল) করা ছিল। এ দিন সেটিও খারাপ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা গুরুতর হয়েছে।
এই সমস্যায় মৃদু ধাক্কা লেগেছে পশ্চিমবঙ্গেও। তবে চেন্নাই ও কলকাতার মধ্যে একাধিক সরাসরি পথ থাকায় উত্তর-পূর্বের মতো সঙ্কটে পড়েনি এই রাজ্য। কেউ কেউ অবশ্য অভিযোগ করেছেন, এ দিন সকাল থেকে ইন্টারনেটে কোনও কাজই করতে পারেননি তাঁরা। গত কয়েক দিনের ঝড়বৃষ্টিতে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় টেলিফোনের তার ছিঁড়েছিল। এর ফলে ঊনকোটি, ধলাই, গোমতী-সহ কিছু কিছু এলাকায় আগে থেকেই টেলি-যোগাযোগ বিপর্যস্ত ছিল। সেই সমস্যাই গুরুতর হয়েছে শুক্রবার। তবে বিএসএনএল সূত্রের খবর, কয়েক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
কিন্তু কী ভাবে কেটে গেল কেব্ল?
এই ক্ষেত্রে বিএসএনএলের সঙ্গে পূর্ত বিভাগ-সহ বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থার সমন্বয়ের অভাবকেই দায়ী করে থাকেন অনেকে। কলকাতাতেও কিছু কিছু এলাকায় নিছক রাস্তাঘাট বা উড়ালপুলের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি চললেও অবধারিত ভাবে ফোনের লাইনগুলিও কেটে যায়। মাসের পর মাস ভুগতে হয় টেলিফোন গ্রাহকদের। বর্তমানে কেষ্টপুরে বাগজোলা খাল সংস্কারের কাজ চলছে। তার ফলে কেষ্টপুর ও বাগুইআটি এলাকায় কিছু টেলিফোন ও ব্রডব্যান্ড দিনের পর দিন খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। কেষ্টপুর এক্সচেঞ্জের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কবে ফোন ঠিক হবে, কিছুই তারা বলতে পারছে না। তবে এ দিন উত্তর-পূর্বের লাইন এমন ব্যাপক ভাবে কাটা পড়ার পর কর্তাদের অনেকেই ঘনিষ্ঠ মহলে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা করেছেন। তাঁদের দাবি, সরকারি সংস্থা বিএসএনএলকে যোগাযোগের দুনিয়ায় পিছিয়ে দিতে বহু দিন ধরেই কেউ কেউ কেটে দিচ্ছে হাজার হাজার টাকা দামের ওই সব কেব্ল। অবিলম্বে এর বিহিত হওয়া দরকার বলে মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy